দুবাই খাদ্যপণ্য মেলায় ভালো সাড়া পাচ্ছে বাংলাদেশি স্টলগুলো

সংযুক্ত আরব আমিরাতের অন্যতম প্রধান শহর দুবাইয়ে গালফ ফুড ফেয়ারে অংশ নেওয়া বাংলাদেশি খাদ্যপণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আমদানিকারক ও ক্রেতাদের কাছ থেকে খুব ভালো সাড়া পাচ্ছে বলে এসব কোম্পানির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

পাঁচ দিনের এই খাদ্যপণ্য মেলা শেষ হবে আগামীকাল শুক্রবার। গত কয়েক দিন মেলা ঘুরে দেখা গেছে, আগ্রহী ক্রেতাদের অনেকেই বাংলাদেশি কোম্পানিগুলোর স্টল পরিদর্শন করছেন। এসব প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা আগ্রহী ক্রেতাদের কাছে বিভিন্ন পণ্য সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা করছেন। কোনো কোনো ক্রেতা তাৎক্ষণিক কার্যাদেশও দিচ্ছেন।

গত বছরের তুলনায় তিন গুণ বেশি সাড়া পাওয়া যাচ্ছে, জানালেন প্রাণ গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক (রপ্তানি) মিজানুর রহমান। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, তাঁর কোম্পানি দেশ ও অঞ্চলভিত্তিক পৃথক পৃথক ক্রেতার খোঁজ করছে এবং দুবাইয়ের এই মেলা তাঁদের এসব ক্রেতা খুঁজতে দারুণভাবে সহায়তা করছে। ফলে আগামী দিনে রপ্তানি আরও বাড়বে এবং আরও বেশি দেশে পৌঁছে যাবে প্রাণের পণ্য।

প্রাণ হলো সেই ৩৯টি বাংলাদেশি কোম্পানির একটি, যারা এই আন্তর্জাতিক মেলায় অংশ নিচ্ছে। বাংলাদেশ ছাড়াও দুবাইয়ের গালফ ফুড ফেয়ারের এই ২৭তম আসরে অংশ নিচ্ছে আরও ১১৯টি দেশের ৫ হাজারের বেশি প্রতিষ্ঠান, যারা খাদ্য উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বিপণনের সঙ্গে যুক্ত।

বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে প্রাণ গ্রুপের তিন প্রতিষ্ঠান প্রাণ ডেইরি, প্রাণ অ্যাগ্রো ও অ্যাগ্রিকালচারাল মার্কেটিং; আকিজ গ্রুপের দুই প্রতিষ্ঠান আকিজ বেকার্স ও আকিজ এফএমসিজি; সিটি গ্রুপের দুই প্রতিষ্ঠান সিটি অটো রাইস অ্যান্ড ডাল ও রূপসী ফুডস এবং মেঘনা গ্রুপের দুই প্রতিষ্ঠান তানভীর ফুডস ও মেঘনা বেভারেজ নয়টি স্টল নিয়ে মেলায় অংশ নিয়েছে।

মেলায় অংশ নেওয়া অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো হলো গ্লোব সফট ড্রিংকস, এএসটি বেভারেজ, এলিন ফুডস, লিলি অ্যাগ্রো, হিফস অ্যাগ্রো, এসিআই ফুডস, বেঙ্গল মিট, কাজী ফুড, মাসুদ অ্যাগ্রো, ইফাদ, বসুন্ধরা ফুডস, বোম্বে, ড্যানিশ, আহমেদ ফুডস, স্টার লাইন, ফারহানা অ্যাগ্রো, জিসান ফুড, আরিফ অ্যাগ্রো, হালদা ভ্যালি, দেশবন্ধু ফুড, রংপুর ডেইরি, হক ফুড, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, বনফুল, কিশওয়ান স্ন্যাকস, টিকে ফুড, ফেভারিটা লিমিটেড, থাই ফুড, অভিজিত ফুড এবং এস অ্যান্ড বি নাইস ফুডস।

টিকে গ্রুপের পরিচালক মোফাসসেল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা এক বছর হলো চকলেট, চানাচুরসহ ২১ রকমের পণ্য উৎপাদন করছি। আশা করছি, এই মেলার মাধ্যমে বিভিন্ন দেশে আমাদের পণ্য ছড়িয়ে পড়বে। মেলায় আমাদের পণ্যের ভালো সাড়া মিলছে।’

মেলায় প্রচলিত পণ্যের পাশাপাশি নতুন পণ্যও তুলে ধরেছে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠানগুলো। হিফস অ্যাগ্রোর স্টলে কথা হয় অস্ট্রেলিয়ার ক্রেতা টেভর মার্টসের সঙ্গে। তিনি জানান, দীর্ঘদিন ধরে তিনি বাংলাদেশ থেকে খাদ্যপণ্য ক্রয় করছেন। আরও ক্রয়ের আদেশ দেবেন বলেও তিনি জানান।

হিফস অ্যাগ্রোর প্রধান নির্বাহী সৈয়দ মুহাম্মদ শোয়েব হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, মেলায় নতুন নতুন ক্রেতার সঙ্গে দেখা হচ্ছে। তাঁদের অনেকেই পণ্য ক্রয়ের আদেশ দিচ্ছেন, বিশেষ করে নতুন পণ্য।

থাই ফুডের বাংলাদেশি পরিবেশক ইন্টারন্যাশনাল ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি বাংলাদেশের ই-কমার্স ও নিউ বিজনেস–বিষয়ক ব্যবস্থাপক ইফতেখার ইসলাম দস্তগীর প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা ছোট আকারে পণ্য রপ্তানি করছি। মেলায় এসে নতুন নতুন আমদানিকারকের সঙ্গে কথা হচ্ছে। এতে রপ্তানি আদেশ বাড়বে বলে আমরা আশা করছি।’