চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারে খরচ বাড়ছে, কোন পণ্যে দাম কত বাড়তে পারে

ব্যবহারকারীদের আপত্তি উপেক্ষা করে আগামী মঙ্গলবার রাত ১২টার পর থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের নতুন বাড়তি মাশুল কার্যকর হচ্ছে। প্রায় ৪১ শতাংশ হারে বাড়ানো হয়েছে নতুন মাশুল। বিভিন্ন সমীক্ষা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, নতুন মাশুল কার্যকরের পর এ অঞ্চলে ব্যয়বহুল বন্দরে পরিণত হবে চট্টগ্রাম বন্দর।

বিদেশিদের হাতে কনটেইনার ওঠানো–নামানোর চারটি বড় টার্মিনাল ছেড়ে দেওয়ার আগমুহূর্তে মাশুল বাড়ানোর পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। বন্দর মাশুলের বড় অংশই সরাসরি আদায় করবে বিদেশিরা। বিদেশিদের হাতে ছেড়ে দেওয়া প্রকল্পের ট্রানজেকশন অ্যাডভাইজার বিশ্বব্যাংক গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশনও (আইএফসি) গত এপ্রিলে তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, বিদ্যমান ট্যারিফ কাঠামো বেসরকারি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য যথেষ্ট নয়। মূলত এরপরই বন্দর মাশুল বাড়ানোর গতি পায়, যা আগামী মঙ্গলবার কার্যকর হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বন্দর মাশুল বাড়ানোর কারণে গাণিতিক হারে খরচ বাড়তে থাকবে। কারণ, বন্দরের বাড়তি খরচ তুলে নিতে শিপিং কোম্পানিগুলো ধাপে ধাপে খরচ বাড়াতে শুরু করেছে। ব্যবসায়ীরাও বাড়তি খরচ তুলে নেবেন।

বিদেশিদের হাতে কনটেইনার ওঠানো–নামানোর চারটি বড় টার্মিনাল ছেড়ে দেওয়ার আগমুহূর্তে মাশুল বাড়ানোর পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। বন্দর মাশুলের বড় অংশই সরাসরি আদায় করবে বিদেশিরা।

অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ প্রথম আলোকে বলেন, বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য নয়, বিদেশি কোম্পানিকে সুবিধা দিতেই মাশুল বাড়ানো হচ্ছে। আর এটা করা হচ্ছে ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশনসহ বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর পরামর্শেই। বন্দরের মাশুল বৃদ্ধি দেশের অর্থনীতিকে বহুভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত করবে। পণ্য আমদানিতে খরচ বাড়বে, যার বোঝা বহন করবে ভোক্তারা। এতে মূল্যস্ফীতি বাড়বে।

ব্যবসায়ী ও ব্যবহারকারীদের আপত্তির মধ্যেই গত ১৪ সেপ্টেম্বর বন্দরের নতুন মাশুলের গেজেট প্রকাশ করা হয়। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, আগের তুলনায় গড়ে ৪১ শতাংশ মাশুল বাড়ানো হয়েছে। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে কনটেইনার পরিবহনের মাশুল। ২০২৩–২৪ অর্থবছরের নিরীক্ষিত হিসাব পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, গড়ে প্রতিটি কনটেইনারে (২০ ফুট লম্বা) বাড়তি মাশুল ধরা হয়েছে প্রায় ৩৯ ডলার (৪ হাজার ৩৯৫ টাকা)। এই মাশুলের বড় অংশ আদায় করা হবে শিপিং লাইন থেকে। একাংশ পরিশোধ করবে আমদানিকারক ও রপ্তানিকারকেরা। শিপিং লাইন বন্দরের বাড়তি খরচ তুলে নেবে আমদানিকারক–রপ্তানিকারকের কাছ থেকে। আমদানিকারক ও রপ্তানিকারক বাড়তি খরচ পণ্যের দামে যুক্ত করবে।

বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য নয়, বিদেশি কোম্পানিকে সুবিধা দিতেই মাশুল বাড়ানো হচ্ছে। আর এটা করা হচ্ছে ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশনসহ বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর পরামর্শেই।
অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ

বন্দর কর্তৃপক্ষ এখন যে হারে মাশুল বাড়িয়েছে তাতে খরচ কত বাড়বে, তার হিসাব করা হয়েছে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে। ২০২৩–২৪ অর্থবছরে বন্দরের নিরীক্ষিত হিসাব পর্যালোচনা করে দেখা যায়, প্রতি একক কনটেইনারে সব মাশুল মিলে খরচ বাড়বে ৪ হাজার ৩৯৫ টাকা। ওই অর্থবছরের ডলারের বিনিময়মূল্য ধরে দাঁড়ায় ৩৯ ডলার। তবে প্রতিটি বক্স কনটেইনারে এই বন্দর মাশুলের বাড়তি খরচ দাঁড়াবে কমবেশি ৬০ ডলার।

মাশুল বাড়ানো নিয়ে সরকারের ভাষ্য হলো, ১৯৮৬ সালের পর বন্দরের মাশুল সে অর্থে বাড়ানো হয়নি। ২০০৭ ও ২০০৮ সালে পাঁচটি খাতে মাশুল বাড়ানো হয়েছিল। নৌপরিবহন উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেনও বিভিন্ন সময় বন্দরে এসে সাংবাদিকদের বলেছেন, ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে মাশুল বাড়ানো হয়েছে, যা বিশ্বের অনেক বন্দরের চেয়ে এখনো কম।

২০২৩–২৪ অর্থবছরে বন্দরের নিরীক্ষিত হিসাব পর্যালোচনা করে দেখা যায়, প্রতি একক কনটেইনারে সব মাশুল মিলে খরচ বাড়বে ৪ হাজার ৩৯৫ টাকা। ওই অর্থবছরের ডলারের বিনিময়মূল্য ধরে দাঁড়ায় ৩৯ ডলার। তবে প্রতিটি বক্স কনটেইনারে এই বন্দর মাশুলের বাড়তি খরচ দাঁড়াবে কমবেশি ৬০ ডলার।

চার্জ বাড়াচ্ছে শিপিং কোম্পানিগুলো

বাড়তি মাশুলের কারণে বন্দর খরচ বেড়ে যাওয়ায় এখন শিপিং লাইনগুলোও বন্দরের চেয়ে আরও বেশি হারে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের ঘোষণা দিতে শুরু করেছে। সর্বশেষ গত শুক্রবার ডেনমার্কভিত্তিক শীর্ষস্থানীয় শিপিং কোম্পানি মায়ের্সক লাইন চার্জ বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। বন্দর কর্তৃপক্ষ মাশুল বাড়ানোর কারণে কোম্পানিটির খরচ বাড়ায় নতুন হারের কথা জানিয়ে অনলাইনে ঘোষণা দেয়।

মায়ের্সক লাইনের ঘোষণা অনুযায়ী, ২০ ফুট কনটেইনারে কোম্পানিটি টার্মিনাল হ্যান্ডলিং চার্জ বা টিএইচসি আগে আদায় করত ১২০ ডলার। আগামী বুধবার থেকে আদায় করবে ১৬৫ ডলার। এ হিসাবে প্রতিটি কনটেইনারে ৪৫ ডলার বাড়িয়েছে তারা। তবে ৪০ ফুট লম্বা কনটেইনারে এই চার্জ ২০৫ ডলার থেকে ৩১০ ডলারে বাড়িয়েছে। বন্দর মাশুল কার্যকরের দিন বুধবার থেকেই কার্যকর করবে বলে জানিয়েছে কোম্পানিটি।

এর আগে ৭ অক্টোবর সিএমএ সিজিএম, সিএনসি ও এএনএল—এই তিন লাইন ২৬ অক্টোবর থেকে ২০ ফুট লম্বা কনটেইনারে ৪৫ ডলার বাড়তি সারচার্জ আদায়ের ঘোষণা দিয়েছে।

বন্দরের হিসাবে দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে এই চার শিপিং লাইন মোট কনটেইনারের ৩৬ শতাংশ পরিবহন করেছে। চট্টগ্রাম বন্দরকেন্দ্রিক ব্যবসা করে আসা অন্য শিপিং কোম্পানিগুলোও পর্যায়ক্রমে মাশুল বাড়াবে বলে স্থানীয় এজেন্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।

মায়ের্সক লাইনের ঘোষণা অনুযায়ী, ২০ ফুট কনটেইনারে কোম্পানিটি টার্মিনাল হ্যান্ডলিং চার্জ বা টিএইচসি আগে আদায় করত ১২০ ডলার। আগামী বুধবার থেকে আদায় করবে ১৬৫ ডলার।

ব্যয়বহুল হচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর

আইএফসি এক সমীক্ষায় ২০২৪ সালে বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া, মিয়ানমার, ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়া—এই সাত দেশের ১৪টি বন্দর ও টার্মিনালের মাশুলের তুলনা করেছে। বন্দরের মাশুল বাড়ানোর আগে গত মার্চের এক পর্যালোচনায় দেখা যায়, চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ে আঞ্চলিক ১০টি বন্দর বা টার্মিনালের মাশুল কম ছিল। তিনটি বন্দরের মাশুল চট্টগ্রামের চেয়ে বেশি ছিল।

যেমন প্রতিটি বক্স কনটেইনার (২০ বা ৪০ ফুট লম্বা কনটেইনার) চট্টগ্রাম বন্দরে ওঠানো–নামানো ও রাখার মাশুল গড়ে ছিল ১২৬ ডলার ৬৬ সেন্ট। এই মাশুল শুধু শ্রীলঙ্কার সাউথ এশিয়া গেটওয়ে টার্মিনাল (এসএজিটি), মিয়ানমার ইন্টারন্যাশনাল টার্মিনালস থিলাওয়া (এমআইটিটি) এবং ভারতের এপিএম টার্মিনালস পিপাভবের মাশুলের চেয়ে কম ছিল।

তবে পোশাকশিল্পে বাংলাদেশের প্রতিযোগী কম্বোডিয়ার নমপেন বন্দর, থাইল্যান্ডের ল্যাম চাবাং ইন্টারন্যাশনাল টার্মিনাল, মালয়েশিয়ার তেনজুন পেলাপাস, ভিয়েতনামের হোচিমিন সিটির ভিয়েতনাম ইন্টারন্যাশনাল কনটেইনার টার্মিনালসহ ১০টি টার্মিনালের চেয়ে বেশি ছিল চট্টগ্রাম বন্দরের মাশুল।

বছরের বেশির ভাগ সময় বন্দরে জটের কারণে খরচ বেশি হতো। তবে মাশুল কম থাকায় এত দিন শিপিং এজেন্টগুলো তা পুষিয়ে নিতে পারত। এখন মাশুল বাড়ানোয় বন্দর আরও ব্যয়বহুল হয়ে পড়বে। এই খরচ আমদানি–রপ্তানিকারকদের থেকে তুলে নেওয়ার বিকল্প নেই।
বাংলাদেশ কনটেইনার শিপিং অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি ফাইয়াজ খন্দকার

আইএফসির সমীক্ষা আমলে নিয়ে দেখা যায়, নতুন মাশুল কার্যকর হলে তাতে বন্দরে প্রতিটি বক্স কনটেইনারে ব্যয় দাঁড়াবে কমবেশি ১৮৬ ডলার। তার মানে হলো, মাশুল কার্যকরের পর ১৩টি বন্দরের মাশুলের চেয়ে চট্টগ্রামের মাশুল বেশি দাঁড়াবে। শুধু শ্রীলঙ্কার সাউথ এশিয়া গেটওয়ে টার্মিনালের চেয়ে কম। অর্থাৎ আঞ্চলিক বন্দরগুলোর তুলনায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যয়বহুল হয়ে যাবে চট্টগ্রাম বন্দর।

বাংলাদেশ কনটেইনার শিপিং অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি ও জাপানভিত্তিক ওশেন নেটওয়ার্ক এক্সপ্রেস (ওয়ান) লাইনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফাইয়াজ খন্দকার প্রথম আলোকে বলেন, বছরের বেশির ভাগ সময় বন্দরে জটের কারণে খরচ বেশি হতো। তবে মাশুল কম থাকায় এত দিন শিপিং এজেন্টগুলো তা পুষিয়ে নিতে পারত। এখন মাশুল বাড়ানোয় বন্দর আরও ব্যয়বহুল হয়ে পড়বে। এই খরচ আমদানি–রপ্তানিকারকদের থেকে তুলে নেওয়ার বিকল্প নেই।

কোন পণ্যে দাম বাড়তে পারে

বন্দর দিয়ে সরাসরি কনটেইনারে এবং খোলা বা বস্তা আকারে পণ্য আনা–নেওয়া হয়। মাশুল বাড়ানোর কারণে কনটেইনার পণ্যে বেশি খরচ হবে। খোলা বা বস্তাবন্দী পণ্যে খরচ তুলনামূলক কম হবে। জ্বালানি তেল, সিমেন্ট, ইস্পাত, সিরামিকসহ কয়েকটি শিল্পের কাঁচামাল, তেল–চিনি–গমের মতো কয়েকটি ভোগ্যপণ্য খোলা বা বস্তা আকারে আমদানি হয়। বাকি প্রায় সব পণ্যই আনা–নেওয়া হয় কনটেইনারে। ফলে কনটেইনারে মাশুল বেশি বৃদ্ধির চাপ পড়বে উৎপাদনমুখী শিল্প খাত, ভোগ্যপণ্য ও বাণিজ্যিক পণ্যে।

সমুদ্রপথে দেশের তিনটি বন্দরের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরে দিয়ে কনটেইনারের ৯৯ শতাংশ পরিবহন হয়। ফলে এই মাশুল বৃদ্ধির প্রভাব সারা দেশের আমদানি–রপ্তানি খাতে পড়বে।

জ্বালানি তেল, সিমেন্ট, ইস্পাত, সিরামিকসহ কয়েকটি শিল্পের কাঁচামাল, তেল–চিনি–গমের মতো কয়েকটি ভোগ্যপণ্য খোলা বা বস্তা আকারে আমদানি হয়। বাকি প্রায় সব পণ্যই আনা–নেওয়া হয় কনটেইনারে। ফলে কনটেইনারে মাশুল বেশি বৃদ্ধির চাপ পড়বে উৎপাদনমুখী শিল্প খাত, ভোগ্যপণ্য ও বাণিজ্যিক পণ্যে।

জানতে চাইলে রপ্তানিকারক এশিয়ান–ডাফ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুস সালাম প্রথম আলোকে বলেন, বাড়তি মাশুলের কারণে পণ্যের উৎপাদন খরচ বাড়বে। রপ্তানি খাতে একটা অংশ ক্রেতারা দিলেও দিন শেষে এটা পণ্যের দামের সঙ্গে হিসাব হবে। বিদেশি ক্রেতারা বাড়তি দাম দিতে চাইবে না। তাহলে রপ্তানিকারকদের বোঝা বহন করতে হবে। রপ্তানিকারকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হলে পোশাকের কার্যাদেশ নেওয়া যাবে না। পোশাকশিল্পের প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় চট্টগ্রাম বন্দর ব্যয়বহুল হয়ে গেলে রপ্তানি খাতে বুমেরাং হবে।

মাশুলের বড় সুবিধাভোগী হবে বিদেশি অপারেটর

গত বছর চট্টগ্রাম বন্দরের পতেঙ্গা টার্মিনাল সৌদি আরবের রেড সী গেটওয়ে ইন্টারন্যাশনালের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে চালু থাকা নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল সংযুক্ত আরব আমিরাতের ডিপি ওয়ার্ল্ডকে, লালদিয়া কনটেইনার ডেনিশ শিপিং কোম্পানি মায়ের্সক লাইনের সহযোগী প্রতিষ্ঠান নেদারল্যান্ডসভিত্তিক এপিএম টার্মিনালসকে, বে টার্মিনাল প্রকল্পের দুটি টার্মিনালের একটি সিঙ্গাপুরভিত্তিক পিএসএ ইন্টান্যাশনাল এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের ডিপি ওয়ার্ল্ডের হাতে ছেড়ে দেওয়ার কাজ চলছে। এর মধ্যে আগামী দুই মাসের মধ্যে লালদিয়া এবং নিউমুরিং টার্মিনাল বিদেশিদের হাতে ছেড়ে দেওয়ার কাজ প্রায় গুছিয়ে এনেছে সরকার।

বাড়তি মাশুলের কারণে পণ্যের উৎপাদন খরচ বাড়বে। রপ্তানি খাতে একটা অংশ ক্রেতারা দিলেও দিন শেষে এটা পণ্যের দামের সঙ্গে হিসাব হবে। বিদেশি ক্রেতারা বাড়তি দাম দিতে চাইবে না। তাহলে রপ্তানিকারকদের বোঝা বহন করতে হবে।
রপ্তানিকারক এশিয়ান–ডাফ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুস সালাম

দেখা গেছে, বন্দরের জরাজীর্ণ জিসিবি টার্মিনাল ও দুই জেটির ছোট্ট চিটাগং কনটেইনার টার্মিনাল ছাড়া সব টার্মিনালই বিদেশিদের হাতে যাচ্ছে। নিয়মানুযায়ী, বিদেশিরা দায়িত্ব নিলে টার্মিনালের মাশুলের বড় অংশই পাবে বিদেশি অপারেটররা। বন্দর বিদেশি অপারেটরদের থেকে একটা নির্দিষ্ট অংশ পাবে, যা দর–কষাকষি করে ঠিক হবে।

জানতে চাইলে ভোগ্যপণ্য, সিমেন্ট ও এলপিজি ব্যবসায় যুক্ত সীকম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিরুল হক প্রথম আলোকে বলেন, একলাফে ৪১ শতাংশ মাশুল বাড়ানোর ফলে ব্যবসার খরচ হঠাৎ করেই বাড়বে। শিপিং এজেন্ট বা ব্যবসায়ীদের এই বাড়তি খরচ পণ্যের দামে যুক্ত হবে। বন্দর যা বাড়িয়েছে, ভোক্তাদের তার চেয়ে বেশি হারে খরচ হবে।