জেলার ২৫ টাকা কেজির তরমুজ ঢাকায় ৫০ টাকা

ছবি: প্রথম আলো

একদিকে বৈশাখের রুদ্র রূপ, অন্যদিকে শুরু হয়েছে রোজা। এই তপ্ত আবহাওয়ায় একটু স্বস্তির জন্য মানুষ স্বাভাবিকভাবেই তরমুজের খোঁজ করছেন। ফলে বেড়েছে তরমুজের চাহিদা। কিন্তু এই স্বস্তি খুঁজতে চড়া মূল্য দিতে হচ্ছে ক্রেতাদের। কারণ, দুদিন ধরে বাজারে তরমুজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। রোজা শুরু হওয়ার পর গত দুদিনের ব্যবধানে তরমুজের দাম কেজিতে বেড়েছে প্রায় ২০ টাকা।

বাজারে এখন দুই ধরনের তরমুজ পাওয়া যাচ্ছে। ১০ কেজির নিচে মাঝারি আকারের তরমুজের দাম হাঁকা হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি, আর ১০ কেজির ওপরের তরমুজের দাম ৫০ টাকা কেজি। কিন্তু সুপারশপ ও অনলাইন গ্রোসারিগুলোয় দাম আরও বেশি। সেখানে পাঁচ কেজি আকারের ছোট তরমুজের দামই ৫০-৫৫ টাকা কেজি।

ঢাকার বাজারে তরমুজের দাম চড়া হলেও জেলা পর্যায়ে তরমুজের দাম অর্ধেকের কম। বরগুনা সদর উপজেলা আমতলীর নিমতলী গ্রামের চাষি রহিমা বেগম প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, তিনি প্রতি কেজি তরমুজ ১৭ টাকায় বিক্রি করছেন। এ বছর তিনি ৮০ শতক জমিতে তরমুজের চাষ করেছেন।

বিক্রেতারা বলছেন, জোগান কম থাকায় হঠাৎ বেড়ে গেছে তরমুজের দাম। যদিও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, চলতি বছর তরমুজের উৎপাদন অন্যান্য বছরের তুলনায় ভালো। এ বছর দেশে ৪২ হাজার হেক্টর জমিতে তরমুজের চাষ হয়েছে, যার ৬২ শতাংশ হয়েছে বরিশাল বিভাগে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় হেক্টরপ্রতি গড়ে ৫০ মেট্রিক টন তরমুজ উৎপাদিত হয়েছে, যা বিগত বছরগুলোর তুলনায় বেশি।

ঢাকার বাজারে তরমুজের দাম চড়া হলেও জেলা পর্যায়ে তরমুজের দাম অর্ধেকের কম। বরগুনা সদর উপজেলা আমতলীর নিমতলী গ্রামের চাষি রহিমা বেগম প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, তিনি প্রতি কেজি তরমুজ ১৭ টাকায় বিক্রি করছেন। এ বছর তিনি ৮০ শতক জমিতে তরমুজের চাষ করেছেন।

পটুয়াখালী শহরের নিউমার্কেটের তরমুজ পাইকারি বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে তরমুজের দাম কেজিপ্রতি পাঁচ-সাত টাকা বেড়েছে। পাইকারি বাজারে এখন এক কেজি তরমুজের দাম ২০-২৫ টাকা।

ঢাকার কারওয়ান বাজার, নিউমার্কেট, এলিফ্যান্ট রোড কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে তরমুজের জোগানের ঘাটতি নেই। ক্রেতারাও ভিড় করে কিনছেন তরমুজ। তবে দাম বেশি থাকায় তাঁরা কিছুটা অসন্তোষ প্রকাশ করেন। ঢাকার মগবাজার থেকে কারওয়ান বাজারে তরমুজ কিনতে আসা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, প্রতিটি জিনিসের দাম বেশি। এভাবে দাম বাড়লে মৌসুমি ফল খাওয়া যাবে না।

তবে বিক্রেতারা দাম বাড়ার ভিন্ন ভিন্ন কারণ উল্লেখ করেন। নিউমার্কেট কাঁচাবাজারের ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতা শাকিল মাহমুদ বলেন, লকডাউনে গাড়ি কম আসায় গত দুদিনে তরমুজের দাম বেড়েছে। আরেক বিক্রেতা ফিরোজ মোল্লা বলেন, গাড়িভাড়া বেড়ে গেছে বলে তরমুজের দাম বাড়তি।

এদিকে কারওয়ান বাজারের আড়তদারেরা দাবি করেন, মৌসুমের শেষে জোগান কমে এসেছে।

তবে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ ইউসুফ প্রথম আলোকে জানান, তরমুজের দাম বাড়ার একমাত্র কারণ চাহিদা বেড়ে যাওয়া। তিনি বলেন, এ বছর যান চলাচলে বিঘ্ন না থাকায় দেশের সব প্রান্তে তরমুজের জোগান দেওয়া সম্ভব হয়েছে। তাতে বাজার বড় হয়েছে, ফলে বিক্রেতারা কম দামে ছাড়ছেন না।

প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও পটুয়াখালী প্রতিনিধি।