চার মাসে শেষ করতে হবে ৪৪২ প্রকল্পের কাজ

অনেক বছর ধরে চলে আসছে, কিন্তু শেষ হচ্ছে না এমন ৪৪২টি প্রকল্প আগামী ৩০ জুনের মধ্যে শেষ করতেই হবে। এ জন্য যত টাকা লাগে দেওয়া হবে। সরকারের আর্থিক শৃঙ্খলার স্বার্থে চিহ্নিত এসব প্রকল্পের মেয়াদ জুনের পর আর না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি)। গতকাল মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এনইসির সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।

পরিকল্পনা কমিশন জানিয়েছে, উল্লেখিত ৪৪২টি প্রকল্পের মধ্যে কোনোটি দুবার, কোনোটির মেয়াদ তিনবারও বাড়ানো হয়েছে। তারপরও প্রকল্পগুলো শেষ করতে পারেনি বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলো। এসব প্রকল্পের কোনোটির কাজ মাঝামাঝি পর্যায়ে, আর কোনোটির কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আগামী অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বা এডিপিতে প্রকল্পগুলো যাতে আর অন্তর্ভুক্ত না হয়, সেই নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

এদিকে করোনার মধ্যেও চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) মোট ১৭২টি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে সরকার। গতকালের এনইসি সভায় সেসব প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সব মিলিয়ে চলতি অর্থবছরের সংশোধিত এডিপিতে প্রকল্পের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১ হাজার ৮৮৬।

গতকালের এনইসির সভায় ১ লাখ ৯৭ হাজার ৬৪৩ কোটি টাকার সংশোধিত এডিপি অনুমোদন করা হয়। এর মধ্যে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে জোগান দেওয়া হবে ১ লাখ ৩৪ হাজার ৬৪৩ কোটি টাকা। বাকি ৬৩ হাজার কোটি টাকা আসবে উন্নয়ন সহযোগীদের ঋণ থেকে। সে হিসাবে মূল এডিপির আকার কমেছে ৭ হাজার ৫০১ কোটি টাকা বা ৩ দশমিক ৬৬ শতাংশ। মূল এডিপির আকার ছিল ২ লাখ ৩ হাজার ৮৬৬ কোটি টাকা।

সংশোধিত এডিপিতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে পরিবহন খাতে। এই খাতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৪৯ হাজার ২১২ কোটি টাকা, যা মোট বরাদ্দের ২৫ শতাংশ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ পেয়েছে ভৌত পরিকল্পনা, পানি সরবরাহ ও গৃহায়ণ খাত। এই খাতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ২৬ হাজার ৪৯১ কোটি টাকা, যা মোট বরাদ্দের ১৩ দশমিক ৪০ শতাংশ। তৃতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে শিক্ষা খাতে ২৪ হাজার ৫৭১ কোটি টাকা, যা মোট বরাদ্দের ১২ দশমিক ৪৩ শতাংশ।

সভা শেষে পরিকল্পনাসচিব জয়নুল বারী সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য তুলে ধরে জানান, নদীভাঙন রোধে যেসব প্রকল্প নেওয়া হয়, সেগুলোর কাজ শুধু শুষ্ক মৌসুমে করতে হবে বলে মত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।