অনুমতি ছাড়াই চতুর্থ কিস্তির অর্থ খরচ করা যাবে

চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের পরিচালন বাজেটের আওতায় স্বায়ত্তশাসিত সংস্থাগুলোর অনুকূলে যে টাকা বরাদ্দ রয়েছে, তার চতুর্থ কিস্তির অর্থ ছাড় করতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমতি লাগবে না। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগসহ সরকারের সব বিভাগের সচিবের কাছে গত সপ্তাহে এ কথা জানিয়ে চিঠি পাঠিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ। গতবারও এ কথা বলা হয়েছিল।

অর্থ বিভাগের চিঠিতে বলা হয়, চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে মন্ত্রণালয় বা বিভাগের নিয়ন্ত্রণাধীন স্বায়ত্তশাসিত বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর অনুকূলে পরিচালন বাজেটের আওতায় সাহায্য মঞ্জুরি হিসেবে টাকা বরাদ্দ রয়েছে। এ বরাদ্দের চতুর্থ কিস্তির অর্থ ছাড়ের ক্ষেত্রে অর্থ বিভাগ এবং প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় বা বিভাগের কোনো সম্মতির দরকার হবে না।

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে অর্থ বিভাগের সূত্রগুলো জানায়। এই অর্থ স্বয়ংক্রিয়ভাবে ছাড় হয়েছে বলে গণ্য হবে এবং স্বায়ত্তশাসিত বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহ এ অর্থ সরাসরি ব্যবহার করতে পারবে।

কোনো উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ ছাড় করা হয় চার কিস্তিতে। এতে অর্থ বিভাগ ও প্রকল্প–সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক বিভাগের অনুমোদন নেওয়ার বাধ্যবাধকতা ছিল আগে। উদ্দেশ্য ছিল, প্রকল্প ব্যয়ের ক্ষেত্রে অধিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা।

কাজে গতি আনার জন্য প্রথম ও দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ ছাড়ের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল প্রকল্প পরিচালকদের (পিডি)। তবে তৃতীয় কিস্তির অর্থ ছাড় করতে প্রকল্প–সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক বিভাগের অনুমোদন নেওয়ার প্রয়োজন হতো। দরপত্র আহ্বান করে বেসরকারি খাতের মাধ্যমে প্রকল্পগুলোর প্রয়োজনীয় মালপত্র কেনাকাটা, অবকাঠামো নির্মাণসহ অন্যান্য কাজ করা হতো।

কিন্তু এরপর পিডিরা অভিযোগ করেন, প্রকল্পের কাজে ধীরগতি কাটছে না এবং টাকা ছাড়ের ক্ষেত্রে তাদের নানা ধরনের হয়রানির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এসব কেনাকাটা, বিল-ভাউচারের শতভাগ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে অর্থ বিভাগের অনুমোদনক্রমে অর্থ ছাড় করার নিয়ম ছিল। এ পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে অর্থ বিভাগ অর্থ ছাড়ে সংস্থাগুলোকে এখতিয়ার দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে। এখন থেকে মন্ত্রণালয়ের কোনো রকম অনুমোদন ছাড়াই অর্থ ছাড় ও ব্যবহার করতে পারবেন পিডিরা।

তবে প্রকল্পের শুল্ক, ভ্যাট ও ভূমি অধিগ্রহণ বাবদ ব্যয়ে যে অর্থের প্রয়োজন হবে, তা প্রকল্প পরিচালকেরা ছাড় করতে পারবেন না। প্রকল্প সাহায্যের বর্তমান যে নিয়ম রয়েছে, তা-ই বহাল থাকবে। অর্থাৎ ঋণ ও অনুদানের ক্ষেত্রে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার শর্ত এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট নীতিমালার শর্ত মানতে হবে।