দাম কমাতে সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি

দেশীয় টাইলস ও স্যানিটারি পণ্যের ওপর সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন এই খাতের উৎপাদকেরা। বর্তমানে দেশীয় টাইলসের ওপর ১৫ শতাংশ ও স্যানিটারি পণ্যে ১০ শতাংশ হারে সম্পূরক শুল্ক আরোপ রয়েছে। তাই সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার করা হলে দেশীয় টাইলস ও স্যানিটারি পণ্যের দাম কমবে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে আগামী ২০২১–২২ অর্থবছরের প্রাক্–বাজেট আলোচনায় বাংলাদেশ সিরামিক উৎপাদক ও রপ্তানি সমিতির নেতারা এই দাবি জানান। গতকাল সোমবার থেকেই নতুন অর্থবছরের প্রাক্‌–বাজেট শুরু হয়েছে।

এনবিআরের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত হয় প্রাক্–বাজেট আলোচনা। এতে সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। বাংলাদেশ সিরামিক উৎপাদক ও রপ্তানি সমিতির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম মোল্লার নেতৃত্বে এই খাতের ব্যবসায়ীরা সভায় অংশ নেন।

সম্পূরক শুল্ক কমানোর দাবির পক্ষে যুক্তি দিয়ে সমিতির প্রস্তাবে বলা হয়েছে, সিরামিকস টাইলস এখন আর বিলাসী পণ্য নয়। ভবন নির্মাণের অন্যতম উপকরণ হিসেবে এই পণ্যের ব্যবহার বাড়ছে। এটি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সিরামিক টাইলসে উৎপাদন পর্যায়ে ১৫ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহার করা হলে স্থানীয় বাজারে পণ্যটির মূল্য কমবে। এতে টাইলসের ব্যবহারও বাড়বে।

উল্লেখ্য, যেকোনো পণ্যের ভিত্তিমূল্যের ওপর সম্পূরক শুল্কহার যোগ করে অন্যান্য শুল্ক-কর বসে।

সমিতির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম মোল্লা তাঁদের দাবিদাওয়া তুলে ধরে বলেন, বর্তমানে অর্থনৈতিক অঞ্চলে কারখানা করলে কর অবকাশ সুবিধা মেলে। এর বাইরে কারখানা করলে সুবিধাটি পাওয়া যায় না। বিদ্যমান রপ্তানি নীতিমালা অনুযায়ী, এই শিল্পকে পাঁচ বছরের জন্য কর অবকাশ সুবিধা দেওয়া উচিত। এতে নতুন বিনিয়োগ আকৃষ্ট হবে। তিনি আরও বলেন, সিরামিকসের পেইন্টিং কালি আমদানিতে মোট ৫৯ শতাংশের মতো শুল্ক-কর দিতে হয়। এই কালির ওপর শুল্ক-কর কমিয়ে শিল্প খাতের জন্য আলাদা এইচএস কোড চালুর দাবি জানান তিনি।

বর্তমানে দেশে ৬৮টি সিরামিক শিল্প প্রতিষ্ঠান আছে। এই খাতে মোট বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা।

অন্যান্য দাবি

সভায় সিরামিক শিল্পের বিভিন্ন কাঁচামাল যেমন জারকোনিয়াম, কভার কোট, ল্যাভাটরি সিটস ও কভার, ডিসপেক্স, সিরামিকস ফাইবার, বিন্ডার, ক্যালসিয়াম কার্বোনেট ইত্যাদি আমদানিতে শুল্ক-কর প্রত্যাহার বা কমানোর দাবি জানানো হয়েছে। এ ছাড়া দেশীয় টাইলস শিল্পকে সুরক্ষা দিতে বিদেশ থেকে আমদানি করা সিরামিক পণ্যের ট্যারিফ মূল্য বৃদ্ধির দাবি জানান এই খাতের স্থানীয় উৎপাদকেরা। এ ছাড়া কোয়ার্টস, বল ক্লে, ফেন্ড শোর—এসব কাঁচামাল আমদানিতে অগ্রিম কর ৫ শতাংশ প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।

বর্তমানে সিরামিক পণ্য রপ্তানি করলে ১০ শতাংশ হারে নগদ প্রণোদনা পাওয়া যায়। এই নগদ প্রণোদনার ওপর আরোপিত ১০ শতাংশ অগ্রিম করও প্রত্যাহার চান সিরামিক পণ্য রপ্তানিকারকেরা।