সার, বীজসহ কৃষি উপকরণের দাম বাড়ানো হবে না বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মো. আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেছেন, কৃষি উৎপাদনের ধারা অব্যাহত রাখা ও টেকসই খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই এ পদক্ষেপ।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে সাভারের ব্র্যাক সিডিএম মিলনায়তনে সার্কভুক্ত দেশগুলোতে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) অর্জনে খাদ্য ও পুষ্টিনিরাপত্তা শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ অ্যাগ্রিকালচারাল এক্সটেনশন নেটওয়ার্ক (বায়েন) ও ভারতের পার্টিসিপেটরি রুরাল ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ সোসাইটি (প্রাডিস) যৌথভাবে তিন দিনব্যাপী এ সম্মেলনের আয়োজন করে।
সম্মেলনে কৃষিমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকারের নীতি হলো যেকোনো মূল্যে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করা ও খাদ্যনিরাপত্তা টেকসই করা। সে জন্য বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার এই সময়ে যত কষ্টই হোক সরকার বীজ, সারসহ কৃষি উপকরণের দাম বাড়াবে না। অন্যান্য খাতে যে পলিসিই নেওয়া হোক না কেন, কৃষি খাতে বিশাল ভর্তুকি প্রদানসহ সব সহযোগিতামূলক নীতি অব্যাহত থাকবে। কৃষি উৎপাদন টেকসই করতে যা যা করা দরকার, তা অব্যাহত থাকবে।
মন্ত্রী বলেন, ‘আমনে বাম্পার ফলন হয়েছে। রেকর্ড পরিমাণ খাদ্য মজুত আছে। দেশে দুর্ভিক্ষ হবে না, ইনশাল্লাহ এ গ্যারান্টি দিতে পারি।’
ফসলের গবেষণা ও সম্প্রসারণের মধ্যে বিরাট দূরত্ব রয়েছে বলে উল্লেখ করেন কৃষিমন্ত্রী। তিনি বলেন, গবেষক ও বিজ্ঞানীর উদ্ভাবিত জাত যেটি গবেষণা পর্যায়ে বিঘাতে আট মণ উৎপাদন হয়, সেটি সম্প্রসারণের পর কৃষক পর্যায়ে দেখা যায় উৎপাদন হয় বিঘাতে তিন থেকে চার মণ। এটি কেন হবে, এই বিশাল গ্যাপ কমিয়ে আনতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন ফসলের উদ্ভাবিত জাত ও প্রযুক্তি খুবই ধীরে সম্প্রসারণ বা কৃষকের কাছে পৌঁছায়। আমাদের বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি ধান, শর্ষেসহ অনেক ফসলের কতগুলো উন্নত উচ্চফলনশীল জাত উদ্ভাবন করেছেন। এগুলোর মধ্যে লবণসহিষ্ণু জাতও রয়েছে। কিন্তু এগুলো মাঠে কৃষকের কাছে যাচ্ছে খুবই দেরিতে। এত দেরিতে মাঠে যাওয়ার কারণ কী, তা সম্প্রসারণকর্মীদের খুঁজে বের করতে হবে। সম্প্রসারণকর্মীদের আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে হবে।
অনুষ্ঠানে প্রাডিসের জ্যেষ্ঠ পরামর্শক ভিভি সাডামাতে, খাদ্য ও কৃষি সংস্থার বিশেষ প্রতিনিধি দানিয়েল গুস্তাফসন, বাংলাদেশ প্রতিনিধি রবার্ট সিম্পসন, বায়েনের সভাপতি হামিদুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক সেকান্দর আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন ভূঁইয়া প্রমুখ বক্তব্য দেন।
কৃষি সম্প্রসারণকর্মীদের তিন দিনব্যাপী এ সম্মেলনে ভারত, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভুটান ও বাংলাদেশের ৩৫০ জন প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেছেন।