ঊর্ধ্বগতি থামলেও অস্থিরতা কমেনি

মার্চের তৃতীয় সপ্তাহে এসে বিশ্ববাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের দাম কিছুটা কমেছে। এতে দামের অস্থিরতা ও উত্থান–পতন থেমেছে বলা যাবে না। কারণ, আজ কোনো পণ্যের দাম কমছে তো কাল আবার বেড়ে যাচ্ছে। তবে অগ্রিম কেনাবেচা থেকে এমন আভাস মিলছে যে বছরের মাঝামাঝি সময়ে অস্থিরতা কিছুটা কমতে পারে। সেটি অবশ্য নির্ভর করছে বিশ্বে পণ্যভিত্তিক উৎপাদন ও সরবরাহের ওপর।

ভোগ্যপণ্য, গৃহস্থালি ব্যবহার্য পণ্য ও শিল্পের কাঁচামালের বড় অংশই বিশ্ববাজার থেকে আমদানি করে থাকে বাংলাদেশ। ফলে বিশ্ববাজারে উত্থান–পতনের ঢেউ এসে পড়ে দেশের বাজারেও। আমদানিনির্ভর পণ্যের দর বিশ্ববাজারে কম থাকা মানেই দেশের বাজারও স্থিতিশীল থাকা।

পণ্যের দাম পর্যবেক্ষণকারী বিভিন্ন সংস্থা ও আমদানিকারকদের তথ্য অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন ও পাম তেলের দাম ২০০৮ ও ২০১১ সালের কাছাকাছি পর্যায়ে পৌঁছেছিল। পাম তেল ও সয়াবিনের দাম এই কমে তো এই বাড়ে। যেমন এ মাসেই পাম তেলের দাম প্রতি টন ১ হাজার ১১০ ডলারে উঠেছিল (চট্টগ্রাম বন্দর পর্যন্ত জাহাজভাড়াসহ)। তা কমে গত শুক্রবার ১ হাজার ৬০ ডলারে নেমে আসে। গতকাল সোমবার আবার ২০ ডলার বেড়েছে। একই চিত্র সয়াবিন তেলের বাজারেও। এখন বিশ্ববাজার থেকে সয়াবিন তেল আমদানি করতে হলে টনপ্রতি ১ হাজার ৩০০ ডলার গুনতে হবে, যা এক সপ্তাহ আগের তুলনায় ৩০ ডলার কম।

বিশ্ববাজারে গমের দাম কিছুটা কমেছে। চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে রাশিয়া ও ইউক্রেনের গম প্রতি টন ২৮৪ ডলারে বিক্রি হয়েছিল। তা ইতিমধ্যে ২ শতাংশের মতো কমেছে। গমের ভবিষ্যৎ বাজারেও (অগ্রিম কেনাবেচা) নিম্নমুখী প্রবণতা আছে। আগামী মে–জুনে রাশিয়ার ফলন ওঠার পর দাম আরও কমবে। শিকাগো বোর্ড অব ট্রেডের (সিবিওটি) আগামী জুলাই মাসের সরবরাহ চুক্তিতে রাশিয়ার গম প্রতি টন ২৩৫ ডলারে বেচাকেনা হয়েছে।

আমদানিকারকদের তথ্য অনুযায়ী, চিনির দামও কিছুটা কমেছে। জাহাজভাড়াসহ এখন টনপ্রতি ৪০ ডলার কমে ৪৩০–৪৪০ ডলারে বেচাকেনা হচ্ছে চিনি। মসুর ও মটর ডালের দামে ঊর্ধ্বগতি থেমেছে। আবার ছোলার দাম বিশ্ববাজারে টনপ্রতি ৩৫–৪০ ডলার বেড়েছে। এখন অস্ট্রেলিয়া থেকে ছোলা আমদানিতে প্রতি টনের মূল্য পড়বে ৬৬৫ থেকে ৬৭০ ডলার। সপ্তাহ দুয়েক আগে ছিল ৬৩০ ডলার।

বিএসএম গ্রুপের চেয়ারম্যান আবুল বশর চৌধুর বলেন, বিশ্ববাজারে যেভাবে ভোগ্যপণ্যের দামে ঊর্ধ্বগতি ছিল, তা কিছুটা হলেও থেমেছে। তবে চট্টগ্রাম বন্দর পর্যন্ত জাহাজভাড়া এখনো বেশি। তাই খুব বেশি সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ছাড়াও বিশ্ববাজারে শিল্পের কাঁচামাল ও গৃহস্থালিতে ব্যবহার্য পণ্যের দামেও ঊর্ধ্বগতি থেমেছে।