বাংলাদেশের ও ভারতের নিরবচ্ছিন্ন পরিবহনব্যবস্থা জাতীয় আয় ১৭% বাড়াবে

বাংলাদেশের ও ভারতের মধ্যে নিরবচ্ছিন্ন পরিবহনব্যবস্থা চালু করতে পারলে বাংলাদেশের জাতীয় আয় ১৭ শতাংশ বেড়ে যাবে। আর ভারতের জাতীয় আয় বাড়বে ৮ শতাংশ।

আজ মঙ্গলবার বিশ্বব্যাংক ‘সমৃদ্ধির জন্য আন্তযোগাযোগ: দক্ষিণ এশিয়ার পূর্বাঞ্চলের সমন্বিত পরিবহনব্যবস্থা চালুর চ্যালেঞ্জ ও সুযোগ’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এতে বাংলাদেশ ও ভারতের জাতীয় আয় বৃদ্ধির সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছে। তবে এই জাতীয় আয় বাংলাদেশের নাগরিকদের ব্যক্তিগত আয় বৃদ্ধি নয়। দেশের অভ্যন্তর এবং বিদেশ থেকে একটি দেশ যে আয় করে, এর মোট হিসাব।

আজ প্রতিবেদনটি প্রকাশ উপলক্ষে ভারত ও বাংলাদেশে একযোগে ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছে বিশ্বব্যাংক। সেখানে প্রতিবেদনের নানা দিক তুলে ধরেন বিশ্বব্যাংকের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ মাটিয়াস হেরেরা ডাপ্পি ও বেসরকারি খাত বিশেষজ্ঞ চার্লস কুনাকা। নিরবচ্ছিন্ন পরিবহনব্যবস্থা চালু হলে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য বাড়বে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।

বাংলাদেশের ও ভারতের মধ্যে নিরবচ্ছিন্ন পরিবহনব্যবস্থা চালু করতে পারলে বাংলাদেশের জাতীয় আয় ১৭ শতাংশ বেড়ে যাবে। আর ভারতের জাতীয় আয় বাড়বে ৮ শতাংশ

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে ভারতের একটি কোম্পানি বাংলাদেশের একটি কোম্পানির সঙ্গে ব্যবসা করলে যত খরচ হয়, তার চেয়ে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ খরচ কম হয় যদি ওই কোম্পানি ব্রাজিল বা জার্মানির একটি কোম্পানির সঙ্গে ব্যবসা করে। উচ্চ কর, প্যারা ট্যারিফ, অশুল্ক বাধাসহ বিভিন্ন কারণে দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বাংলাদেশ ও ভারতের শুল্ক-কর হার বিশ্ব শুল্ক-করের গড় হারের দ্বিগুণ।

অন্যদিকে দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যও তুলনামূলক কম। বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের মাত্র ১০ শতাংশ হয় ভারতের সঙ্গে। অন্যদিকে ভারতের মাত্র ১ শতাংশ ব্যবসা-বাণিজ্য হয় বাংলাদেশের সঙ্গে।

ওই প্রতিবেদনে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটানের মধ্যে মোটর ভেহিকেলস অ্যাগ্রিমেন্ট (এমভিএ) চুক্তি পর্যালোচনা করা হয়। এই চুক্তির বাস্তবায়ন শক্তিশালী করতে চারটি সুপারিশ করা হয়। যেমন, চালকদের লাইসেন্স ও ভিসাপ্রক্রিয়া সহজ করা; একটি আঞ্চলিক পরিবহনব্যবস্থা চালু করা; বাণিজ্য ও পরিবহনসংক্রান্ত কাগজপত্র ডিজিটাল করা এবং বাণিজ্য পথ নির্বাচন প্রক্রিয়া সহজ করা।

বর্তমানে ভারতের একটি কোম্পানি বাংলাদেশের একটি কোম্পানির সঙ্গে ব্যবসা করলে যত খরচ হয়, তার চেয়ে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ খরচ কম হয় যদি ওই কোম্পানি ব্রাজিল বা জার্মানির একটি কোম্পানির সঙ্গে ব্যবসা করে।

বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি টেম্বন বলেন, ভৌগোলিকভাবে বাংলাদেশ হলো ভারত, নেপাল, ভুটান ও অন্য পূর্ব এশীয় দেশগুলোর গেটওয়ে। আঞ্চলিক বাণিজ্য, ট্রানজিটসহ অন্যান্য বাণিজ্যসহায়ক কাঠামো উন্নত করে বাংলাদেশ এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক শক্তির কেন্দ্র হতে পারে।

একই অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ভারতে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর জুনায়েদ আহমেদ। তিনি বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার পূর্বাঞ্চলের মধ্যে আন্তযোগাযোগ জোরদার করা করে তা পুরো দক্ষিণ এশিয়ার প্রবৃদ্ধির চালিকা শক্তি হবে। এই যোগাযোগের মধ্যে থাকতে হবে জ্বালানি, বাণিজ্য ও পরিবহনব্যবস্থা। ভারত ও বাংলাদেশ এখন আন্তদেশীয় যোগাযোগ বাড়াতে বিনিয়োগ করছে।