আমদানির খবর শুনেই পেঁয়াজের দাম কমালেন চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা

পেঁয়াজ।
প্রথম আলো ফাইল ছবি

দেশে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়া হতে পারে, এমন খবর প্রচার হতেই চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ পাইকারি বাজারে প্রতি কেজিতে তিন থেকে পাঁচ টাকা কমে গেছে। সেই সঙ্গে খুচরা পর্যায়েও প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম অন্তত পাঁচ টাকা কমেছে।

কৃষকদের সুরক্ষা দিতে গত ১৫ মার্চ থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়া বন্ধ রয়েছে। এতে আমদানি করা পেঁয়াজের মজুত প্রায় শেষ হয়ে আসে। ফলে এ মাসের শুরুতে বাজারে দেশি পেঁয়াজের দাম বাড়তে শুরু করে। গত সপ্তাহের শেষ দিকে খাতুনগঞ্জ পাইকারি মোকামে পেঁয়াজের দর ওঠে প্রতি কেজি ৭৫ টাকা। তখন খুচরায় প্রতি কেজি বিক্রি হয় ৮০ টাকা।

এমন পরিস্থিতিতে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি সম্প্রতি পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিতে কৃষি মন্ত্রণালয়কে চিঠি লিখেছেন। কৃষি মন্ত্রণালয়ও এক সপ্তাহ আগে জানায়, দাম কমাতে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়া হতে পারে। এ খবর চাউর হতেই বাজারে পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমতে শুরু করে।

রোববার খাতুনগঞ্জ পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৭০ থেকে ৭২ টাকায় বিক্রি হয়। সেই হিসাবে কয়েক দিনের ব্যবধানে প্রতি কেজিতে তিন থেকে পাঁচ টাকা কমেছে পাইকারি বাজারে।

জানতে চাইলে খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মিয়া মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস প্রথম আলোকে বলেন, পেঁয়াজ আমদানি হলে বাজারে দাম কমে যাবে, এমন শঙ্কায় এটির দাম কমছে।

পাইকারি বাজারে দাম কমার প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারেও। সরেজমিনে রোববার চট্টগ্রাম নগরের পাঁচটি বাজারে গিয়ে খুচরা পর্যায়ে দেখা গেছে, ৮০ থেকে ৮৫ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে।

খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাইকারি পর্যায়ে দাম বাড়ায় খুচরা পর্যায়েও দাম বেড়েছিল। চলতি মে মাসে খুচরায় পেঁয়াজের দাম সর্বোচ্চ ৯০ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল, যা এখন কমে এসেছে।

পেঁয়াজের উৎপাদন, চাহিদা ও আমদানির তথ্য তুলে ধরে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর গত সপ্তাহে জানায়, এখন এক কেজি দেশি পেঁয়াজের উৎপাদন খরচ পড়ে ২৮ থেকে ৩০ টাকা। এ বছর দেশে পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়েছে ৩৪ লাখ টনের বেশি। বর্তমানে মজুত আছে ১৮ লাখ ৩০ হাজার টনের মতো। দেশে পেঁয়াজের বার্ষিক চাহিদা ২৬ থেকে ২৮ লাখ টন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে আরও জানানো হয়, ২০২১-২২ অর্থবছরে আমদানি উন্মুক্ত থাকার কারণে পেঁয়াজ আমদানি বেশি হয়েছিল। তখন প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজের দাম ছিল ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। তাই কৃষকেরা কম দাম পেয়েছিলেন। পেঁয়াজ চাষে কৃষকের আগ্রহ ধরে রাখতে এবার আমদানি সাময়িকভাবে বন্ধ রাখে কৃষি মন্ত্রণালয়।

আমদানির তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২২–২৩ অর্থবছরের শুরু থেকে গত শনিবার পর্যন্ত পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে ৬ লাখ ২৪ হাজার টন। এর মধ্যে ১৫ মার্চের পর প্রতিবেশী ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি হয়নি। ২০২১–২২ অর্থবছরের একই সময়ে আমদানি হয়েছিল ৬ লাখ ৯০ হাজার টন।