প্রবৃদ্ধির সেই পুরোনো তথ্যই সংসদে পেশ

২০১৯-২০ অর্থবছর শেষ হয়েছে প্রায় এক বছর আগে। অথচ এখনো ওই অর্থবছরের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির হার এখনো নিরূপণ করতে পারেনি সরকার। অবশ্য বছরখানেক আগে ৫ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের একটা সাময়িক হিসাব দিয়েছিল পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত সংস্থা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। আর অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালও গতকাল সোমবার জাতীয় সংসদে সেটিই উল্লেখ করেছেন। কিন্তু এটা যে সাময়িক হিসাব, তা তিনি বলেননি।

বগুড়া-৬ আসনের সাংসদ গোলাম মোহাম্মদ সিরাজের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, এক দশকের ক্রমাগত উচ্চ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের ধারা কোভিড-১৯-এর প্রভাবে সাময়িকভাবে বাধাগ্রস্ত হয়েছে। গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে রেকর্ড ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হলেও ২০১৯-২০ অর্থবছরে করোনাভাইরাসের কারণে তা কমে ৫ দশমিক ২ শতাংশ হয়েছে। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর গতকাল টেবিলে উত্থাপিত হয়।

অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশে কোভিডের প্রাদুর্ভাবের সঙ্গে সঙ্গেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ব, দূরদর্শিতা ও নিরলস কর্মতৎপরতায় সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি তেমন বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েনি। বরং কোভিড-১৯ মহামারির অর্থনৈতিক প্রভাব মোকাবিলায় বিশ্বে সাফল্যের এক অনন্য নজির স্থাপন করেছে বাংলাদেশ।

বাজেট পেশের আগে মে মাসে এবং তারও আগে এপ্রিল মাসে দুই দফায় এ ব্যাপারে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের কাছে জানতে চাইলে তিনি অনির্দিষ্টভাবে ‘কয়েক দিনের মধ্যেই জানা যাবে’ বলে মন্তব্য করেছিলেন।

এ নিয়ে অর্থমন্ত্রী গতকাল সংসদে তথ্য দেওয়ার পর বিবিএসের মহাপরিচালক (ডিজি) তাজুল ইসলামের সঙ্গে প্রথম আলোর পক্ষ থেকে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয়। তাঁর কাছে প্রশ্ন ছিল, ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রবৃদ্ধির হার বিবিএস নির্ণয় করেছে কি না? তিনি জানান, ‘এখনো হয়নি।’ কবে হবে—জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখনো বলা যাচ্ছে না। অনুমোদনের অপেক্ষায় আছি।’

অর্থ মন্ত্রণালয় ও বিবিএসের সূত্রগুলো জানায়, ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি অর্জনের হার ৪ শতাংশের মতো হবে।

এদিকে চট্টগ্রাম-১১ আসনের সাংসদ এম আবদুল লতিফের অপর এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, ২০১৪-১৫ থেকে ২০২০-২১ অর্থবছরের বর্তমান সময় পর্যন্ত প্রায় ৬ বছরে ৬৮টি প্রতিষ্ঠান প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে ৪ হাজার ৮৩১ কোটি টাকার মূলধন সংগ্রহ করেছে।

অর্থমন্ত্রী আরও জানান, মুজিব বর্ষ উপলক্ষে চালু করা ‘বঙ্গবন্ধু যুবঋণ’ কর্মসূচির আওতায় জামানত ছাড়া ৯০০ কোটি টাকার বেশি ঋণ দেওয়া হয়েছে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ৫৮ হাজার ২৯৭ জন বেকার যুবককে গত ৮ জুন পর্যন্ত জামানতবিহীন এই ঋণ নিয়েছেন।