বিকাশে শ্রমিকের মজুরি পাঠানো ৩২% কমেছে

করোনার আগে মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠান বিকাশের মাধ্যমে চার লাখ পোশাকশ্রমিকের বেতন-ভাতা পাঠানো হতো। করোনা মহামারির শুরুর দিকে সরকার পোশাকশ্রমিকদের চার মাসের মজুরি দেওয়ার জন্য প্রণোদনা প্রদান করে। সেই অর্থ এমএফএসের মাধ্যমে পরিশোধের বাধ্যবাধকতা ছিল। ফলে ৯৮০টি পোশাক কারখানার প্রায় ১১ লাখ শ্রমিকের বেতন-ভাতা বিকাশের মাধ্যমে দ্রুততার সঙ্গে পাঠানো হয়।

অবশ্য সাম্প্রতিক সময়ে বিকাশের মাধ্যমে শ্রমিকের মজুরি পাঠানোর হার কমেছে। সাড়ে সাত লাখ শ্রমিক গত মাসের মজুরি বিকাশের মাধ্যমে পেয়েছেন। অর্থাৎ কয়েক মাসের ব্যবধানে বিকাশের মাধ্যমে শ্রমিকের মজুরি পাঠানোর হার কমেছে ৩১ দশমিক ৮১ শতাংশ। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এমএফএসের মাধ্যমে কম সময়ে ঝুঁকিবিহীনভাবে মজুরি পরিশোধ করা গেলেও তারল্য সংকটের কারণে অনেক উদ্যোক্তা আবার নগদ টাকায় মজুরি দিতে ঝুঁকছেন।

রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে গতকাল মঙ্গলবার ‘তৈরি পোশাকশ্রমিকদের ডিজিটাল বেতন ব্যবস্থাপনা: অভিজ্ঞতা ও প্রত্যাশা’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় এসব তথ্য জানানো হয়। এতে বক্তব্য দেন অনন্ত গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এনামুল হক, নিউএজ গ্রুপের এমডি আরিফ ইব্রাহিম, এজে গ্রুপের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন চৌধুরী প্রমুখ।

শুরুতে বিকাশের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা মিজানুর রশীদ বলেন, করোনাকালে ৯৮০ কারখানার প্রায় ১১ লাখ শ্রমিক প্রায় ৩ হাজার ৮০০ কোটি টাকার বেতন-ভাতা সরাসরি তাঁদের বিকাশ হিসাবে পেয়েছেন। এমএফএসের মাধ্যমে বেতন হওয়ায় শ্রমিকদের মধ্যে সঞ্চয়ের প্রবণতা বৃদ্ধি, মালিকদের ঝুঁকি হ্রাস ও কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করতে সহায়তা করেছে।

সভায় জানানো হয়, ভারতে ৯৫, ভিয়েতনামে ৮৫, ইন্দোনেশিয়ায় ৮৪ এবং চীনে ৭৮ শতাংশ শ্রমিক ডিজিটাল ব্যবস্থায় বেতন পান। বাংলাদেশে এই হার মাত্র ৪০ শতাংশ। অবশ্য গত বছরের এপ্রিল-জুন সময়ে প্রতি চারজন পোশাকশ্রমিকের মধ্যে তিনজনই এমএফএসের মাধ্যমে বেতন-ভাতা পেয়েছেন।

অনন্ত গ্রুপের ১২ হাজার শ্রমিক এমএফএসের মাধ্যমে বেতন-ভাতা পান। এই তথ্য দিয়ে গ্রুপের এমডি এনামুল হক বলেন, ব্যাংকে গিয়ে পুলিশি পাহারায় টাকা আনা ও তা ব্যবস্থাপনা করা খুবই কঠিন কাজ।