অর্থ পাচারকারীদের নাম জানলে আমাদের দিন: অর্থমন্ত্রী

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল

দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার হয় বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির সাংসদ কাজী ফিরোজ রশীদ এবং বিএনপির সাংসদ রুমিন ফারহানা। আজ সোমবার জাতীয় সংসদে তাঁরা এ কথা বলেন। জবাবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বললেন, অর্থ পাচারকারী কারা, তাঁরা যদি সেই তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেন, তাহলে পাচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া অর্থমন্ত্রীর পক্ষে সহজ হবে।

আজ বেলা ১১টা থেকে সংসদে ২০২০-২১ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেটের ওপর আলোচনা হয়। সংসদে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘কারা অর্থ পাচার করে, সেই তালিকা আমার কাছে নেই। নামগুলো যদি আপনারা জানেন যে এঁরা এঁরা অর্থ পাচার করেন, আমাদের দিন।’

জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, এক ব্যাংকের পরিচালক আরেক ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে যাচ্ছেন। হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হচ্ছে। হুন্ডির মাধ্যমেও তাঁরা বিদেশে টাকা পাঠাচ্ছেন। আদালত একটি তালিকা চেয়েছিলেন কারা বিদেশে বাড়ি বানিয়েছেন। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এখনো তা দিতে পারেনি।

কানাডা, মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া—এসব দেশে দুদকের একটি করে অফিস খোলার দাবি জানিয়ে কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘তাহলেই দেখা যাবে কে কত টাকা নিয়েছে। পি কে হালদার এত টাকা নিল! নয় মিনিটের জন্য পি কে হালদারকে ধরতে পারেননি। তাহলে কেন নয় ঘণ্টা আগে ধরলেন না?’

বিএনপির সাংসদ রুমিন ফারহানা বলেন, আমজনতার আমানতের টাকা থাকে ব্যাংকে। এ থেকে এমনভাবে টাকা নিয়ে যায় একশ্রেণির লোক, নেওয়ার সময়ই তাঁরা জানেন যে টাকা ফেরত দিতে হবে না। বছরে এক লাখ কোটি টাকার বেশি পাচার হয়ে যায় বিদেশে। এগুলো যায় ওভারইনভয়েসিং ও আন্ডারইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে। এর বাইরে হুন্ডির পরিমাণ ধরলে কত যায় আল্লাহ মাবুদই জানেন।

জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের মানুষের কষ্টার্জিত টাকা বিদেশে চলে যাবে, আপনাদের যেমন লাগে, আমারও লাগে। আমি অনিয়ম, বিশৃঙ্খলার বিরুদ্ধে। এগুলো বন্ধ করতে হবে। বন্ধ হচ্ছেও। অনেকেই জেলে আছেন। বিচার হচ্ছে। আগে যেমন ঢালাওভাবে চলে যেত, এখন তেমন নেই।’

উদাহরণ দিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, আগে সিমেন্টের নাম করে বালু আসত। একটার নাম করে আসত আরেকটা। আন্ডারইনভয়েসিং, ওভারইনভয়েসিং আগের মতো হয় না। একদম বন্ধ হয়ে গেছে বলা যাবে না। তবে পত্রপত্রিকায় আগের মতো দেখতে পাওয়া যায় না।

অর্থমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের পর বিএনপির সাংসদ হারুনুর রশীদ বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতের সিল লাগানো নিম্নমানের বিটুমিন আসার তথ্য পেয়েছি। শর্ষের বীজের নামে এসেছে কফির বীজ। এ ছাড়া চীন থেকে এসেছে পাথরবোঝাই কনটেইনার। এ ধরনের আরও ঘটনা রয়েছে।