মেঘনা গ্রুপের আমদানি ১৪ হাজার কোটি টাকার

কাঁচামাল ও পণ্য আমদানিতে এককভাবে দেশে এখন শীর্ষে রয়েছে মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রি। গত অর্থবছরে গ্রুপটি ৭৪ লাখ টনের বেশি পণ্য ও কাঁচামাল আমদানি করেছে। সব মিলিয়ে গ্রুপটি ১৪ হাজার কোটি টাকার বেশি পণ্য আমদানি করেছে।

উদ্যোক্তা মোস্তফা কামালের হাত ধরে যাত্রা শুরু হয় মেঘনা গ্রুপের। ১৯৭৬ সালে কামাল ট্রেডিং প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ব্যবসা শুরু করেন তিনি। ১৯৮৯ সালে নারায়ণগঞ্জের মেঘনা ঘাটে মেঘনা ভেজিটেবল অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ দিয়ে মেঘনা গ্রুপের যাত্রা শুরু। এখন মেঘনা গ্রুপের ৪৮টি কারখানা রয়েছে। প্রতিবছর বাড়ছে এই সংখ্যা।

বিশ্বব্যাংক গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি) গত বছর আয়ের দিক থেকে বাংলাদেশের ২৩টি প্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রকাশ করেছে, যেখানে শীর্ষ তিনটি প্রতিষ্ঠানের একটি মেঘনা গ্রুপ, যাদের আয় দেড় বিলিয়ন ডলারের বেশি।

চিনি, ভোজ্যতেল, সিমেন্ট, কাগজ, জাহাজ নির্মাণ, জাহাজ পরিচালনা, তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি), পানীয়, বিস্কুট, মোড়কজাতকরণ, অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ নানা খাতে ব্যবসা রয়েছে মেঘনা গ্রুপের। ফ্রেশ ব্র্যান্ড নামের প্রতিষ্ঠানটির পণ্য বাজারজাত হচ্ছে।

করোনার প্রভাব শুরুর আগে গত বছর ফেব্রুয়ারিতে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ এলাকায় একসঙ্গে নয়টি কারখানা চালু হয় গ্রুপটির। আগামী এক বছরে চালু হবে আরও পাঁচটি শিল্পকারখানা।

সাক্ষাৎকার

মোস্তফা কামাল, চেয়ারম্যান, মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ

নতুন নতুন শিল্পকারখানা গড়ে তুলতে চাই

মোস্তফা কামাল, চেয়ারম্যান, মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ

শিল্পকারখানায় পণ্য উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাত করার জন্যই মূলত কাঁচামাল আমদানি করছি। তিন বছর আগেই মেঘনা গ্রুপের কারখানার কাঁচামাল ও পণ্যের আমদানি বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে। গত অর্থবছরে আমদানির পরিমাণ দেড় বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। এসব কাঁচামাল প্রক্রিয়াজাত করে পণ্য তৈরি হচ্ছে।

মেঘনা গ্রুপের কারখানার সংখ্যা এখন ৪৮। এসব কারখানায় সরাসরি কর্মসংস্থান হয়েছে ৩৫ হাজার মানুষের। পরোক্ষভাবে কর্মসংস্থানের হিসাব করা হলে তা লক্ষাধিক হবে। আমদানি পণ্য খালাস ও বাজারজাতকরণে প্রতিবছর আমরা সরকারকে তিন হাজার কোটি টাকার বেশি রাজস্ব দিচ্ছি। গত অর্থবছরে এর পরিমাণ ৩ হাজার ২৫০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।

শিল্পকারখানা গড়ে তোলা আমার কাছে নেশার মতো। শিল্পকারখানা না হলে কর্মসংস্থান হবে না। কর্মসংস্থান না হলে সমৃদ্ধি আসবে না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সব সময় বিনিয়োগ বাড়ানোর কথা বলছেন। কারণ, বিনিয়োগ না হলে কর্মসংস্থান বাড়বে না। দেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি হবে না। মেঘনা গ্রুপ প্রতিনিয়ত বিনিয়োগ বাড়াতে কাজ করছে।

এ বছর আরও কয়েকটি কারখানা চালুর কথা থাকলেও করোনার কারণে তা সম্ভব হয়নি। করোনা না থাকলে নতুন নতুন কারখানা চালু হতো। কর্মসংস্থান আরও বাড়ত। এরপরও আমরা থেমে নেই।

বিনিয়োগ বাড়াতে আমরা শুধু সরকারের কাছ থেকে নীতিসহায়তা চাই। বাকি কাজটুকু আমরা করব।