গুলশানের জারা ফ্যাশনের বিরুদ্ধেও ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগ

রাজধানীর গুলশানে অভিজাত ব্র্যান্ডের দোকান জারা ফ্যাশন স্টলে অভিযান চালিয়ে ৩৯ কোটি টাকার গোপন বিক্রয় তথ্য উদ্ধার করেছে ভ্যাট গোয়েন্দারা।
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর গুলশানে অভিজাত ব্র্যান্ডের দোকান জারা ফ্যাশন স্টলে অভিযান চালিয়ে ৩৯ কোটি টাকার গোপন বিক্রয় তথ্য উদ্ধার করেছে ভ্যাট গোয়েন্দারা। গতকাল মঙ্গলবার এই অভিযান পরিচালনা করেন সংস্থার উপপরিচালক নাজমুন্নাহার কায়সার। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

এই স্টলে অভিজাত ও বিদেশি ব্র্যান্ডের জামাকাপড়, ঘড়ি, জুতা, ব্যাগ, গয়নাসহ নানা ধরনের পণ্য বিক্রয় করা হয়। কোনো কোনো পণ্যের দাম লাখ টাকার ওপর বিক্রি হয়। অভিযান চালিয়ে প্রথমে হিসাবপত্র জব্দ করে আনেন গোয়েন্দা দল। পরে আজ বুধবার জব্দ করা কাগজপত্র যাচাই করে প্রাথমিকভাবে দেখা যায়, গত পাঁচ বছরে প্রতিষ্ঠানটি ৩৮ কোটি ৮১ লাখ টাকার বিক্রয় হিসাব গোপন করে ব্যবসা পরিচালনা করছে। এর মাধ্যমে সরকারের প্রায় ৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে তারা।

অনুসন্ধান অনুসারে, জানুয়ারি ২০১৫ থেকে ফেব্রুয়ারি ২০২১ পর্যন্ত সময়ে জারা ফ্যাশন ৫২ কোটি ৩৪ লাখ টাকার পণ্য বিক্রি করেছে। তবে প্রতিষ্ঠানটি স্থানীয় ভ্যাট সার্কেলে মাসিক রিটার্নে ১৩ কোটি ৫৩ লাখ টাকার বিক্রির হিসাব প্রদর্শন করেছে। রিটার্ন ও প্রকৃত বিক্রয়ের পার্থক্য পাওয়া যায় ৩৮ কোটি ৮১ লাখ টাকা।

জারা ফ্যাশন ওই একই সময়ে রিটার্নের মাধ্যমে ভ্যাট দিয়েছে ৬৩ লাখ ৪৪ হাজার টাকা। প্রকৃত বিক্রয় তথ্য গোপন করায় ১ কোটি ৭৯ লাখ টাকার নিট ভ্যাট ফাঁকি হয়েছে। সময়মতো ভ্যাট না দেওয়ায় ভ্যাট আইন অনুযায়ী মাসিক ২ শতাংশ হারে আরও ১ কোটি ৫৯ লাখ টাকার সুদ আদায়যোগ্য হয়েছে। নতুন ভ্যাট আইন অনুসারে পোশাকের ওপর ৭ দশমিক ৫ শতাংশ হারে ভ্যাট প্রযোজ্য। পূর্বে এই হার ৫ শতাংশ ছিল।

একজন গ্রাহকের অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে এই অভিযান করা হয়। ওই গ্রাহক লাখ টাকার পণ্য কিনলেও তাকে যথাযথ ভ্যাট চালান দেওয়া হয়নি। পরে তিনি ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তরে অভিযোগ দেন। অনুসন্ধানে অভিযানে প্রাপ্ত অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। প্রতিষ্ঠানটি ক্রেতার নিকট থেকে ভ্যাট নিলেও তা সরকারি কোষাগারে জমা করেনি। প্রতিষ্ঠানটি কোনো কোনো মাসে ৫০ লাখ টাকার বিক্রয় করলেও ভ্যাট সার্কেলে ঘোষণা দিয়েছে মাত্র ১০ লাখ টাকার হিসাব। ভ্যাট ফাঁকি দেওয়ার উদ্দেশ্য এই তথ্য গোপন করা হয়।