পচনশীল পণ্য ৪৮ ঘণ্টায় খালাস

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর

পচনশীল পণ্য আমদানি করলে তা চটজলদি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে। প্রয়োজনে নির্ধারিত অফিস সময়ের বাইরেও পণ্যের চালান পরীক্ষণ ও শুল্কায়নের কাজ চলবে। বিল অব এন্ট্রি দাখিলের পর সব মিলিয়ে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই পণ্য খালাস করতে পারবেন আমদানিকারকেরা।

সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) শুল্ক বিভাগ পচনশীল পণ্য দ্রুত খালাস ও নিষ্পত্তিকরণ বিধিমালা ২০২১ জারি করেছে। এই বিধিমালায় পণ্য খালাসের জন্য সর্বোচ্চ ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বিধিমালায় কীভাবে পচনশীল পণ্য খালাস করতে হবে, খালাস না করলে কী হবে, পচনশীল পণ্যের সংজ্ঞাসহ বিভিন্ন বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরের পাশাপাশি দেশের স্থলবন্দর দিয়ে পচনশীল পণ্য আমদানি ও রপ্তানি হয়।

শুল্ক বিভাগের নতুন বিধিমালায় পচনশীল পণ্যের তালিকাও দেওয়া হয়েছে। সেখানে ৬৩ ধরনের পণ্যকে পচনশীল বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তালিকায় যেসব পণ্য আছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো জীবন্ত পশু, পাখি ও প্রাণী; জীবন্ত হাঁস-মুরগি, টার্কি ও এগুলোর বাচ্চা; জীবন্ত ও হিমায়িত মাছ, মাছের পোনা; জীবন্ত গাছপালা, মাশরুম; তাজা ফুল, তাজা ফল, খেজুর; ডাল, ছোলা; চিনি; লবণ; দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য; হাঁস-মুরগির ডিম; চকলেট, বিস্কুট; সেমাই, নুডলস; চিপস, চানাচুর, আচার; শুঁটকি মাছ; চা–পাতা, কফি; সুপারি; বাদাম; সার; কাঁচা চামড়া; ভোজ্যতেল; পেঁয়াজ, রসুন, মরিচ, আদা, কাঁচা হলুদ; তেঁতুল, তাল মিসরি, কিশমিশ; অনধিক ছয় মাস মেয়াদযুক্ত সব খাদ্যদ্রব্য; প্রসাধনসামগ্রী; ওষুধ ও ওষুধের কাঁচামাল।

বিধিমালায় বলা হয়েছে, পচনশীল পণ্যের বিপরীতে বিল অব এন্ট্রি বা বিল অব এক্সপোর্ট দাখিল হলে যদি কায়িক পরীক্ষার জন্য বিবেচনা না করা হয় কিংবা শুল্ক গোয়েন্দা বা অন্য কোনো দপ্তরের কোনো আপত্তি না থাকে, তাহলে অনতিবিলম্বে তা শুল্কায়নের ব্যবস্থা করা হবে।

নতুন এই বিধিমালা নিয়ে গত এপ্রিল মাসে শুল্ক বিভাগ আমদানিকারক, বন্দর কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। এতে সভাপতিত্ব করেন এনবিআরের সদস্য খন্দকার আমিনুর রহমান। ওই বৈঠকে দিনে দিনে পণ্য পরীক্ষণ ও শুল্কায়ন কার্যক্রম শেষ করার সিদ্ধান্ত হয়।

এ ছাড়া পচনশীল পণ্যের চালান খালাস করতে আমদানিকারক ও রপ্তানিকারক দিনরাত ২৪ ঘণ্টা বিল অব এন্ট্রি বা বিল অব এক্সপোর্ট দাখিল করতে পারবেন। আমদানিকারক বা রপ্তানিকারক চাইলে নির্ধারিত দাপ্তরিক সময়ের বাইরে চালানের পরীক্ষণ, শুল্কায়ন করে পণ্য খালাস করতে পারবেন।

এদিকে পচনশীল পণ্যের জন্য একটি ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করবেন সংশ্লিষ্ট কমিশনার। নির্ধারিত সময়ে পণ্য খালাস না করলে কিংবা অন্য কোনো কারণে খালাস করা না হলে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ওই কমিটি নিলামসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।