২০২০ সালে এক ডলারও আয়কর দেননি ট্রাম্প-মেলানিয়া

ডোনাল্ড ট্রাম্প ও মেলানিয়া ট্রাম্প
এএফপি ফাইল ছবি।

ক্ষমতায় থাকার সময় সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আয়কর জালিয়াতি করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনকি চার বছরের জমানার শেষ বছরে ট্রাম্পের আয় হয়নি বলে রিটার্নে উল্লেখ করা হয়েছে। সে কারণে ২০২০ সালে আয়করও দেয়নি ট্রাম্প-মেলানিয়া দম্পতি।

বিবিসির এক সংবাদে বলা হয়েছে, শুধু আয়কর ফাঁকিই নয়, জমানার প্রথম দুই বছরে ডোনাল্ড ট্রাম্প আয়কর নিরীক্ষার সম্মুখীন হননি; যদিও ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টের আয়কর ফাইল পর্যালোচনার নিয়ম আছে।

টানা চার বছর আইনি লড়াই চালানোর পর ডেমোক্র্যাটরা ট্রাম্পের আয়কর নথি প্রকাশের রায় পেয়েছেন। তারপরই এসব নথি প্রকাশ করা হয়েছে। ট্রাম্পের মুখপাত্র স্টিভেন চেউং বলেছেন, নথি প্রকাশের এ ঘটনা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আর সাবেক প্রেসিডেন্টের সঙ্গে যদি এ রকম ঘটতে পারে, তাহলে সব নাগরিকের ক্ষেত্রেই কারণ ছাড়া তা ঘটতে পারে। ডেমোক্র্যাটরা বলছেন, এ ঘটনা দেখে বোঝা যায়, ট্রাম্পের ব্যবসায়িক রীতিনীতি প্রশ্নের ঊর্ধ্বে নয়।

এদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্প তৃতীয়বারের মতো মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার দৌড়ে শামিল হয়েছেন।

প্রকাশিত নথিতে দেখা যায়, ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তাঁর স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্প সেই সময় আয়কর দিয়েছেন ঠিকই, কিন্তু ট্র্রাম্পের ব্যবসায় ক্ষতি হচ্ছে দেখিয়ে তাঁরা কয়েক বছর আয়কর কমাতে পেরেছেন। এ ছাড়া নানা ধরনের কর্তনের কারণেও ট্রাম্পের আয়কর কমেছে। হোয়াইট হাউসের হাউস ওয়েজ অ্যান্ড মিনস কমিটি এই কর্তন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। এর মধ্যে ৯১ কোটি ৬০ লাখ ডলারের কর্তন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে কমিটি। তাদের অভিযোগ, ট্রাম্পের আয়কর রিটার্নে বিস্তারিত বিবরণ নেই।

নথি অনুসারে, ২০১৮ সালে ট্রাম্প-মেলানিয়া দম্পতির সমন্বিত মোট আয় ছিল ২৪ দশমিক ৩ মিলিয়ন বা ২ কোটি ৪৩ লাখ ডলার। সেবার তাঁরা প্রকৃত আয়কর পরিশোধ করেছেন ১০ লাখ ডলার। ২০১৯ সালে তাঁরা আয় দেখিয়েছেন ৪৪ লাখ ডলার এবং আয়কর পরিশোধ করেছেন ১ লাখ ৩৪ হাজার ডলার। এই দুই বছর তাঁরা আয় দেখিয়েছেন, কিন্তু ২০১৭ সালে তাঁরা দেখিয়েছেন, সেবার ক্ষতি হয়েছে ১ কোটি ২৯ লাখ ডলার। সে বছর তাঁরা আয়কর দিয়েছেন মাত্র ৭৫০ ডলার। ২০২০ সালে তাঁরা এক ডলারও আয়কর দেননি।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুসারে, দেশটির প্রেসিডেন্টরা আয়কর নথি প্রকাশ করতে বাধ্য নন, কিন্তু রীতি হচ্ছে, মার্কিন প্রেসিডেন্টরা বছরের পর বছর ধরে নিজে থেকেই এটা করে আসছেন। আইনবিজ্ঞানের ভাষ্য অনুযায়ী, দীর্ঘদিনের চর্চিত রীতি কখনো কখনো আইনের মর্যাদা পেয়ে থাকে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প কখনোই আয়কর নথি প্রকাশ করতে চাননি। আর সে কারণেই এ নিয়ে আইনি লড়াই শুরু হয়। শেষমেশ গত মাসে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট ট্রাম্পের বিরুদ্ধে রায় দেয়।

তবে এখনো ট্রাম্পের আয়কর রিটার্নের পূর্ণাঙ্গ নথি প্রকাশ করা হয়নি। নিকট ভবিষ্যতে রিটার্নের সম্পাদিত ভাষ্য প্রকাশ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।