আগামী ১০ থেকে ২০ বছরে বিশ্বের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি হবে সমুদ্রকেন্দ্রিক। সমুদ্র অর্থনীতিকে কাজে লাগিয়ে পর্যটন, জাহাজশিল্প, গভীর সাগরে মাছ ধরার উপযোগী জাহাজ নির্মাণ, কনটেইনার, ওষুধ, প্রসাধনীসহ বিভিন্ন ধরনের শিল্প বিকশিত হতে পারে। তবে দেশে সমুদ্র অর্থনীতির সম্ভাবনা কাজে লাগাতে এখন পর্যন্ত কোনো পরিকল্পনা নেই। এ খাতের অভিভাবক কে, তা নিয়েও সংশয় রয়েছে।
ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের আয়োজনে ‘ব্লু ইকোনমি: সম্ভাবনা ও করণীয়’ শীর্ষক কর্মশালায় বক্তারা এসব কথা বলেন। গতকাল রোববার রাজধানীর মতিঝিলে এফবিসিসিআই কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।
কর্মশালায় আরও বক্তব্য দেন পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন, ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এ কে এনামুল হক, বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম প্রমুখ।
কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের সচিব অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খোরশেদ আলম। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সমুদ্রসীমার আয়তন ৬৬৪ কিলোমিটার। তবে মাত্র ৬০ কিলোমিটারের মধ্যে মাছ আহরণ করা হয়। এ ছাড়া সাগরের সীমানায় মালিকানা প্রতিষ্ঠা হলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে সমুদ্রবক্ষের বিপুল পরিমাণ তেল ও গ্যাস। এ ব্যাপারে বেশ কিছু পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হলেও আলোর মুখ দেখেনি।
সমুদ্র অর্থনীতিকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের নতুন সম্ভাবনাময় খাত হিসেবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, সমুদ্র অর্থনীতি থেকে আগামী কয়েক বছরে ১০ হাজার কোটি ডলার রপ্তানি আয় করা সম্ভব। বাংলাদেশের একসময়ের উদীয়মান খাত জাহাজশিল্পের অগ্রগতি কেন ধীর হয়েছে, তা খতিয়ে দেখতে ও নীতি কৌশল ঠিক করতে এফবিসিসিআই ও বিডা একসঙ্গে কাজ করতে পারে।
এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বের হয়ে উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ ও কর্মসংস্থান তৈরিতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে সমুদ্র অর্থনীতি।
সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, সমুদ্র অর্থনীতির সম্ভাবনা নিয়ে কোনো দ্বিমত নেই। কিন্তু এখনো কোনো পরিকল্পনা নেই। এই খাতের অভিভাবক কে, তা নিয়েও সংশয় রয়েছে।