এবারও রাজস্ব আদায়ে বড় ঘাটতির শঙ্কা

করোনার প্রকোপ বৃদ্ধির কারণে আগামীকাল সোমবার থেকে এক সপ্তাহের লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার। প্রায় সবকিছুই বন্ধ করে দেওয়া হবে। এক সপ্তাহ পরে পরিস্থিতি বুঝে লকডাউনের সময় বাড়ানো হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এমন অবস্থায় গতবারের মতো আবারও রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য অর্জন নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।

এমনিতেই গত আট মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪৪ হাজার ৬৭৫ কোটি টাকার ঘাটতি হয়ে গেছে। এমন অবস্থায় লকডাউন কিংবা করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসা-বাণিজ্যে আবারও শ্লথগতি দেখা দিতে পারে। এতে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে রাজস্ব আদায়ে কাঙ্ক্ষিত গতি কমিয়ে দেবে।বড় ধরনের রাজস্ব ঘাটতির আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) ১ লাখ ৫১ হাজার ৪৭২ কোটি টাকার শুল্ক-কর আদায় হয়েছে। এই সময়ে শুল্ক-কর আদায়ের লক্ষ্য ছিল ১ লাখ ৯৬ হাজার ১৪৭ কোটি টাকা। ঘাটতি পড়েছে ৪৪ হাজার ৬৭৫ কোটি টাকা।

চলতি অর্থবছরে এনবিআরকে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্য দেওয়া হয়েছে। সেই হিসাবে, আগামী চার মাসে ১ লাখ ৭৮ হাজার ৫২৮ কোটি টাকা আদায় করতে হবে। বছরের শেষ দিকে সাধারণত রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি পায়।

রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য অর্জন করতে আগামী চার মাসে গড়ে ৪৪ হাজার ৬৩২ কোটি টাকা আদায় করতে হবে। স্বাভাবিক সময়েও প্রতি মাসে এত শুল্ক-কর আদায় হয়নি। তার মধ্যে আবার শুরু হচ্ছে লকডাউন। স্বাভাবিকভাবেই এতে রাজস্ব আদায় নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হবে।

লকডাউন বা সবকিছু বন্ধ থাকলে রাজস্ব আদায়ে কী ধরনের প্রভাব পড়ে, তা গতবারই বোঝা গেছে। গত বছরের এপ্রিল মাসে মাত্র ৫ হাজার কোটি টাকার মতো রাজস্ব আদায় হয়েছিল। বছর শেষে ২ লাখ ১৮ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়। ঘাটতি থাকে ৮২ হাজার কোটি টাকা।

অর্থবছরের শুরু থেকে ক্রমেই লক্ষ্য থেকে পিছিয়ে যাওয়া এবং লকডাউন দেওয়ার কারণে এবারও বড় ধরনের ঘাটতির পথে হাঁটছে এনবিআর। অর্থবছরের প্রথম আট মাসে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট আদায়ে ঘাটতি ছিল সবচেয়ে বেশি, ১৯ হাজার কোটি টাকা। এই সময়ে ভ্যাট আদায় হয়েছে ৫৮ হাজার ৩১৪ কোটি টাকা। অথচ নতুন আইন চালু করে ভ্যাট আদায় বৃদ্ধির কথা ছিল।

গত জুলাই-ফেব্রুয়ারি মাসে আয়কর খাতে আদায় হয়েছে প্রায় ৪৭ হাজার কোটি টাকা। আর একই সময়ে শুল্ক খাতে আদায় ৪৬ হাজার কোটি টাকার বেশি।