অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি নিয়ে জাপানের সঙ্গে দর-কষাকষি শুরুর ঘোষণা

জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি (ইপিএ) করার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম। বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরির সঙ্গে আজ মঙ্গলবার ঢাকায় সচিবালয়ে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ ঘোষণা দেন। জাপানের সঙ্গে ইপিএ সই হলে আগামী ২০২৬ সালে উন্নয়নশীল দেশ হয়ে যাওয়ার পরও দেশটির বাজারে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাওয়া যাবে।  

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, জাপানের সঙ্গে ইপিএ নিয়ে যৌথ সমীক্ষা পরিচালনা করা হয়েছে আগেই। গত বছরের এপ্রিল, জুলাই ও সেপ্টেম্বরে তিন দফা বৈঠক হয়। বৈঠকগুলোতে ১৭টি খাত চিহ্নিত করা হয়। পরে গত ডিসেম্বরে যৌথ সমীক্ষা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়, যা উভয় সরকার অনুমোদন করে। ট্রেড নেগোসিয়েশন কমিটি (টিএনসি) এখন বৈঠক করে দর-কষাকষির কাজ শুরু করবে।

সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ এখন যেসব শুল্কমুক্ত সুবিধা পেয়ে থাকে, সেগুলো স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের পর উঠে যাবে। তখন অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তির (ইপিএ) দরকার পড়বে। জাপানের সঙ্গে তাই ইপিএ করার ব্যাপারে দর-কষাকষিটা শুরু করা হচ্ছে।

বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, এলডিসি হিসেবে উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশে পণ্য রপ্তানিকালে শুল্কমুক্ত-কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা পায় বাংলাদেশ, ২০২৬ সালের পর তা হারাতে হবে। তখন ১৮ শতাংশ হারে শুল্ক দিতে হবে বাংলাদেশকে। তা যাতে না দিয়ে আরও কম দেওয়া যায়, সেটাই হচ্ছে জাপানের সঙ্গে ইপিএর মূল উদ্দেশ্য। বাংলাদেশের জন্য এ চুক্তি করার সবচেয়ে সম্ভাবনাময় দেশ জাপান।

জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি বলেন, শুল্ক কমানোর মাধ্যমে বাণিজ্যের প্রসারই ঘটাবে না ইপিএ, ব্যবসায়িক পরিবেশের উন্নতিও ঘটাবে। এ ছাড়া বিনিয়োগ আকর্ষণের পাশাপাশি বাংলাদেশের পণ্যের বহুমুখীকরণে ভূমিকা রাখবে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, জাপান বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ এবং বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক অংশীদার। গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে জাপান থেকে বাংলাদেশ ২০৩ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য আমদানি করেছে। একই অর্থবছরে দেশটিতে ১৯০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ।