ডাক্তারদের আয়কর রিটার্ন দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে বিএমডিসি

ডাক্তারপ্রতীকী ছবি

সাধারণ চিকিৎসক ও দন্ত চিকিৎসকদের বার্ষিক আয়কর রিটার্ন দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি)। পেশাজীবী সংগঠনের সদস্যপদ পেতে ও নবায়ন করতে রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র লাগে। এ জন্য মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিলের পক্ষ থেকে সদস্যদের এই শর্ত পরিপালনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. লিয়াকত হোসেন সম্প্রতি রিটার্ন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে নোটিশ জারি করেছেন। এর আগে অবশ্য গত ২৪ সেপ্টেম্বর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে পেশাজীবী সংগঠনের সদস্যদের রিটার্ন জমা বাধ্যতামূলক থাকার বিষয়টি অবহিত করা হয়। এর পাশাপাশি রিটার্ন জমার বিষয়টি নিশ্চিত করতে বলা হয়।

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের নোটিশে বলা হয়, মেডিকেল ও ডেন্টাল চিকিৎসক হিসেবে চূড়ান্ত নিবন্ধন প্রাপ্তির জন্য বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলে আবেদনকারী এবং ইতিমধ্যে মেডিকেল ও ডেন্টাল চিকিৎসক হিসেবে নিবন্ধনপ্রাপ্ত সবাইকে ৩১ জানুয়ারির মধ্যে রিটার্ন দাখিলের প্রমাণপত্র জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর ই-টিআইএন সনদ ও আয়কর রিটার্ন দাখিলের প্রমাণ বিএমডিসির নির্দিষ্ট অনলাইন সিস্টেমে আপলোড করার কথাও বলা হয়েছে ওই নির্দেশনায়।

সারা দেশে বর্তমানে এক লাখের মতো চিকিৎসক আছেন, যাঁদের বেশির ভাগই শহরাঞ্চলে বাস করেন।

বাংলাদেশে চিকিৎসক পরিবারের আয় সবচেয়ে বেশি বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। বিবিএসের সর্বশেষ খানা আয় ও ব্যয় জরিপের তথ্যানুযায়ী, চিকিৎসক পরিবারের সদস্যদের মাসিক মাথাপিছু আয় সবচেয়ে বেশি। কোনো পরিবারের প্রধান একজন পুরুষ ডাক্তার হলে ওই পরিবারের সদস্যদের মাসিক মাথাপিছু গড় আয় হয় ৪৬ হাজার ৯৩৮ টাকা। পরিবারের প্রধান একজন নারী ডাক্তার হলে সদস্যদের গড় আয় আরেকটু বেশি। সে ক্ষেত্রে পরিবারের সদস্যদের গড় আয় হয় ৪৮ হাজার ৪৮৪ টাকা।

বর্তমানে ৪৩ ধরনের সরকারি–বেসরকারি সেবা গ্রহণ করার ক্ষেত্রে রিটার্ন জমা বাধ্যতামূলক। এর মধ্যে একটি হলো পেশাজীবী সংগঠনের সদস্যপদ গ্রহণ ও নবায়নের ক্ষেত্রে রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র লাগে। এই পেশাজীবীদের মধ্যে আছেন চিকিৎসক, প্রকৌশলী, স্থপতি, আইনজীবী ইত্যাদি।

দুই মাস সময় বাড়ানোর পর ৩১ জানুয়ারির মধ্যে ব্যক্তিশ্রেণির রিটার্ন জমার শেষ দিন। এ সময়ের মধ্যে রিটার্ন জমা না দিলে করের পরিমাণ বাড়বে, আবার জরিমানাও দিতে হবে।

যেসব সেবায় রিটার্ন জমা বাধ্যতামূলক, সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো—নির্দিষ্ট ব্যক্তি কর্তৃক সিটি করপোরেশন এলাকায় বাড়িভাড়া বা লিজ গ্রহণের সময় বাড়ির মালিকের; নির্দিষ্ট ব্যক্তি কর্তৃক সেবা বা পণ্য গ্রহণকালে ওই পণ্য বা সেবা সরবরাহকারীর; ট্রাস্ট, তহবিল, ফাউন্ডেশন, এনজিও, ক্ষুদ্রঋণ বিতরণকারী সংস্থা, সোসাইটি ও সমবায় সমিতির ব্যাংক হিসাব খুলতে ও চালু রাখতে; অভিজাত ক্লাবের সদস্য হলে; স্ট্যাম্প, কোর্ট ফি ও কার্টিজ পেপারে ভেন্ডর বা দলিল লেখক হিসেবে নিবন্ধন, লাইসেন্স বা তালিকাভুক্তি করতে বা বহাল রাখতে; রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বা সরকার কর্তৃক বিভিন্ন সময়ে এমন গঠিত কর্তৃপক্ষ বা অন্য সিটি করপোরেশন, পৌরসভায় অনুমোদনের জন্য ভবন নকশার আবেদন দাখিলকালে।