কনটেইনার ডিপোর ব্যবসা কমে গেছে

চট্টগ্রাম বন্দর দিয়েই দেশের সিংগভাগ আমদানি–রপ্তানি কার্যক্রম পরিচালিত হয়ফাইল ছবি: প্রথম আলো

ডলার সংকটে পণ্য আমদানিতে ভাটা চলছে। রপ্তানিও খুব বেশি বাড়ছে না। তাতে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি পণ্য ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত বেসরকারি কনটেইনার ডিপোগুলোর ব্যবসাও খারাপ। সদ্যবিদায়ী বছরে ডিপোর ব্যবসা আগের বছরের চেয়ে প্রায় ১১ শতাংশ কমেছে।

রপ্তানি পণ্যের ৯০ শতাংশ চট্টগ্রামের কনটেইনার ডিপোগুলোর মাধ্যমে ব্যবস্থাপনা করা হয়। সারা দেশের কারখানা থেকে পণ্য এনে ডিপোতে থাকা খালি কনটেইনারে ভর্তি করে পরে তা জাহাজে তুলে দেওয়া হয়। রপ্তানি পণ্য ব্যবস্থাপনা ব্যবসায় ভাটার অর্থ হলো—বিদায়ী বছরে দেশের রপ্তানি খাত ভালো করেনি।

রপ্তানি ছাড়াও ৩৮ ধরনের আমদানি পণ্যবাহী কনটেইনার চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ডিপোতে এনে খালাস করতে হয়। খালি কনটেইনারও সংরক্ষণ করে ডিপোগুলো। এসব সেবার বিনিময়ে কনটেইনারপ্রতি নির্ধারিত মাশুল আদায় করে ডিপোগুলো। আমদানি-রপ্তানি কনটেইনার পরিবহন কমে গেলে ডিপোর মাশুল আদায় কমে যায়।

জানতে চাইলে কনটেইনার ডিপো সমিতির সভাপতি নুরূল কাইয়ূম খান প্রথম আলোকে বলেন, বিদায়ী বছরে ডিপোতে কনটেইনার ব্যবস্থাপনার সংখ্যা কমেছে। খরচও বেড়ে গেছে। সব মিলিয়ে ডিপোর ব্যবসায় এখন মন্দা চলছে।

কনটেইনার ডিপো সমিতির হিসাবও এ ব্যবসায় নিয়োজিত ১৯টি ডিপোর মধ্যে দুটি এখনো আমদানি-রপ্তানি পণ্য ব্যবস্থাপনা শুরু করেনি। বাকি ১৭টি ডিপোর মধ্যে তিনটির ব্যবসা বেড়েছে। বাকি ১৪টির ব্যবসা কমেছে। এই তালিকায় রয়েছে শীর্ষ পাঁচটি কনটেইনার ডিপোও।

কনটেইনার ডিপো সমিতির হিসাবে ২০২৩ সালে ডিপোগুলোতে আমদানি-রপ্তানি পণ্যবাহী ৮ লাখ ৭৭ হাজার একক কনটেইনার ব্যবস্থাপনা হয়েছে। ২০২২ সালে এই সংখ্যা ছিল ৯ লাখ ৮৩ হাজার। তাতে এক বছরের ব্যবধানে ব্যবসা কমেছে প্রায় ১১ শতাংশ। সবচেয়ে বেশি কমেছে রপ্তানি পণ্য ব্যবস্থাপনায়। রপ্তানির চেয়ে আমদানি কমার হার কিছুটা কম।

কমেছে ১৪টির, বেড়েছে তিনটির

চার বছর আগে চট্টগ্রামের কাট্টলিতে চালু হওয়া ‘ইস্পাহানি-সামিট অ্যালায়েন্স টার্মিনাল’ গত বছর ভালো ব্যবসা করেছে। ব্যবসা ভালো করা বাকি দুটি ডিপো হলো ভারটেক্স অফডক লজিস্টিকস সার্ভিস ও ইস্টার্ন লজিস্টিকস। এই তিনটি ডিপোর আমদানি-রপ্তানি কনটেইনারের সংখ্যা প্রায় ১১ শতাংশ বেড়েছে। যদিও মোট কনটেইনার পরিবহনে তিনটি ডিপোর অংশীদারি ১৪ শতাংশ। এই তিনটি ছাড়া সব কটির কনটেইনার পরিবহন কমেছে।

ব্যবসা কমলেও শীর্ষে কেডিএস

২০২২ সালের তুলনায় ব্যবসা কমলেও ডিপোর ব্যবসায় শীর্ষে রয়েছে কেডিএস লজিস্টিক। ২০২২ সালের তুলনায় বিদায়ী বছরে কনটেইনার ব্যবস্থাপনা সংখ্যার দিক থেকে প্রায় ৯ শতাংশ কমেছে এই ডিপোর। এরপরও ১ লাখ ৪৪ হাজার কনটেইনার ব্যবস্থাপনা করে শীর্ষে রয়েছে ডিপোটি।

কনটেইনার ব্যবস্থাপনায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে পোর্টলিংক লজিস্টিক। এই ডিপো বিদায়ী বছরে ১ লাখ ৩৪ হাজার কনটেইনার ব্যবস্থাপনা করেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ১৪ শতাংশ কম। এ ছাড়া ৮ শতাংশ ব্যবসা কমলেও তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট (পূর্ব ও পশ্চিম)। বিদায়ী বছরে তারা এক লাখ দুই হাজার কনটেইনার ব্যবস্থাপনা করেছে।