মহেশখালী হবে ‘সিঙ্গাপুর’: আশিক চৌধুরী

আজ রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন বিডার নির্বাহী পরিচালক আশিক চৌধুরীছবি প্রথম আলো

আগামী ৩০ বছর পর দেশের মহেশখালী ও মাতারবাড়ী এলাকা সিঙ্গাপুর বা চীনের সাংহাইয়ের মতো হতে পারে। সমুদ্রকেন্দ্রিক শিল্পায়ন, গভীর সমুদ্রবন্দর, জ্বালানিকেন্দ্র, মৎস্য আহরণ কেন্দ্র ও আধুনিক টাউনশিপ গড়ে তোলার মাধ্যমে এটি বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।

আজ বুধবার রাজধানীর বেইলি রোডে অবস্থিত ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টার বিনিয়োগবিষয়ক বিশেষ সহকারী ও বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মহেশখালী ও মাতারবাড়ী অঞ্চল ঘিরে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে সরকার। এ লক্ষ্যে সম্প্রতি মহেশখালী ইন্টিগ্রেটেড ডেভেলপমেন্ট অথরিটি বা মিডা নামে বিশেষ কর্তৃপক্ষ গঠন করেছে সরকার। নবগঠিত এ কর্তৃপক্ষের (মিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান করা হয়েছে আশিক চৌধুরীকে।

আশিক চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিপ্লব ঘটাতে পারে মহেশখালী। মহেশখালীকে একটি বাণিজ্যিক কেন্দ্র (কমার্শিয়াল হাব) হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। এখান থেকে ১৫০ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) অবদান রাখা সম্ভব হবে। পাশাপাশি প্রায় দেড় লাখ সরাসরি ও ২৫ লাখ পরোক্ষ কর্মসংস্থান তৈরি হবে।’

মহেশখালী ও মাতারবাড়ী এলাকার জন্য একটি ৩০ বছর মেয়াদি (২০৫৫ সাল পর্যন্ত) একটি লক্ষ্যমাত্রা (ভিশন) ঠিক করা হয়েছে বলে জানান আশিক চৌধুরী। তিনি জানান, এ জন্য চারটি ক্ষেত্রকে ভিত্তি (পিলার) বা মূল খাত ধরে সামনে এগোনোর পরিকল্পনা নিয়েছে মিডা। এগুলো হচ্ছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি; গভীর সমুদ্রবন্দর; পণ্য উৎপাদন (ম্যানুফ্যাকচারিং) ও মৎস্য আহরণ ও সামুদ্রিক অর্থনীতি।

৩০ বছর মেয়াদি উন্নয়ন পরিকল্পনা তিন ধাপে বাস্তবায়ন করা হবে। প্রথম ধাপ (ইনকিউবেশন) বাস্তবায়ন হবে ২০২৫ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে। এই সময় গভীর সমুদ্রবন্দর চালু, বিদ্যুৎ, সড়ক যোগাযোগের ভিত্তি স্থাপন করা হবে। দ্বিতীয় ধাপে (২০৩০-২০৪৫) এলএনজি টার্মিনাল, শিল্পকারখানা ও অবকাঠামো উন্নয়ন সম্পন্ন করা হবে। আর তৃতীয় ধাপে (২০৪৫-২০৫৫) পর্যটন ও ইকোট্যুরিজমকে যুক্ত করে মহেশখালী-কক্সবাজারকে আধুনিক শহরে রূপান্তর করা হবে। পরবর্তী রাজনৈতিক সরকারগুলো এসব উদ্যোগ বাস্তবায়ন করবে।

তবে অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে ১২০ দিনের জন্য একটি স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়েছে মিডা। এ প্রসঙ্গে আশিক চৌধুরী জানান, মিডার বয়স মাত্র এক মাস। ১২০ দিনের মধ্যে সংগঠনটির কাঠামো, জনবল নিয়োগ ও বাজেট চূড়ান্ত করা হবে। একই সঙ্গে মহেশখালীর মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করে তা গভর্নিং বোর্ডে অনুমোদনের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

আশিক চৌধুরী আরও বলেন, ‘এটা সহজ কাজ না। সরকারের সব মন্ত্রণালয়কে এক ছাতার নিচে এনে সমন্বয় করতে হবে। তবে আমরা যদি সফলভাবে প্রথম মাস্টারপ্ল্যান দাঁড় করাতে পারি, সেটিই হবে বাংলাদেশের জন্য এক বড় সাফল্য।’