মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৬ শতাংশ ছুঁই ছুঁই
দেশে চাল, ডাল, তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েই চলেছে। ফলে সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে এখন ৬ শতাংশ ছুঁই ছুঁই করছে। শহর ও গ্রাম দুই জায়গাতেই একই চিত্র। তবে বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠছে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি। বিশেষ করে পরিবহন খাতে ব্যয় অস্বাভাবিক বেড়েছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হালনাগাদ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, সর্বশেষ নভেম্বর মাসে দেশে গড় মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৫ দশমিক ৯৮ শতাংশে উঠেছে, যা আগের মাসে ছিল ৫ দশমিক ৭০ শতাংশ। এই মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৫ দশমিক ৯ শতাংশ হয়েছে, যা অক্টোবরে ছিল ৫ দশমিক ৬২ শতাংশ। আর খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি আগের মাসের ৬ দশমিক ১৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ৬ দশমিক ৭৮ শতাংশে উঠেছে।
মূল্যস্ফীতি বর্তমানে সরকারের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার ওপরে রয়েছে। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে সরকার মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৩ শতাংশে রাখার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছিল।
অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, নভেম্বরের শুরুতে সরকার ডিজেল ও কেরোসিনের দাম প্রতি লিটারে ১৫ টাকা বাড়ানোর কারণে ভোক্তাপর্যায়ে পণ্য দুটির দাম ৬৫ টাকা থেকে এক লাফে ৮০ টাকায় ওঠে। এর জেরে সব পরিবহনের ভাড়া বেড়েছে। এর প্রভাব পড়েছে মূল্যস্ফীতিতে।
জানতে চাইলে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ার প্রভাব পড়েছে বাজারে। ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় পরিবহন ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু ভাড়া যা বেড়েছে, তার চেয়ে বেশি জোর করে নেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া বাজারে চাহিদাও বাড়ছে। এসব কারণে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে।
বিবিএসের তথ্য অনুযায়ী, নভেম্বরে গ্রামে সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৬ দশমিক ২০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা আগের মাসে ছিল ৫ দশমিক ৮১ শতাংশ। খাদ্য মূল্যস্ফীতি আগের মাসের ৫ দশমিক ৬২ শতাংশ থেকে বেড়ে ৫ দশমিক ৯০ শতাংশ হয়েছে। খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৭৮ শতাংশে উঠেছে, যা আগের মাসে ছিল ৬ দশমিক ১৭ শতাংশ।
অন্যদিকে শহরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি আগের মাসের ৫ দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে বেড়ে ৫ দশমিক ৫৯ শতাংশ হয়েছে। খাদ্য মূল্যস্ফীতি ৪ দশমিক ৩৭ শতাংশে উঠেছে, যা আগের মাসে ছিল ৪ দশমিক ৩১ শতাংশ। আর খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি আগের মাসের ৬ দশমিক ৮৯ শতাংশ থেকে ৬ দশমিক ৯৯ শতাংশ উন্নীত হয়েছে।