সর্বজনীন টিকার জন্য পাঁচ হাজার কোটি ডলার: আইএমএফ

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)

পাঁচ হাজার কোটি ডলার—আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে বিশ্বের সব মানুষকে কোভিড টিকার আওতায় আনতে এই পরিমাণ অর্থ প্রয়োজন বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। তাদের বক্তব্য, এই খাতে আর্থিক বিনিয়োগ করতে উন্নত দেশগুলো এগিয়ে আসুক। বিনিময়ে খালি হাতে ফিরতে হবে না তাদের। বরং তাতে ৯ লাখ কোটি ডলারের মতো মুনাফা হবে।

পুরো বিষয়টি নিয়ে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন আইএমএফ প্রধান অর্থনীতিবিদ গীতা গোপীনাথ ও তাঁর সহকর্মী রুচির আগরওয়াল। তাঁদের বক্তব্য, একটি লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে, তাতে ২০২১ সালের মধ্যে সব দেশের ৪০ শতাংশ মানুষের টিকাদান সম্পূর্ণ করতে হবে। বাকি ৬০ শতাংশের টিকাদান শেষ করতে হবে ২০২২ সালের প্রথমার্ধে।

আইএমএফের কথায়, মানুষের জীবন ও জীবিকা বাঁচানো নিশ্চিত করা দরকার। সেই সঙ্গে এটাও জানা দরকার, এই মহামারি দ্রুত শেষ হলে অর্থনীতির চাকা ঘুরবে। ২০২৫ সালের মধ্যে বিশ্ব অর্থনীতির আওতা বাড়বে ৯ লাখ কোটি ডলারের কাছাকাছি। টিকাদানে আর্থিক বিনিয়োগ করে উন্নত দেশগুলো শুধু অতিরিক্ত কর বাবদ এক লাখ কোটি ডলার আদায় করতে পারবে। এই খাতে বিনিয়োগ করলে সম্ভবত সর্বোচ্চ রিটার্ন মিলবে আগামী দিনে।

মহামারি অবসানে একমাত্র পথ বিশ্বজুড়ে টিকাকরণ। বারবারই এ বিষয়ে জোর দিচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু একই সঙ্গে দেখা দিয়েছে টিকার জন্য হাহাকার। ইসরায়েল, ব্রিটেন, যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া বেশির ভাগ দেশের হাতে প্রয়োজনীয় টিকা নেই।

আফ্রিকার কিছু দেশে টিকাদানের জন্য প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরিকাঠামো পর্যন্ত নেই। এ অবস্থায় গোটা পৃথিবীকে করোনার হাত থেকে বাঁচাতে বিপুল অর্থসহায়তা প্রয়োজন। তারই একটি আনুমানিক হিসাব তুলে ধরেছে আইএমএফ।

উল্টো দিকে টিকার আকালের মধ্যে একাধিক সংস্থা দাবি করছে, দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার সময়ের ব্যবধান বাড়ানো হলে ভালো ফল মিলবে। কোভিশিল্ডের দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার ৬-৮ সপ্তাহের ব্যবধান বেড়ে ১২-১৬ সপ্তাহ করা হয়েছে। এবার ফাইজার-বায়োএনটেক কোভিড টিকার ক্ষেত্রেও একই দাবি উঠল। ব্রিটেনের একটি গবেষণাপত্রে দাবি করা হয়েছে, প্রবীণদের ক্ষেত্রে ১২ সপ্তাহ পরে টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিলে আরও বেশি মাত্রায় অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে।

যাঁরা এত দিন তিন সপ্তাহের ব্যবধানে দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছিলেন, তাঁদের থেকে সাড়ে তিন গুণ বেশি শক্তিশালী অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে দ্বিতীয় ক্ষেত্রে। এক দলকে ফাইজারের প্রস্তাবিত ৩ সপ্তাহের ব্যবধানে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়, অন্য দলকে দেওয়া হয় ১২ সপ্তাহের ব্যবধানে। সময়ের ব্যবধান বাড়াতে সাড়ে তিন গুণ বেশি অ্যান্টিবডি তৈরি হতে দেখা গিয়েছে বলে দাবি করা হয়।