বিদেশি ঋণের সুদের বরাদ্দ ১০ মাসেই শেষ

ডলারছবি: সংগৃহীত

১০ মাসেই বিদেশি ঋণের সুদ বাবদ বাজেটে বরাদ্দ টাকা শেষ হয়ে গেল। চলতি ২০২৩–২৪ অর্থবছরের বাজেটে বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধের জন্য স্থানীয় মুদ্রায় ১২ হাজার ৩৭৬ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছিল অর্থ মন্ত্রণালয়। অন্যদিকে ১০ মাসে বিদেশি ঋণের সুদ বাবদ দিতে হয়েছে ১২ হাজার ৬২৬ কোটি টাকা।

আজ রোববার প্রকাশিত দেশের বৈদেশিক ঋণের হালনাগাদ পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) তৈরি করা সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে। সেখানে টাকার অঙ্কে বিদেশি ঋণের সুদ বাবদ কত টাকা পরিশোধ করতে হয়েছে, সেই হিসাবও দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে ডলারের হিসাবেও চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসেই বিদেশি ঋণের সুদ বাবদ খরচ আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে দ্বিগুণ হয়ে গেছে। গত জুলাই-এপ্রিল সময়ে বিদেশি ঋণের সুদ বাবদ ১১৪ কোটি ডলার পরিশোধ করতে হয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি। গত অর্থবছরের একই সময়ে সুদ বাবদ ৫৬ কোটি ডলার পরিশোধ করেছিল বাংলাদেশ।

ইআরডি সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে বিদেশি ঋণের সুদাসল পরিশোধ বাবদ খরচ বেড়েছে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৮৬ কোটি ডলার। গত ১০ মাসে সব মিলিয়ে ২৮১ কোটি ডলারের বেশি সুদ ও আসল পরিশোধ করা হয়েছে। গত বছর একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ১৯৫ কোটি ডলার।

বিদেশি ঋণ পরিশোধের এই চাপ এসেছে এমন এক সময়ে, যখন দেশে বৈদেশিক মুদ্রার সংকট চলছে। বিশ্লেষকেরা মনে করেন, ডলার-সংকটের এ সময়ে বিদেশি ঋণ পরিশোধের জন্য অতিরিক্ত অর্থ ব্যয়ের কারণে রিজার্ভ ও বাজেটের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, চীন ও রাশিয়ার স্বল্প মেয়াদের ঋণের কারণে ঋণ পরিশোধের চাপ বাড়ছে। ইতিমধ্যে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের ঋণ পরিশোধ শুরু হয়েছে। মেট্রোরেল প্রকল্পের ঋণ পরিশোধের কিস্তিও শুরু হয়েছে। এ ছাড়া কর্ণফুলী টানেল প্রকল্পের ঋণ পরিশোধও শিগগির শুরু হবে। আগামী দু-তিন বছরের মধ্যে অন্য মেগা প্রকল্পের ঋণ পরিশোধ শুরু হলে চাপ আরও বাড়বে।

অন্যদিকে ঋণের ছাড় আগের তুলনায় খুব একটা বাড়েনি। ইআরডি সূত্র বলছে, জুলাই-এপ্রিল সময়ে সব মিলিয়ে ৬২৮ কোটি ডলার এসেছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ৫৯১ কোটি ডলার।