বেআইনি বিমা হচ্ছে সরকারি সম্পত্তির

বিমা করপোরেশন আইন অনুযায়ী যেকোনো সরকারি সম্পত্তির বিমা দায় গ্রহণের এখতিয়ার সরকারি সংস্থা সাধারণ বীমা করপোরেশনের (এসবিসি)। কিন্তু তা মানছে না বেশ কিছু বেসরকারি নন লাইফ বিমা কোম্পানি। না মেনে তারা নিজেরাও সরকারি খাতের বিমা পলিসি খুলছে। এতে পুরো বিমাশিল্পে বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে।

এসব কথা বছরের পর বছর ধরে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগকে চিঠি দিয়েও কোনো রকম ফায়দা মেলেনি। কারণ, বেসরকারি নন লাইফ বিমা কোম্পানিগুলো সে একই কাজ করে চলেছে। তাই এসবিসি এবার বেসরকারি নন লাইফ বিমা কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করছে।

বিমা কোম্পানির মালিকদের সমিতি বাংলাদেশ ইনস্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনকে (বিআইএ) সম্প্রতি চিঠি দিয়ে এসবিসি বলেছে, বেআইনিভাবে সরকারি খাতের বিমা পলিসি করলে বেসরকারি নন লাইফ বিমা কোম্পানিগুলোর বার্ষিক ক্লিয়ারেন্স সনদ স্থগিত করা হবে। একই চিঠি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগকেও পাঠিয়েছে এসবিসি।

চিঠিতে বলা হয়েছে, বিমা করপোরেশন আইন ২০১৯–এর ১৬ ধারা অনুযায়ী কোনো সরকারি সম্পত্তি অথবা সরকারি সম্পত্তি সংশ্লিষ্ট কোনো ঝুঁকি বা দায়–সম্পর্কিত সব ধরনের নন-লাইফ বিমা ব্যবসার ১০০ শতাংশই করে এসবিসি। ওই ১০০ শতাংশ থেকে ৫০ শতাংশ নিজের কাছে রেখে বাকি ৫০ শতাংশ সব বেসরকারি নন-লাইফ বিমা কোম্পানির মধ্যে সমহারে বণ্টন করে দেওয়া হয়।

কিছু বিমা কোম্পানি আইন লঙ্ঘন করে নিজেরাই সরকারি সম্পত্তির বিমা পলিসি গ্রহণ করছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়। এতে বলা হয়, কিছু কোম্পানির এ ধরনের বেআইনি ব্যবসার কারণে সবারই প্রিমিয়াম আয় কমে যায়। এতে বিমাশিল্পে বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে।

যেকোনো ধরনের স্থাবর অথবা অস্থাবর সম্পত্তি যা সরকারের সরাসরি নিয়ন্ত্রণে কিংবা সংরক্ষণে আছে এবং যার রক্ষণাবেক্ষণে আইনগত দায়িত্ব সরকারের, সেগুলোই হচ্ছে সরকারি সম্পত্তি। এ ছাড়া সরকার বা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণে থাকা কোনো কোম্পানি, খামার, প্রতিষ্ঠান, সংগঠন, উদ্যোগ বা অন্য কোনো স্থাপনা, যেগুলোতে সরকার বা সরকারের নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনা আছে বা আর্থিক সংশ্লেষ আছে, সেগুলোও সরকারি সম্পত্তি।

বিআইএর প্রথম সহসভাপতি নাসির উদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, এসবিসির এ চাওয়া পূরণে বিআইএ সব সময়ই সচেতন। আর খুব বেশি কোম্পানি যে এ ধরনের কাজে লিপ্ত, তা নয়। তারপরও ইচ্ছাকৃত, ভুলবশত বা অনিচ্ছাকৃতভাবে যারা এ ধরনের কাজে জড়িয়ে গেছে, তাদের বিরুদ্ধে বিআইএ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।

বর্তমানে দেশে ৪৭ টি নন লাইফ বা সাধারণ বিমা কোম্পানি আছে। এসব কোম্পানির কাছে সাধারণ বীমা করপোরেশনের বিমা প্রিমিয়াম বাবদ পাওনা রয়েছে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা।