সবজির চড়া দামে নাকাল ক্রেতা

বাজারে প্রাণিজ আমিষ মাছ, মাংস ও ডিমের দাম আগে থেকেই বেশি। উচ্চ মূল্যে স্থিতিশীল হয়ে আছে চাল, ডাল, আটা, ময়দা, চিনি ও ভোজ্যতেলের মতো নিত্যপণ্যের দাম। এর মধ্যে সরবরাহের ঘাটতিতে সবজির দামও চড়া। খুচরায় অধিকাংশ সবজির দাম কেজি ১০০ টাকার আশপাশে। কয়েকটি সবজির দাম শতক ছাড়িয়েছে। দ্বিশতকের খাতাতেও নাম লিখিয়েছে দু-একটি সবজি। এতে সাধারণ মানুষের চাপ আরও বেড়েছে।

সবজি কম আসার ফলে দাম বেড়েছে। কয়েক বছরের মধ্যে সবজির এত দাম দেখা যায়নি।
পলাশী কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা মো. মামুন

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর মগবাজার, পলাশী, নিউমার্কেট ও কাঁঠালবাগান ঘুরে ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাজারে আলু বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা কেজি। সাধারণ মানের বেগুনের কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকা। ভালো মানের গোল কালো রঙের বেগুনের কেজি ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা। টমেটো ও গাজরের কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকা। বরবটি ১০০ থেকে ১১০ টাকা। আর শিমের কেজি পড়ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকা।

আরও পড়ুন

পলাশী কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা মো. মামুন প্রথম আলোকে বলেন, সবজি কম আসার ফলে দাম বেড়েছে। কয়েক বছরের মধ্যে সবজির এত দাম দেখা যায়নি।

বাজারে করলা, ধুন্দুল, ঝিঙে, কাঁকরোল, কচুমুখীর দাম হাঁকানো হচ্ছে কেজি ৯০ থেকে ১০০ টাকা। দরদাম করে নিলে একটু কম পাওয়া যাচ্ছে। ভালো মানের একটি লাউ ৮০ থেকে ১০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। কচুর লতি ও চিচিঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকার আশপাশে। ৮০ টাকার নিচে আছে হাতে গোনা কয়েকটি সবজি। পটোল ও ঢ্যাঁড়স বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি। মুলার কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা। আর বাজারে সস্তার সবজি হিসেবে পরিচিত পেঁপেও বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি। দেশি পেঁয়াজের কেজি ১০০ টাকা। আমদানি করা পেঁয়াজের কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকা। কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি।

আরও পড়ুন

সবজির দাম নেমে আসতে আরও কিছুটা সময় লাগবে উল্লেখ করে বাংলাদেশ কাঁচামাল আড়ত মালিক সমিতির সভাপতি মো. ইমরান মাস্টার প্রথম আলোকে বলেন, বৈরী আবহাওয়ায় শীতের আগাম সবজি নষ্ট হওয়ায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। নতুন সবজি আসার আগে দাম আর কমবে বলে মনে হচ্ছে না।

এদিকে ফার্মের মুরগির বাদামি ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা। ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা কেজি। সোনালি মুরগির দাম রাখা হচ্ছে ৩১০ থেকে ৩৩০ টাকা। গরুর মাংস ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা, আর খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা কেজি। রুই মাছের কেজি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা। আর পাঙাশ ও তেলাপিয়ার দাম ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। চাল, ডাল, আটা, ময়দা, চিনি ও ভোজ্যতেলের মতো নিত্যপণ্য উচ্চ মূল্যে স্থিতিশীল রয়েছে।

বৈরী আবহাওয়ায় শীতের আগাম সবজি নষ্ট হওয়ায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। নতুন সবজি আসার আগে দাম আর কমবে বলে মনে হচ্ছে না।
বাংলাদেশ কাঁচামাল আড়ত মালিক সমিতির সভাপতি মো. ইমরান মাস্টার

রাজধানীর মধুবাগের গৃহিণী আমেনা বেগম মগবাজার কাঁচাবাজারে সবজি কিনতে এসে ৬০ টাকায় দুই আঁটি লালশাক কিনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘সব সবজির দাম বেশি। এ জন্য শাক নিলাম। শাকের দামও বেড়েছে।’