বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করেছে আদানি গ্রুপ

ভারতের ঝাড়খন্ড থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করেছে এ সময়ের আলোচিত ভারতীয় প্রতিষ্ঠান আদানি গ্রুপ। আদানি গ্রুপের প্রতিষ্ঠান আদানি পাওয়ার গতকাল এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

আদানি গ্রুপ জানিয়েছে, ভারতের ঝাড়খন্ডের গোড্ডায় আদানি পাওয়ার লিমিটেড (এপিএল) ঝাড়খন্ডের গোড্ডায় তাদের আলট্রা-সুপারক্রিটিক্যাল প্রযুক্তির ৮০০ মেগাওয়াট উৎপাদনক্ষমতার তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি ইউনিটের কার্যক্রম চালু হয়েছে।

সেখান থেকে ৭৪৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়েছে বাংলাদেশে। আদানি গ্রুপ বলছে, তাদের সরবরাহ করা বিদ্যুৎ বাংলাদেশে বিদ্যুৎ-ব্যবস্থার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এমনকি তরল জ্বালানি উৎপাদিত ব্যয়বহুল বিদ্যুতের বদলে আদানি গ্রুপের সরবরাহ করা এই বিদ্যুৎ প্রকৃত খরচ কমিয়ে আনবে।

আদানি গ্রুপের আলট্রা-সুপার ক্রিটিক্যাল বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য ২০১৭ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) সঙ্গে চুক্তি করে আদানি পাওয়ার ঝাড়খন্ড লিমিটেড।

আদানি গ্রুপের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সঙ্গে ২৫ বছরের বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির (পিপিএ) আওতায় এপিজেএলের প্রথম ইউনিট থেকে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে ৭৪৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে।

গত শুক্রবার বোম্বে স্টক এক্সচেঞ্জে এক ঘোষণায় আদানি পাওয়ার জানিয়েছে, ঝাড়খন্ডের গোড্ডায় ৮০০ মেগাওয়াট করে ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াটের দুটি আলট্রা-সুপার ক্রিটিক্যাল বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়ে তুলছে আদানি পাওয়ার ঝাড়খন্ড লিমিটেড (এপিজেএল)। তার মধ্যে একটি ইউনিটের বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এপিজেএল আদানি পাওয়ারের শতভাগ মালিকানাধীন একটি সহযোগী কোম্পানি। ভারতের এ সময়ে আলোচিত ব্যবসায়ী গৌতম আদানি এই কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা।

আদানি গ্রুপের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সঙ্গে ২৫ বছরের বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির (পিপিএ) আওতায় এপিজেএলের প্রথম ইউনিট থেকে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে ৭৪৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। ২০২২ সালের ২৯ নভেম্বর বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে পাওয়ার গ্রিডের সঙ্গে ভারতের গোড্ডায় অবস্থিত এপিজেএলের প্রথম ইউনিটের সংযোগ স্থাপন করা হয়। আর চলতি বছরের বাংলাদেশ অংশের সঞ্চালন ব্যবস্থার কার্যক্রম শুরু হয়। আর ৫ এপ্রিল সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক কার্যক্রমের নিরীক্ষা চালানো হয়।

এদিকে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি), সঞ্চালনকারী সংস্থা পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) সূত্রে জানা গেছে, বাণিজ্যিক সরবরাহের দিন থেকে বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিল হিসাব করা হবে।

বোম্বে স্টক এক্সচেঞ্জে দেওয়া ঘোষণায় আদানি পাওয়ার জানায়, এপিজেএলের ৮০০ মেগাওয়াটের দ্বিতীয় ইউনিটও শিগগিরই উৎপাদনে আসবে।

এদিকে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি), সঞ্চালনকারী সংস্থা পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) সূত্রে জানা গেছে, বাণিজ্যিক সরবরাহের দিন থেকে বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিল হিসাব করা হবে। তবে ঝাড়খন্ডে আদানি গ্রুপের বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন শুরুর আগেই এ বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য আমদানি করা কয়লার দাম নিয়ে আপত্তি তোলে পিডিবি।

জানুয়ারির শেষ দিকে হিনডেনবার্গ প্রতিবেদেন প্রকাশিত হওয়ার পর গৌতম আদানির সম্পদমূল্য অনেকটা কমেছে। ধনীর তালিকায় নিচে নেমে গেছেন।
রয়টার্স

এ নিয়ে আদানি গ্রুপের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেছে পিডিবি। ওই বৈঠকের পর আদানি গ্রুপ বলেছিল, পায়রা ও রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহৃত কয়লার দামের চেয়ে তাদের কয়লার দাম বেশি হবে না। তবে আদানির সঙ্গে বিদ্যুৎ সরবরাহের চুক্তি নিয়ে শুরু থেকেই বিভিন্ন মহল প্রশ্ন তুলেছে। বিএনপিসহ বিভিন্ন পক্ষ এ চুক্তি বাতিলের দাবি করেছে।

 চুক্তি অনুযায়ী, আদানি গ্রুপকে বিদ্যুৎ ও কয়লার দাম পরিশোধ করতে হবে ডলারে। তাতে দেশের চলমান ডলার-সংকটের মধ্যে বাড়তি চাপ তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।