করোনা ধাক্কা কাটছে, বাড়ছে কনটেইনার পরিবহন

করোনা পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসার প্রেক্ষাপটে চলতি বছরের প্রথম থেকেই কনটেইনার পরিবহন বাড়তে শুরু করেছে। গেল জানুয়ারি মাসে বন্দর দিয়ে ২ লাখ ৪৩ হাজার কনটেইনার পরিবহন হয়েছে, যা গত এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। তবে কনটেইনার পরিবহনে এখনো স্বাভাবিক সময়ের মতো প্রবৃদ্ধি হয়নি।

গত বছরের এপ্রিলে করোনার কারণে কনটেইনার পরিবহনে বিপর্যয় দেখা দেয়। ১৬ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কমসংখ্যক কনটেইনার পরিবহন হয় ওই মাসে। সাধারণ ছুটিতে সবকিছু স্থবির হয়ে পড়ায় এই বিপর্যয় ঘটেছিল। এরপর কিছুটা বাড়লেও স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় তা ছিল কম। ফলে বছর শেষে দেখা যায়, ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে কনটেইনার পরিবহন সাড়ে ১০ শতাংশ কমেছে। বন্দরের ইতিহাসে কনটেইনার পরিবহন কমে যাওয়ার এটি দ্বিতীয় ঘটনা।

বন্দরের তথ্যে দেখা যায়, গত জানুয়ারি মাসে বন্দর দিয়ে আমদানি পণ্যবাহী ১ লাখ ২৩ হাজার এবং রপ্তানি পণ্যবাহী ও খালি ১ লাখ ২০ হাজার কনটেইনার পরিবহন হয়েছে। গত ১৩ মাসে এর চেয়ে বেশি কনটেইনার পরিবহন হয়েছে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে। ওই মাসে ২ লাখ ৬৬ হাজার একক কনটেইনার পরিবহন হয়।

কনটেইনার পরিবহন বাড়তে থাকায় বন্দরে এখন জাহাজ আগমনের সংখ্যা বাড়ছে। তাতে জেটিতে ভিড়ানোর অপেক্ষায় বহির্নোঙরে অপেক্ষমাণ জাহাজের সংখ্যা বাড়তে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটাকে চলতি মাসেও কনটেইনার পরিবহন বৃদ্ধির লক্ষণ বলে মনে করা হচ্ছে।

বন্দরসচিব ওমর ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, করোনার ধাক্কা অনেকটা কাটিয়ে ওঠার পর দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়ছে। এর প্রভাবে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়েও কনটেইনার পরিবহন বাড়তে শুরু করেছে। গত কয়েক মাসে ধারাবাহিকভাবে কনটেইনার পরিবহন বৃদ্ধির তথ্য জানিয়ে তিনি বলেন, এ বছর বন্দরের কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত হবে পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল। তাতে বন্দরের কনটেইনার ওঠানো-নামানোর সক্ষমতা আরও বাড়বে।

চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে যত পণ্য আমদানি-রপ্তানি হয়, তার মাত্র ২৫ শতাংশই কনটেইনারে এবং বাকি পণ্য জাহাজের খোলে (বাল্ক আকারে) আনা-নেওয়া হয়। কনটেইনারে তুলনামূলক কম পণ্য পরিবহন হলেও পণ্য বিবেচনায় এর গুরুত্ব বেশি। কারণ, দু-তিনটি ছাড়া সব শিল্পকারখানার কাঁচামাল কনটেইনারে আমদানি হয়। এই তালিকায় আছে পোশাক, ওষুধ, জুতা, ইস্পাত, বাণিজ্যিক পণ্য, ভোগ্যপণ্য ইত্যাদি। তবে রপ্তানি পণ্যের প্রায় পুরোটাই পাঠানো হয় কনটেইনারে। এসব কারণে কনটেইনারে পণ্য পরিবহনের প্রবৃদ্ধি কম-বেশি হওয়াটা অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের গতি নির্দেশ করে।