ধনীদের সারচার্জের ক্ষেত্রে আরও ছাড়

বাজেট ২০২৩–২৪

ধনীদের সম্পদের ওপর সারচার্জের ক্ষেত্রে আবার ছাড় দিলেন অর্থমন্ত্রী। এত দিন তিন কোটি টাকার বেশি সম্পদ থাকলেই সারচার্জ দেওয়া বাধ্যতামূলক ছিল। আগামী বছরের বাজেটে এ সীমা বাড়িয়ে প্রস্তাব করা হয়েছে যে চার কোটি টাকার বেশি সম্পদ থাকলে বাধ্যতামূলকভাবে সারচার্জ দিতে হবে।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের প্রস্তাব অনুযায়ী, নিট সম্পদের পরিমাণ ৪ কোটি টাকা থেকে ১০ কোটি টাকার মধ্যে হলে ওই ব্যক্তির করের ১০ শতাংশ সারচার্জ দিতে হবে কিংবা নিজ নামে একাধিক গাড়ি কিংবা ৮ হাজার বর্গফুটের বেশি আয়তনের গৃহ-সম্পত্তি থাকলেও ১০ শতাংশ সারচার্জ দিতে হবে।

এ ছাড়া নিট সম্পদের পরিমাণ ১০ কোটি টাকা থেকে ২০ কোটি টাকার মধ্যে হলে প্রদত্ত করের ২০ শতাংশ; সম্পদের পরিমাণ ২০ কোটি টাকা থেকে ৫০ কোটি টাকার মধ্যে হলে করের ৩০ শতাংশ এবং ৫০ কোটি টাকার বেশি সম্পদ থাকলে করের ৩৫ শতাংশ সারচার্জ দিতে হবে।

করদাতার বার্ষিক আয়কর রিটার্ন জমার সময় পরিসম্পদ, দায় ও খরচের বিবরণীতে নিট সম্পদের পরিমাণ উল্লেখ করতে হয়। সেই সম্পদের ওপরেই সারচার্জ আরোপ করা হয়। তবে অভিযোগ রয়েছে যে অনেকেই নিজেদের সম্পদের পুরোটা কর বিবরণীতে ঘোষণা দেন না। বিশেষ করে কালোটাকার মাধ্যমে যে সম্পদ অর্জিত হয়, তা রিটার্নে দেখান না এসব সম্পদের মালিকেরা।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ ২০২১-২২ অর্থবছরে সব মিলিয়ে ১৫ হাজারের মতো ব্যক্তি সারচার্জ দিয়েছেন। ২০১১-১২ অর্থবছরে প্রথমবারের মতো সারচার্জ দেওয়ার বিধান করা হয়। তখন অবশ্য দুই কোটি টাকার বেশি সম্পদ থাকলে সারচার্জ দিতে হতো। এরপর প্রতিবছর সারচার্জধারী সম্পদশালীর সংখ্যা যেমন বেড়েছে, তেমনি রাজস্ব আদায়ও বেড়েছে। পাঁচ বছরের ব্যবধানে সারচার্জ দেওয়া সম্পদশালীর সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে যায়। গত এক দশকে এমন সম্পদধারী সাড়ে তিন গুণ বেড়েছে।

২০২০ সালে আর্থিক বিষয়ে পরামর্শ প্রদানকারী সংস্থা ওয়েলথ এক্স প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১০ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে সম্পদধারীর সংখ্যা বৃদ্ধির হারে বাংলাদেশ শীর্ষে ছিল। ওই সময়ে দেশে ৫০ লাখ ডলারের বেশি সম্পদধারী ধনকুবেরের সংখ্যা বেড়েছে ১৪ দশমিক ৩ শতাংশ।