অনুমতিপত্র পাননি ব্যবসায়ীরা
১৪ দিনেও গতি নেই ডিম আমদানিতে
মোট ১০টি প্রতিষ্ঠানকে ১০ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আমদানি শুরু হলে দেশের বাজারে ডিমের দাম কমতে পারে।
মূল্যবৃদ্ধির পরিস্থিতিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ডিম আমদানির অনুমতি দেয়। কিন্তু আমদানির অনুমতিপত্র (আইপি) দেওয়ার দায়িত্ব আমদানি ও রপ্তানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের দপ্তরের। তারা দুই সপ্তাহেও আইপি দেয়নি আমদানিকারকদের। ফলে ১০ কোটি ডিম আমদানি আটকে আছে।
এদিকে অনেক বাজারে এখন সরকার নির্ধারিত ১২ টাকায় (একটি), আবার কোথাও কোথাও এর চেয়ে বেশি দরে ডিম বিক্রি হচ্ছে। সরকার ডিমের সঙ্গে আলু ও পেঁয়াজের দামও নির্ধারণ করে দিয়েছে।
ডিম আমদানিকারকেরা বলছেন, আইপি না পাওয়ায় তাঁরা ব্যাংকে ঋণপত্র (এলসি) খুলতে পারছেন না। তাই ডিম আমদানি করা যাচ্ছে না। আমদানি করা ডিম দেশের বাজারে ঢুকলে দাম কিছুটা কমার সম্ভাবনা দেখছেন তাঁরা। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে তাঁরা এ ব্যাপারে দফায় দফায় যোগাযোগ করছেন। আমদানি ও রপ্তানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের দপ্তরেও প্রতিনিয়ত খবর রাখছেন।
মীম এন্টারপ্রাইজের মালিক ইয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, অনেক দিন ধরে ডিম আমদানি না হওয়ার কারণে অনুমতিপত্র বা আইপি পেতে একটু সময় লাগছে। তবে আশা করছি, কাল-পরশু (আজ বা কাল) আইপি পাওয়া যাবে। আইপি পেলে ডিম আমদানিতে খুব বেশি সময় লাগবে না। তাতে চলতি সপ্তাহের শেষ নাগাদ আমদানি করা ডিম পাওয়া যাবে বাজারে।
বাজারে ডিম, আলু ও পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় গত ১৪ সেপ্টেম্বর এসব পণ্যের দর নির্ধারণ করে দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। খুচরা পর্যায়ে প্রতিটি ডিমের দাম ১২ টাকা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু বেঁধে দেওয়া এ দর যথাযথভাবে কার্যকর না হওয়ায় প্রথম দফায় গত ১৮ সেপ্টেম্বর চার প্রতিষ্ঠানকে চার কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়। প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে মীম এন্টারপ্রাইজ, প্রাইম এনার্জি ইমপোর্টার্স অ্যান্ড সাপ্লায়ার্স, টাইগার ট্রেডিং ও অর্ণব ট্রেডিং লিমিটেড।
দ্বিতীয় দফায় ২১ সেপ্টেম্বর আরও ছয় প্রতিষ্ঠানকে ছয় কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সেসব প্রতিষ্ঠান হলো চিজ গ্যালারি, পপুলার ট্রেড সিন্ডিকেট, এমএস রিপা এন্টারপ্রাইজ, এসএম করপোরেশন, বিডিএস করপোরেশন ও মেসার্স জয়নুর ট্রেডার্স।
বিদেশ থেকে ডিম আমদানির ক্ষেত্রে চারটি শর্ত দেওয়া হয়েছে। প্রথম শর্তটি হলো এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা বা বার্ড ফ্লুমুক্ত দেশ থেকে ডিম আমদানি করতে হবে। দ্বিতীয়ত, আমদানি করা ডিমের প্রতিটি চালানের জন্য রপ্তানিকারক দেশের সরকার কর্তৃক নির্ধারিত বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষের দেওয়া এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা বা বার্ড ফ্লু ভাইরাস ও ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ামুক্ত সনদ দাখিল করতে হবে। এ ছাড়া নিষিদ্ধ পণ্য আমদানি করা যাবে না এবং সরকারের অন্যান্য বিধিবিধান প্রতিপালন করতে হবে।
বাংলাদেশে ডিম আমদানি নিষিদ্ধ। তবে প্রয়োজন হলে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মতিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আমদানির অনুমতি দিতে পারে। কাস্টমস ট্যারিফের তালিকা (২০২৩-২৪) অনুযায়ী, ডিমের ওপর ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক, ৫ শতাংশ অগ্রিম আয়কর ও ৩ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক আরোপ রয়েছে। মোট শুল্ক-করভার ৩৩ শতাংশ। ফলে ১০০ টাকার ডিম আমদানিতে ৩৩ টাকা