ঢাকা ক্লাবের ৩৪ কোটি টাকা কর অব্যাহতির আবেদন নাকচ

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) পাওনা প্রায় ৩৪ কোটি টাকার মূল্য সংযোজন কর (মূসক) ও সম্পূরক শুল্ক ঢাকা ক্লাবকে দিতেই হবে। কয়েক বছরের ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক হিসেবে পাওনা টাকার দায় থেকে অব্যাহতি চেয়ে কিছুদিন আগে আবেদন করেছিল ঢাকা ক্লাব।

ঢাকা ক্লাবের সেই আবেদনে অপারগতা প্রকাশ করেছে এনবিআর। গত ২৯ মার্চ এক চিঠিতে ঢাকা ক্লাবকে এনবিআর জানিয়েছে, আইনি প্রক্রিয়ায় দাবিনামা জারি করায় পাওনা টাকা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুযোগ নেই।

ঢাকা ক্লাবের কাছ প্রায় ৩৪ কোটি টাকার ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক পাওনা আছে এনবিআরের। এই রাজস্ব অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন নাকচ করে দিয়েছে এনবিআর।

ঢাকা দক্ষিণ কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের এক তদন্ত প্রতিবেদন ঘেঁটে দেখা গেছে, ঢাকা ক্লাবে বুকিং চার্জ, সার্ভিস চার্জ, বেকারি বার, বিউটি পারলার, গেস্টহাউস ভাড়া, হেলথ সার্ভিস, কার্ডরুমসহ বিভিন্ন সেবার বিপরীতে ২০০৯ সালের অক্টোবর থেকে ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত সম্পূরক শুল্ক বাবদ ৭ কোটি ১০ লাখ ৫ হাজার ২৫৮ টাকা এবং ভ্যাট বাবদ ১৯ কোটি ৫৯ লাখ ৭৭ হাজার ৩১৫ টাকা পাওনা রয়েছে। এ ছাড়া একইভাবে ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৬ সালের জুন মাস পর্যন্ত আরও ৭ কোটি ৫ লাখ ৩৮ হাজার ৮৭৭ টাকা বকেয়া রয়েছে।

এরপর ২০১৭ সালে বকেয়া টাকা আদায়ে একাধিকবার দাবিনামা জারি করা হয়। ২০১৭ সালের শেষের দিকে শুনানি গ্রহণের পর ২০১৮ সালে চূড়ান্ত দাবিনামা জানানো হয় ঢাকা ক্লাবকে। বকেয়া টাকা না পেয়ে গত জানুয়ারি মাসে ঢাকা ক্লাব কর্তৃপক্ষকে চূড়ান্ত নোটিশ দেওয়া হয়। পরে ঢাকা ক্লাব কর্তৃপক্ষ দুই মাসের সময় প্রার্থনা করে।

ঢাকা ক্লাবকে এনবিআর জানিয়েছে, আইনি প্রক্রিয়ায় দাবিনামা জারি করায় পাওনা টাকা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুযোগ নেই।

কিন্তু ১৫ দিনের সময় বেঁধে দেয় ঢাকা দক্ষিণ কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের। পরে ঢাকা ক্লাব কর্তৃপক্ষ গত ফেব্রুয়ারি মাসে বকেয়া ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক থেকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য এনবিআরে আবেদন জানায় ঢাকা ক্লাবের প্রেসিডেন্ট খায়রুল মজিদ মাহমুদ। চিঠিতে বলা হয়, পাওনা টাকা পরিশোধ করা ক্লাব কর্তৃপক্ষের পক্ষে দুরূহ ব্যাপার। গত সপ্তাহে এনবিআর সেই আবেদন নাকচ করে দিয়েছে।

ঢাকা দক্ষিণ কমিশনারেটের কমিশনার এস এম হ‌ুমায়ূন কবির প্রথম আলোকে বলেন, ‘আইন সবার জন্য সমান। আমরা এখন ঢাকা ক্লাবের কাছ থেকে বকেয়া কর আদায়ে আইনি প্রক্রিয়ায় যাব।’