সীমান্তের ওপারে পণ্যবাহী ছয় হাজার ট্রাক আটকা

প্রথম আলো ফাইল ছবি

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের পেট্রাপোল ও বাংলাদেশের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে আগে প্রতিদিন ৭০০ থেকে ৮০০ ট্রাক পণ্য আমদানি হতো। কিন্তু এই সংখ্যা এখন ৩০০ থেকে ৪০০ ট্রাকে নেমে এসেছে। যে কারণে ওপারে পেট্রাপোল স্থলবন্দরের কালীতলা পার্কিংয়ে আমদানি পণ্য নিয়ে এরই মধ্যে প্রায় পাঁচ হাজার ট্রাক আটকে গেছে। পেট্রাপোল স্থলবন্দরে আটকে রয়েছে আরও হাজারখানেক ট্রাক।
ওপারে এভাবে বিপুলসংখ্যক ট্রাক আটকে থাকায় আমদানিকারকদের বাড়তি মাশুল গুনতে হচ্ছে, পচনশীল পণ্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, দেশের বিভিন্ন শিল্পকারখানায় কাঁচামাল সরবরাহে বিঘ্ন ঘটছে এবং সরকারের রাজস্ব আয়ও কমছে।

যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর ব্যবহারকারীরা জানান, বাংলাদেশমুখী আমদানি পণ্যবাহী ট্রাক সীমান্তের ওপারে পেট্রাপোল স্থলবন্দরে প্রবেশের আগে ‘বাধ্যতামূলকভাবে’ সেখানকার কালীতলা পার্কিংয়ে রাখতে হয়, যা বনগাঁ পৌরসভার অধীন। ওই পার্কিংয়ে পৌর কর্তৃপক্ষের নামে ট্রাকপ্রতি দৈনিক ৫০০ টাকা করে আদায় করা হয়। বাড়তি মাশুল আদায়ের জন্য সেখানে ১৫-২০ দিন ট্রাক আটকে রাখা হয়।

জানতে চাইলে ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক এবং স্থানীয় ক্লিয়ারিং ও ফরোয়ার্ডিং (সিঅ্যান্ডএফ) এজেন্ট মতিয়ার রহমান বলেন, ‘যেখানে প্রতিদিন পণ্যবাহী ৮০০ থেকে ৯০০ ট্রাক ছাড়া প্রয়োজন, সেখানে তারা ছাড়ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ ট্রাক। এই দুরাবস্থার কারণে আমরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। এ বিষয়ে দুই দেশের সরকার ব্যবস্থা না নিলে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে ব্যাপক ধস নামার শঙ্কা রয়েছে।’

স্থানীয় কাস্টমস ও সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের সূত্রে জানা গেছে, বেনাপোল-পেট্রাপোল স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিবছর ভারতের সঙ্গে অন্তত ২৪ হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য হয়। এর বিপরীতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সরকারের চার হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আদায় হয়।

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে আসা পণ্যবোঝাই ট্রাক পেট্রাপোল বন্দরের সেন্ট্রাল ওয়্যারহাউস করপোরেশনের টার্মিনালে ঢোকার আগে জোরপূর্বক বনগাঁ পৌরসভার কালীতলা পার্কিংয়ে অন্তত ২০ দিন আটকে রাখা হয়।এই সমস্যার সমাধান দাবি করে ব্যবসায়ীরা বলেন, ইতিমধ্যে বেশ কয়েকবার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু বন্দর কর্তৃপক্ষ প্রতিবারই ব্যর্থ হয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বেনাপোল কাস্টম হাউসের উপকমিশনার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমাদের বেনাপোল স্থলবন্দরে দৈনিক এক হাজার ট্রাক পণ্য নেওয়ার মতো সক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু সমস্যাটা হলো পেট্রাপোল বন্দরে ও কালীতলা পার্কিংয়ে। বিষয়টি সমাধানে সরকারের উচ্চপর্যায়ে অনেকবার আলোচনা হয়েছে। কিন্তু তেমন ফল হয়নি।’