কুড়িগ্রাম জেলার চরাঞ্চলে বাড়ছে সূর্যমুখীর চাষ

প্রথম আলো ফাইল ছবি

দেশের উত্তরাঞ্চলের জেলা কুড়িগ্রামের নদীতীরবর্তী চরাঞ্চলে সূর্যমুখী ফুলের চাষ বাড়ছে। ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে সূর্যমুখী চাষের জমি বেড়েছে ১০ গুণ। দেশে ভোজ্যতেলের চাহিদা মেটাতে সূর্যমুখীর চাষ বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে কৃষি বিভাগ।

গত শুক্রবার কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের চর মাধবরাম এলাকায় সূর্যমুখী চাষ সম্প্রসারণে মাঠ দিবস পালন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আসাদুল্লাহ, রংপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক খন্দকার আবদুল ওয়াহেদ, কুড়িগ্রামের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. মনজুরুল হক, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আমান উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম বলেন, দেশে নানা কারণে আবাদি জমি কমে যাচ্ছে। সে জন্য দেশের চর ও হাওর এলাকায় প্রণোদনার মাধ্যমে কৃষি সম্প্রসারণের কাজ করা হচ্ছে। আগামী আউশ ও আমন মৌসুমেও প্রণোদনা দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

সাধারণত প্রতি হেক্টর জমিতে ২ মেট্রিক টন সূর্যমুখী তেলবীজ উৎপাদিত হয়। বর্তমানে প্রতি কেজি তেলবীজের দাম ৮০ টাকা। তাতে এক হেক্টর জমিতে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকার তেলবীজ উৎপাদিত হবে। সে হিসাবে এবার কুড়িগ্রাম জেলায় কমপক্ষে ৩২ কোটি টাকার সূর্যমুখীর তেলবীজ বিক্রির আশা করছেন কৃষকেরা। আগামী বছর কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলগুলোতে সূর্যমুখীর চাষ আরও বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন কৃষি কর্মকর্তারা।

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মঞ্জুরুল হক জানান, গত বছর কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলে ২০ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখীর আবাদ হয়েছিল। এবার চাষের জমি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০০ হেক্টর। উৎপাদিত ফসলের দাম ৩২ কোটি টাকা দাঁড়াবে বলে আশা করছেন কৃষকেরা।

কুড়িগ্রামের ১৬টি নদ-নদীর অববাহিকায় ৪৫০টির মতো চর আছে। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, চরগুলোতে সূর্যমুখী চাষ সম্প্রসারণ করে কৃষকের ভাগ্য বদলানোর পাশাপাশি দেশের ভোজ্যতেলের চাহিদার অনেকটাই জোগান দেওয়া সম্ভব। সেই লক্ষ্যে গত বছরগুলোর তুলনায় এ বছর সূর্যমুখীর চাষ বেড়েছে। চরের পতিত জমিতে সূর্যমুখী চাষ এখানকার মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে কাজ করবে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের রাজস্ব ও প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় সূর্যমুখীর আবাদ সম্প্রসারণে এ মাঠ দিবসের আয়োজন করে।