রাত ৯টা পর্যন্ত দোকান খোলা রাখতে চান ব্যবসায়ীরা
দোকানমালিক নেতারা জানান, রাত আটটায় দোকান বন্ধের বিষয়টি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য মড়ার উপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো।
দোকান খোলা রাখার সময় দুপুর ১২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির নেতারা। তাঁরা বলছেন, রাত আটটায় দোকান বন্ধের কারণে ব্যবসায়ীরা চরম অর্থসংকটে পড়েছেন।
রাজধানীর মগবাজারে দোকান মালিক সমিতির কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সমিতির নেতারা এই দাবি জানান। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনটির সভাপতি হেলাল উদ্দিন। তিনি বলেন, পিডিবির তথ্যানুযায়ী, দেশে জ্বালানি তেলে পরিচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংখ্যা ১০টি। এসব বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ রাখলে প্রতিদিন ৯ কোটি ২০ লাখ টাকার জ্বালানি সাশ্রয় হয়। অন্যদিকে একদিন দোকান বন্ধ রাখলে ক্ষতি হয় ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। সেই হিসাবে রাত ৯টার পরিবর্তে ৮টায় দোকান বন্ধ রাখলে ১ ঘণ্টায় ক্ষতি হয় ১৬০ কোটি টাকা। বাস্তবে ক্ষতির পরিমাণ আরও বেশি। কারণ, বিপণিবিতান ও দোকানগুলোতে বেচাকেনা শুরু হয় মূলত সন্ধ্যার পরই।
বর্তমানে রাত আটটার মধ্যে দোকান বন্ধ করা ও দৈনিক নিয়ম করে লোডশেডিংয়ের কারণে ব্যবসায়ীরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। বিষয়টি দেশের ক্ষুদ্র ও অতি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য মড়ার উপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো। আর্থিক সংকটের কারণে দোকানমালিকেরা ঠিকভাবে কর্মচারীদের বেতনসহ অন্যান্য পরিষেবা খরচ পোষাতে পারছেন না বলে অভিযোগ করেন হেলাল উদ্দিন।
সংকট সমাধানে চারটি দাবি জানান হেলাল উদ্দিন। সেগুলো হচ্ছে—লোডশেডিং সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করা, দুপুর ১২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত বিপণিবিতান ও দোকান খোলা রাখার অনুমতি দেওয়া, সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত অফিস সময় করা ও সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখা।
দোকানমালিক সমিতির নেতারা বলছেন, এসব দাবি মানা হলে যানজট কমবে ও জ্বালানি তেলের সাশ্রয় হবে। পাশাপাশি মানুষের কর্মঘণ্টাও বাড়বে। তাঁরা আরও বলেন, করোনার প্রভাব ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বর্তমানে দ্রব্যমূল্য লাগামহীন। এ অবস্থায় রাত আটটায় দোকান বন্ধের কারণে ব্যবসায়ীরা চরম অর্থসংকটে পড়েছেন।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ে সরকারি সিদ্ধান্ত অনুসারে ২০ জুলাই থেকে রাত ৮টার পর দোকান, বিপণিবিতান ও কাঁচাবাজার বন্ধ রাখা হচ্ছে। এতে কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না বলে দাবি করে হেলাল উদ্দিন বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে ক্ষুদ্র ও অতি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের পথে বসার উপক্রম হয়েছে।
এই ব্যবসায়ী নেতা বলেন, প্রকৃতপক্ষে দেশে বিদ্যুতের সংকট নেই, সংকট জ্বালানিতে। অথচ আমদানি করা জ্বালানির মাত্র ১০ শতাংশ ব্যবহার করা হয় বিদ্যুৎ উৎপাদনে। বাকি ৯০ শতাংশ ব্যবহার করা হয় পরিবহন ও কৃষি খাতে। মাত্র ১০ শতাংশ জ্বালানি সাশ্রয়ের জন্য সমালোচকদের সমালোচনা করার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। লোডশেডিং বন্ধ করে ডিজেল, এলএনজির দাম সমন্বয় করলে মানুষ সাশ্রয়ী হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।