শুধু প্রবাসী আয়কে তারা টার্গেট করবে কেন, সিপিডিকে লক্ষ্য করে অর্থমন্ত্রী

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

তিন-চার মাস ধরে প্রবাসী আয় (রেমিট্যান্স) কমলেও দুই-তিন মাসের মধ্যেই তা আবার স্বাভাবিক অবস্থায় চলে আসবে বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। আজ বুধবার সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকের পর তিনি এমন আশাবাদের কথা শোনান।

দেশে তিন মাসে ১০০ কোটি ডলারের মতো রেমিট্যান্স, তথা প্রবাসী আয় কম এসেছে উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ধীরে ধীরে এটা ঠিক হয়ে যাবে। গত বছর প্রায় ২ হাজার ৫০০ কোটি মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল। এখনো যে গতিতে আসছে, তাতে এবারে ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৩০০ কোটি ডলার আসতে পারে। এটাও অবশ্য কম নয়।

প্রবাসী আয় কমে যাওয়ার খানিকটা কারণও ব্যাখ্যা করেন অর্থমন্ত্রী। বলেন, ‘রেমিট্যান্স আসে মূলত প্রবাসী শ্রমিকদের কাছ থেকে। অনেক প্রবাসী শ্রমিক দেশে এসে আর ফিরে যেতে পারেননি বিদেশে। আগে যত প্রবাসী বিদেশে ছিলেন, বর্তমানে তা নেই। তবে যাওয়া শুরু হয়েছে। আমার মনে হয়, দুই-তিন মাসের মধ্যেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে।’

এদিকে রেমিট্যান্সের নাম করে অন্য কোনো অর্থ দেশে ঢুকছে কি না, তা যাচাই করার জন্য সম্প্রতি সরকারকে পরামর্শ দিয়েছিল বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। এ বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘তারা বিভিন্ন কথাবার্তা বলে। আমাদের বহু খাত আছে, যেখানে প্রণোদনা দিয়ে থাকি। শুধু রেমিট্যান্সকে তারা টার্গেট করবে কেন? এটা ঠিক নয়। আমাদের আরেকটু সময় দিতে হবে।’

অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আগে যে পরিমাণ জনবল বিদেশে ছিল, সে পরিমাণ এখন আছে কি না, সেটা হওয়ার পরও কম এলে বুঝতে হবে অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে।’

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত সেপ্টেম্বর মাসে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবাসী আয় কমেছে ১৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ। সেপ্টেম্বর মাসে প্রবাসী আয় এসেছে ১৭২ কোটি ৬২ লাখ মার্কিন ডলার। আর ২০২০ সালের একই মাসে আয় এসেছিল ২১৫ কোটি ১০ লাখ ডলার।

আর গত আগস্ট মাসে প্রবাসীরা ১৮১ কোটি ডলারের আয় পাঠান দেশে, যা গত বছরের একই মাসের ১৯৬ কোটি ডলার থেকে ৮ শতাংশ কম। এ ছাড়া গত জুলাইয়ের তুলনায় আগস্টে প্রবাসী আয় কমেছে প্রায় সোয়া ৩ শতাংশ। জুলাইয়ে প্রবাসীরা পাঠিয়েছিলেন ১৮৭ কোটি ডলার।

বর্তমানে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় এলে অতিরিক্ত ২ শতাংশ প্রণোদনা দেয় সরকার। গত ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশে প্রবাসী আয় এসেছে প্রায় ২ হাজার ৪৭৮ কোটি ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ২ লাখ কোটি টাকার সমান। এই আয় তার আগের ২০১৯-২০ অর্থবছরের ১ হাজার ৮০৩ কোটি ডলারের চেয়ে ৩৬ শতাংশ বেশি।