সিটি গ্রুপের আমদানি তালিকায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যই বেশি

গত ২০২০-২১ অর্থবছরে সিটি গ্রুপ দেড় বিলিয়ন বা দেড় শ কোটি মার্কিন ডলারের কাছাকাছি বা প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার পণ্য ও কাঁচামাল আমদানি করেছে। সিটি গ্রুপের আমদানি তালিকায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যই বেশি। নিত্যপ্রয়োজনীয় এসব পণ্য অশোধিত বা কাঁচা আমদানি করে প্রক্রিয়াজাত করা হয় তাদের নিজস্ব কারখানায়।

উদ্যোক্তা ফজলুর রহমানের হাত ধরে ১৯৭২ সালে যাত্রা শুরু হয় সিটি গ্রুপের। শর্ষের তেল উৎপাদন দিয়ে শুরুর দুই দশক পার করে গ্রুপটি। এরপরই মূলত বড় ধরনের ব্যবসা সম্প্রসারণে যায় সিটি গ্রুপ। আর গত দুই দশকে গ্রুপটির বহরে যুক্ত হয়েছে নতুন নতুন শিল্পপ্রতিষ্ঠান।

বর্তমানে ভোজ্যতেল, চিনি পরিশোধন, চা–বাগান, জাহাজ নির্মাণ, আটা-ময়দার কারখানা, তৈলবীজ মাড়াই কারখানা, প্যাকেজিং, অর্থনৈতিক অঞ্চল, জাহাজ পরিচালনাসহ নানা খাতের ব্যবসা রয়েছে সিটি গ্রুপের। গ্রুপটির প্রধান ব্র্যান্ড ‘তীর’।

বিশ্বব্যাংক গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি) গত বছর বেসরকারি খাতে আয়ের দিক থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছে—এমন প্রতিষ্ঠানের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। সে তালিকায় শত কোটি ডলার বার্ষিক আয়ের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে নাম রয়েছে সিটি গ্রুপের।

সিটি গ্রুপের দুটি অর্থনৈতিক অঞ্চল রয়েছে। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে সিটি ইকোনমিক জোন এবং মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলায় হোসেন্দী ইকোনমিক জোন নামের অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করেছে গ্রুপটি। এ অর্থনৈতিক অঞ্চল দুটিতে নতুন নতুন কারখানা গড়ে তোলা হচ্ছে।

সাক্ষাৎকার

বিশ্বজিৎ সাহা, পরিচালক (করপোরেট ও রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স), সিটি গ্রুপ

পণ্য আমদানি আরও বাড়বে

বিশ্বজিৎ সাহা, পরিচালক (করপোরেট ও রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স), সিটি গ্রুপ

সিটি গ্রুপের এখন ৩৫টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব শিল্পপ্রতিষ্ঠানের আওতায় আমদানি করা পণ্য প্রক্রিয়াজাতের পর বাজারজাত করা হচ্ছে। চট্টগ্রাম ও মোংলা সমুদ্রবন্দর এবং বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে সিটি গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পণ্য আমদানি করা হয়।

তিন বছর ধরে সিটি গ্রুপের আমদানি শত কোটি ডলারের বেশি। বাংলাদেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের চাহিদার ৩০ শতাংশেরও বেশি জোগান দিচ্ছে সিটি গ্রুপ। দেশীয় চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি সয়ামিল, ভোজ্যতেলসহ নানা পণ্য রপ্তানিও করছি আমরা।

সিটি গ্রুপ কয়েক বছর ধরে সরকারকে আড়াই হাজার কোটি টাকার বেশি রাজস্ব দিয়ে আসছে। গত অর্থবছরে রাজস্বের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। সিটি গ্রুপে এ পর্যন্ত কর্মসংস্থান হয়েছে ২৫ হাজার মানুষের।

আগামী বছর সিটি গ্রুপের অর্থনৈতিক অঞ্চলে ছয়টি কারখানা চালু হবে। এসব কারখানায় বিনিয়োগ হবে ৮০ কোটি ডলার। নতুন করে কর্মসংস্থান হবে প্রায় তিন হাজার মানুষের। নতুন নতুন কারখানা স্থাপিত হলে সেসব কারখানার প্রয়োজনে মধ্যবর্তী কাঁচামাল আমদানিও বাড়বে।