‘নগদ ফাইন্যান্স পিএলসি’ নামে নতুন আরেকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন প্রতিষ্ঠানটির নামে ব্যবসার সনদ বা লাইসেন্স ইস্যু করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সনদ পাওয়ার পর নগদ ফাইন্যান্স তাদের কার্যক্রম শুরু করতে পারবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় গতকাল রোববার প্রতিষ্ঠানটির সনদের বিষয়টি অনুমোদন করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। গভর্নর হিসেবে তিনি যোগদানের পরই প্রতিষ্ঠানটিকে প্রাথমিক অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক প্রথম আলোকে বলেন, নগদ ফাইন্যান্সকে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এখন প্রতিষ্ঠানটির নামে সনদ ইস্যু করা হবে। এর ফলে কার্যক্রম শুরু করতে পারবে প্রতিষ্ঠানটি।
জানা গেছে, এমএফএস প্রতিষ্ঠান নগদের মালিকানার সঙ্গে যুক্ত হবে নতুন অনুমোদন পাওয়া নগদ ফাইন্যান্স। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, এ জন্য অনুমোদন নিতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমোদন দিলেই এটি সম্ভব।
বাংলাদেশ ব্যাংকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, নগদ ফাইন্যান্সের প্রস্তাবিত চেয়ারম্যান হিসেবে রয়েছেন মো. ফরিদ খান। তিনি বিদ্যুৎ খাতের কোম্পানি সামিট গ্রুপের পরিচালক ও যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের হোয়াইটপাইন ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজমেন্টের চেয়ারম্যান। আর পরিচালক হিসেবে রয়েছে সামিট পরিবারের সদস্য ফারহান করিম খান। এর বাইরে নগদ ফাইন্যান্সের পরিচালক হিসেবে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রযুক্তিনির্ভর আর্থিক সেবা (ফিনটেক) হোমপের প্রতিষ্ঠাতা ড্যান পার্কার ও প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা হাসিব হাসান তরফদার। তাঁরা দুজনই জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাইকারী সেবা ‘পরিচয়’-এর ক্রিয়েটর (যাঁরা তৈরি করেছেন)।
এ ছাড়া নগদ ফাইন্যান্সের পরিচালক হিসেবে আরও রয়েছেন তানভীর আহমেদ। যিনি বর্তমানে এমএফএস প্রতিষ্ঠান নগদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি)। এর বাইরে নকিব চৌধুরী ও মো. আমিনুল হকের নামও রয়েছে পরিচালকের তালিকায়। আর প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে নাম প্রস্তাব করা হয়েছে রাহেল আহমেদের। তিনি আগে এমএফএস প্রতিষ্ঠান নগদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বা সিইও ছিলেন।
এদিকে গত সপ্তাহে প্রথম আলোর সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে এমএফএস প্রতিষ্ঠান নগদের এমডি তানভীর আহমেদ বলেছেন, নগদ ফাইন্যান্স অনুমোদন পাওয়ার পর সেটি এমএফএস প্রতিষ্ঠান নগদের মালিকানার সঙ্গে যুক্ত হবে। এরপর ক্ষুদ্রঋণ প্রদান, আমানত সংগ্রহসহ নতুন ধরনের বেশ কিছু সেবা চালু করবে নগদ।
নগদ ফাইন্যান্সের অনুমোদনের পর দেশে এখন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা দাঁড়াল ৩৬টি। এর মধ্যে ২টি সরকারি। ২১টির উদ্যোক্তা বেসরকারি খাতের ব্যবসায়ীরা। আর ১৩টি গড়ে উঠেছে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগে। তবে দেশে এখনো কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এমএফএস সেবা নেই, ফলে নগদই হবে প্রথম এমএফএস সেবাযুক্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠান।
আর্থিক প্রতিষ্ঠানও ব্যাংকের মতো মেয়াদি আমানত নিতে পারে, যা কমপক্ষে তিন মাস মেয়াদি হতে হয়। ব্যাংকের মতো আর্থিক প্রতিষ্ঠানও ঋণ দিতে পারে। তবে কোনো চেক ইস্যু করতে পারে না।