ভাতার টাকা দেবে এডিবি

আগামী অর্থবছরে সরকারি ভাতাপ্রাপ্ত বয়স্ক ভাতা, বিধবা ও স্বামী নিগৃহীত নারী ও অসচ্ছল প্রতিবন্ধী উপকারভোগীর সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে।

এডিবি

আগামী অর্থবছরে তিনটি পৃথক কর্মসূচির মাধ্যমে নতুন করে সোয়া ১৪ লাখ ব্যক্তিকে সামাজিক সুরক্ষার আওতায় আনা হচ্ছে। এর মধ্যে ১৫০টি উপজেলার ৮ লাখ গরিব প্রবীণ ব্যক্তিকে বয়স্ক ভাতার ভাতায় আনা হবে। নতুন করে ৪ লাখ ২৫ হাজার বিধবা ও স্বামী নিগৃহীত নারী ভাতার আওতায় আসবেন। এ ছাড়া আরও ২ লাখ ৮ হাজার অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতা পাবে।

সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় নতুন করে ভাতা পেতে পাওয়া উপকারভোগীদের মাসে ৫০০ টাকা করে দেওয়া হবে। এ জন্য আগামী অর্থবছরের বাজেটে সব মিলিয়ে ৯৩৬ কেটি টাকা বাড়তি বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) এই বাড়তি টাকা দেবে। সামাজিক সহনশীলতা কর্মসূচির আওতায় বাংলাদেশকে ২৫ কোটি ডলার দিচ্ছে এডিবি। টাকার অঙ্কে যার পরিমাণ ২ হাজার ১২৫ কোটি টাকা। গতকাল বুধবার এ নিয়ে এডিবি ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) মধ্যে অনলাইনে এক চুক্তি স্বাক্ষর হয়। এতে সই করেন এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ ও ইআরডির সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন।

জানা গেছে, ভাতার টাকা দেওয়ার পাশাপাশি সেই টাকা যাতে মুঠোফোনের মাধ্যমে সহজে উপকারভোগীর কাছে পৌঁছে দেওয়া যায় সেই ব্যবস্থাও করা হবে। এ জন্য সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় একটি সমন্বিত ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে।

এবার দেখা যাক, আগামী অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল উল্লিখিত তিন ধরনের উপকারভোগীর সংখ্যা কত বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছেন। বর্তমানে ১১২টি উপজেলার ৪৯ লাখ প্রবীণ ব্যক্তি প্রতি মাসে ৫০০ টাকা করে ভাতা পান। আগামী অর্থবছরে এ তালিকায় নতুন করে যুক্ত হবে ৮ লাখ প্রবীণ নাগরিক। সে জন্য ১৫০ উপজেলাকে আওতায় আনা হয়েছে। নতুন ভাতাভোগীদের জন্য বাড়তি ৪৮১ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

বর্তমানে সাড়ে ২০ লাখ বিধবা ও স্বামী নিগৃহীত নারী ৫০০ টাকা করে মাসে ভাতা পান। আগামী অর্থবছরে ১৫০টি উপজেলার আরও ৪ লাখ ২৫ হাজার বিধবা ও স্বামী নিগৃহীত নারী ভাতার আওতায় আসবেন। এ জন্য অর্থমন্ত্রী প্রস্তাবিত বাজেটে নতুন করে বরাদ্দ বাড়িয়েছেন ২৫৫ কোটি টাকা। বর্তমানে ১৮ লাখ প্রতিবন্ধী ভাতা পান। আগামী অর্থবছরে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ২০ লাখ ৮ হাজার। বাড়তি উপকারভোগীর ভাতার জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২০০ কোটি টাকা। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক বাড়তি বরাদ্দের এ অর্থ জোগান দেবে। আগামী অর্থবছরে শুধু ওই তিনটি কর্মসূচিতেই উপকারভোগীর সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

গতকাল পাঠানো এডিবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিকে শক্তিশালী করতে নানামুখী সংস্কার করা হবে।

এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ বলেন, ‘করোনার মধ্যেও শক্তিশালী সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি, প্রণোদনা প্যাকেজ দেওয়ায় গত অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ২ শতাংশ হয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি শক্তিশালী করার পাশাপাশি বিস্তৃত করতে এডিবি বাংলাদেশকে সহায়তা করছে। এই উদ্যোগ এ দেশের গরিব মানুষকে করোনা মহামারির ধাক্কা কাটাতে সাহায্য করবে।’