৫০ বছরের অর্থনীতি: কতটা এগোল, কোথায় পিছিয়ে

৫০ বছর, এমনকি ২৫ বছর আগেও যে অনুমান ছিল, অর্থনীতির অনেক ক্ষেত্রেই তার চেয়েও ভালো করেছে বাংলাদেশ। কিন্তু পিছিয়ে আছে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের মতো গুরুত্বপূর্ণ সূচকে।

৫০ বছর পরে বাংলাদেশের অর্থনীতি কেমন হবে, তা ১৯৭১ সালে বলাটা খুবই কঠিন ছিল। মোটামুটিভাবে সবাই একমত ছিলেন যে বাংলাদেশের টিকে থাকা কঠিন হবে। তবে সে সময় বাংলাদেশকে যে বাস্কেট কেস বা তলাবিহীন ঝুড়ি বলা হতো। এর পেছনের কারণ যতটা অর্থনীতি, তার চেয়ে বেশি ছিল ভূরাজনীতি।

অর্থনীতিবাদদের মধ্যে বাংলাদেশ নিয়ে সংশয় প্রকাশকারীদের মধ্যে শীর্ষে ছিলেন নরওয়ের ইয়ুস্ট ফালান্দ। ১৯৭৬ সালে প্রকাশিত ফালান্দ ও মার্কিন অর্থনীতিবিদ জ্যাক আর পার্কিনসনের যৌথভাবে লেখা বইটির নাম ছিল বাংলাদেশ: দ্য টেস্ট কেস ফর ডেভেলপমেন্ট। এই ফালান্দ ১৯৭৩ ও ’৭৪ সালে ছিলেন বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের প্রথম আবাসিক প্রতিনিধি।

ইয়ুস্ট ফালান্দ কিছু অনুমানের ভিত্তিতে মনে করেছিলেন যে অর্থনীতির দিক থেকে বাংলাদেশ টিকে থাকতে পারবে না। যেমন বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির চেয়ে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার বেশি এবং জন্ম থেকেই দেশটি সাহায্যনির্ভর, যেখান থেকে আর বের হতে পারবে না। ইয়ুস্ট ফালান্দের সম্পাদনায় আরেকটি আলোচিত বই প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৮১ সালে, নাম ছিল এইড অ্যান্ড ইনফ্লুয়েন্স: দ্য কেস অব বাংলাদেশ। সেখানেও তিনি পরিষ্কারভাবে লিখেছিলেন, টিকে থাকতে হলে বাংলাদেশকে বহু বছর বৈদেশিক সাহায্যের ওপর নির্ভরশীল হয়ে থাকতে হবে।

পরবর্তী জীবনে ইয়ুস্ট ফালান্দ ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (আইএফপিআরআই) মহাপরিচালক এবং ইউএন কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট প্ল্যানিংয়ের চেয়ারম্যান হয়েছিলেন।

অস্টিন রবিনসনের ভাষ্য

কীর্তি ও খ্যাতির দিক থেকে ইয়ুস্ট ফালান্দের চেয়েও বড় অর্থনীতিবিদ এডওয়ার্ড অস্টিন রবিনসন। তিনি ছিলেন সামষ্টিক অর্থনীতি বা ম্যাক্রো ইকোনমির জনক জন মেনার্ড কেইনসের অন্যতম ঘনিষ্ঠ সহযোগী। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ–পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনর্গঠনের তিনি ব্রিটেনের নীতিনির্ধারকদের একজন। ১৯৫৯-৬২ সময়ে অস্টিন রবিনসন ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট। তাঁর স্ত্রী জোয়ান রবিনসনকে বলা হয় কেইনস-পরবর্তী সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনীতিবিদের একজন।

অস্টিন রবিনসন ১৯৭৩ সালে ইকোনমিক প্রসপ্রেক্টস অব বাংলাদেশ নামে একটি গবেষণাগ্রন্থ প্রকাশ করেছিলেন। এতে একটি ভালো মানের মাথাপিছু আয় অর্জন করতে বাংলাদেশের কত বছর লেগে যাবে, তার একটি হিসাবও দেন।

এই অস্টিন রবিনসন ১৯৭৩ সালে ইকোনমিক প্রসপ্রেক্টস অব বাংলাদেশ নামে একটি গবেষণাগ্রন্থ প্রকাশ করেছিলেন। তিনি তখন কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটির অর্থনীতি বিভাগের ইমেরিটাস অধ্যাপক। অস্টিন রবিনসনও বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে খুব বেশি আশাবাদী ছিলেন না। তিনি লিখেছিলেন, ‘এখন যে প্রশ্নটি বারবার করা হয়, সেটি হলো বাংলাদেশ কি টিকে থাকবে? এ প্রশ্নের উত্তর অর্থনীতিবিদদের কাছে নেই। তা ছাড়া একটি দেশও তো মরে যেতে পারে না। হয় সে গরিব দেশ হয়ে থাকবে বা স্থবির হয়ে থাকবে। এখন বড় প্রশ্ন হচ্ছে, অতীতে যে অর্থনৈতিক কাঠামো ও প্রবণতা ছিল, সেটা ধরেই কি বাংলাদেশ এগোবে, বাংলাদেশ কি গ্রহণযোগ্য প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারবে এবং দারিদ্র্য থেকে মুক্তি পাবে?’ এসব প্রশ্নের উত্তর যে অত্যন্ত কঠিন, সে কথা লিখেছিলেন তিনি। তাঁর মতে, সে সময়ের বাংলাদেশ ছিল পাঠ্যপুস্তকে লেখা ‘ম্যালথুসিয়ান স্ট্যাগনেশন’-এর সঠিক উদাহরণ। অর্থাৎ উৎপাদন যে হারে বাড়ছে, তার চেয়ে বেশি হারে বাড়ছে জনসংখ্যা। এর ফলাফল হচ্ছে—দুর্ভিক্ষ, যুদ্ধ, মৃত্যু ইত্যাদি।

অস্টিন রবিনসন প্রশ্ন তুলেছিলেন—তাহলে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ কী। তিনি লিখেছেন, ১৯৭৩ সালে মাথাপিছু আয় ছিল ৭০ ডলার। এই মাথাপিছু আয়ের বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে গরিব ১০ জন দেশের একটি। এ অবস্থায় একটি ভালো মানের মাথাপিছু আয় অর্জন করতে বাংলাদেশের কত বছর লেগে যাবে, তার একটি হিসাবও দেন অস্টিন রবিনসন। যেমন মাথাপিছু আয় একটি গ্রহণযোগ্য মানে, ৯০০ ডলারে উন্নীত করতে হলে কত বছর লাগবে বাংলাদেশের। সে সময় স্পেনের মাথাপিছু আয় ছিল ৯০০ ডলার। তিনি হিসাব দিয়ে বলেছিলেন, যদি বাংলাদেশ ২ শতাংশ হারে মাথাপিছু আয় বাড়ায়, তাহলে লাগবে ১২৫ বছর, আর ৩ শতাংশ হারে আয় বাড়লে লেগে যাবে ৯০ বছর। অস্টিন রবিনসন লিখেছিলেন, এটা সম্ভব যদি কেবল বাংলাদেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১ দশমিক ২৫ শতাংশে নামিয়ে আনতে পারে। বাংলাদেশ তা পারবে কি না, তা নিয়ে তাঁর গভীর সংশয় ছিল।

বিশ্বব্যাংকই ১৯৯৫ সালে বাংলাদেশ ২০২০: একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রেক্ষিত সমীক্ষা শিরোনামে বাংলাদেশ নিয়ে একটি গবেষণা করে। অর্থাৎ স্বাধীনতার ৫০ বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতি কোথায় যাবে—এটাই ছিল গবেষণার বিষয়বস্তু। সেখানে বিশ্বব্যাংক বলেছিল, ১৯৭১ সালে যখন বাংলাদেশ স্বাধীন হয়, তখন সাধারণ মানুষের ব্যাপক প্রত্যাশা ছিল যে রাজনৈতিক স্বাধীনতা অর্থনৈতিক মুক্তি আনবে, দারিদ্র্যের অবসান ঘটাবে, দেশ হবে সমৃদ্ধিশালী।

২৫ বছর আগের এক গবেষণা

৫০ বছর পর একটি দেশের অবস্থা কী হবে, তা হয়তো বলা কঠিন। তা ছাড়া ১৯৭২ বা ’৭৩ সালে অর্থনীতি ছিল মূলত কৃষিনির্ভর, তৈরি পোশাক খাত ছিল না, প্রবাসী আয়েরও তেমন কোনো প্রভাব ছিল না। এমনকি কৃষি খাতও ছিল সবুজ বিপ্লবের অপেক্ষায়। তবে ২৫ বছর পর বাংলাদেশ নিয়ে অনুমান করা হয়তো কিছুটা সহজ ছিল। আর এ কাজটিই করার চেষ্টা করেছিল বিশ্বব্যাংক।

বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে বিশ্বব্যাংক প্রথম রিপোর্ট প্রকাশ করেছিল ১৯৭২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর। বিশ্বব্যাংক তখন বলেছিল, ‘সবচেয়ে ভালো পরিস্থিতিতেও বাংলাদেশের উন্নয়ন সমস্যাটি অত্যন্ত জটিল।’ সেই বিশ্বব্যাংকই ১৯৯৫ সালে বাংলাদেশ ২০২০: একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রেক্ষিত সমীক্ষা শিরোনামে বাংলাদেশ নিয়ে একটি গবেষণা করে। অর্থাৎ স্বাধীনতার ৫০ বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতি কোথায় যাবে—এটাই ছিল গবেষণার বিষয়বস্তু। সেখানে বিশ্বব্যাংক বলেছিল, ১৯৭১ সালে যখন বাংলাদেশ স্বাধীন হয়, তখন সাধারণ মানুষের ব্যাপক প্রত্যাশা ছিল যে রাজনৈতিক স্বাধীনতা অর্থনৈতিক মুক্তি আনবে, দারিদ্র্যের অবসান ঘটাবে, দেশ হবে সমৃদ্ধিশালী। কিন্তু ২৫ বছর পর এখন দেখা যাচ্ছে, বেশ কিছু ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অর্জন থাকলেও হতাশার জায়গাও অনেক বেশি। দেশের অর্ধেকের বেশি মানুষ এখনো দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে, ৬০ শতাংশের বেশি মানুষ অশিক্ষিত, ২৫ বছর ধরে দেশটি গড়ে মাত্র ৪ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন করে আসছে, এতে দেশটি বিশ্বের অন্যতম দরিদ্র দেশ হিসেবেই বিবেচিত হয়ে আসছে, আর বাংলাদেশ বৈদেশিক সাহায্যের ওপর সত্যিকার অর্থেই নির্ভরশীল। প্রশ্ন হচ্ছে বাংলাদেশ কি আগামী ২৫ বছরেও একই রকম থাকবে?

বিশ্বব্যাংকের নেই গবেষণা প্রতিবেদনে বলা ছিল, ২০২০ সাল হবে বাংলাদেশের জন্য বিশেষ এক সময়। তখন বাংলাদেশের বয়স হবে ৫০ বছর। এ জন্য বাকি আছে আরও ২৫ বছর। এ সময় বাংলাদেশের প্রথম ও সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে মানবসম্পদে বিনিয়োগ বৃদ্ধি। কেননা, একটি শক্তিশালী সমাজ ও অর্থনীতি গড়তে সবার আগে প্রয়োজন শক্তিশালী মানুষ। অথচ বাংলাদেশের মানুষ, বিশেষ করে মা ও শিশুরা চরম অপুষ্টির শিকার। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) মাত্র ২ শতাংশ ব্যয় করে বাংলাদেশ। এশিয়ার গড় হচ্ছে ৩ দশমিক ৩ শতাংশ। সুতরাং মানবসম্পদে অনেক বেশি বিনিয়োগ করতে হবে। আর সামগ্রিকভাবে অগ্রগতির জন্য উন্নত শাসন প্রতিষ্ঠা করাটাও খুবই জরুরি।

গবেষণায় ২৫ বছরের মধ্যে অর্জন করতে হবে এ রকম বেশ কিছু লক্ষ্যের কথা বলা হয়েছিল সেই গবেষণায়। লক্ষ্যগুলো ছিল—দারিদ্র্যের হার দ্রুত নামিয়ে আনা, প্রবৃদ্ধির হার ৭-৮ শতাংশে উন্নীত করা, ৫ কোটি নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি, রপ্তানিপণ্য বহুমুখীকরণ, পরিবেশের কার্যকর সংরক্ষণ, ২০২০ সালের মধ্যে বার্ষিক ৮০০ কোটি ডলার প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ আনা ইত্যাদি।

বিশ্বব্যাংক ১৯৯৫ সালেই ২০২০ সালে বাংলাদেশের অর্থনীতি কেমন হবে, তার একটি ছক তৈরি করেছিল। এখন দেখা যাচ্ছে, প্রায় সব কটি লক্ষ্যই অর্জন করেছে বাংলাদেশ, কোনো কোনো ক্ষেত্রে অনেক বেশি এগিয়েও রয়েছে। তবে বেসরকারি বিনিয়োগ, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে ব্যয় বাড়ানো, নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বিদেশি বিনিয়োগ আনা—এসব ক্ষেত্রে যথেষ্ট পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। প্রবৃদ্ধি হলেও সে তুলনায় কর্মসংস্থান হয়নি, কমেনি আয়ের বৈষম্য।

৫০ বছরেও যা বদলায়নি

ইয়ুস্ট ফালান্দ বিশ্বব্যাংকে কর্মরত কেউ ছিলেন না। তারপরও ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশের অনুরোধে তাঁকে আবাসিক প্রতিনিধি করা হয়েছিল। ১৯৭৩ সালে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক মধুর থাকলেও দ্রুতই সম্পর্কে টানাপোড়েন দেখা দেয়।

সম্পর্কের টানাপোড়েন প্রকাশ্যে এসেছিল বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে ১৯৭৪ সালে করা বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন কেন্দ্র করে। সেই প্রতিবেদনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক নীতি, অর্থনীতির লক্ষ্য, মন্ত্রিসভা ও প্রশাসনের অদক্ষতা ও তীব্র দুর্নীতি নিয়ে কঠোর কিছু মন্তব্য করা হয়েছিল। বলা হয়েছিল, ‘নতুন লোকেরা প্রথমবারের মতো ক্ষমতায় এসেছেন, তাঁরা নিজেদের ধনে-মানে প্রতিশ্রুতি বৃদ্ধির উদ্দেশ্য ছাড়া অন্য কোনো উদ্দেশ্যে ক্ষমতাকে ব্যবহার করতে জানেন না। রাজনৈতিক পর্যায়ে এমন অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে যে কোনো না কোনো রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী কিংবা প্রভাবশালী ব্যক্তির বিদেশি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে কিছু টাকা জমা করে আমদানি কিংবা রপ্তানি খাতে বৈদেশিক মুদ্রার কোনো লেনদেনই প্রায় অসম্ভব। ...মোটামুটি সন্তোষজনকভাবেই কোনো কাজ সম্পন্ন করার ক্ষমতা এই সরকারের নেই।’

বাংলাদেশ: জাতি গঠনকালে এক অর্থনীতিবিদের কিছু কথা বইয়ে পরিকল্পনা কমিশনের প্রথম ভাইস চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম এ নিয়ে বিস্তারিত লিখেছেন। ২০০৭ সালে প্রকাশিত বইটিতে নুরুল ইসলাম আরও লিখেছেন, ‘এখন যদি কেউ ব্যাংকের ওই প্রতিবেদনের এবং সরকারের প্রতিক্রিয়ার কথা স্মরণ করে তাহলে মনে হবে বাংলাদেশে এ ক্ষেত্রে ৩০ বছরে তেমন কিছু বদলায়নি, আজও বাংলাদেশ এবং তার উন্নয়ন সহযোগীদের মধ্যে আলোচনার প্রধান বিষয় হচ্ছে দুর্নীতি।’

কেবল ৩০ বছর পরেই নয়, বলা যায় ৫০ বছরেও বিষয়বস্তু তেমন বদলায়নি। এখনো বাংলাদেশ নিয়ে আলোচনায় বড় স্থান দখল করে থাকে দুর্নীতি। এর সঙ্গে আছে গণতন্ত্রচর্চার ঘাটতি, আইনের শাসনের অভাব, মতপ্রকাশে বাধা, নিবর্তনমূলক নতুন নতুন আইন, জবাবদিহির অভাব, অকার্যকর সংসদ, দুর্বল প্রতিষ্ঠান, রাজনীতিকরণ, সংঘাতপূর্ণ ও পৃষ্ঠপোষকতার রাজনীতি ইত্যাদি।

শেষ কথা

বলা হয়ে থাকে, একটি গণতান্ত্রিক কাঠামো দুর্নীতি কমায়, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়ায়। আর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি টেকসই হলে তা ক্রমান্বয়ে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর উন্নতি ঘটায়। কিন্তু বাংলাদেশের ক্ষেত্রে তা দেখা যায়নি। বরং সব ধরনের ঘাটতি নিয়েই বাংলাদেশ অর্থনীতিতে বিস্ময়কর অগ্রগতি দেখিয়েছে। দুর্নীতির সঙ্গে উন্নয়নের এই সহাবস্থানের কারণেই বাংলাদেশকে এখন কেউ বলছেন, ‘সারপ্রাইজ’ বা বিস্ময়, কেউবা বলেন ‘মিস্ট্রি’ বা রহস্য অথবা প্রহেলিকা, আবার অনেকে বলেন ‘প্যারাডক্স’ বা আপাতবৈপরীত্য।

২০৪১ সালে বাংলাদেশের লক্ষ্য উন্নত দেশ হওয়া। প্রশ্ন হচ্ছে, এসব ঘাটতি নিয়ে কি কোনো দেশ প্রকৃত উন্নত দেশ হতে পারে?