নাকুগাঁও, কড়ইতলী ও গোবরাকুড়া—এই তিন স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশের চলমান আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম আরও বাড়াতে চায় ভুটান। গতকাল সোমবার শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার নাকুগাঁও স্থলবন্দর পরিদর্শনকালে এ দেশে নিযুক্ত ভুটানের রাষ্ট্রদূত রিনচেন কুইন্ডসিল জানান, ভারতের ট্রানজিট ব্যবহারের অনুমতি পেলেই কাজটি শুরু হবে।
রিনচেন কুইন্ডসিল বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভুটানের বাণিজ্যিক সম্পর্ক অত্যন্ত ভালো। সৌহার্দ্যপূর্ণ এ সম্পর্ক আরও গতিশীল করতে বাংলাদেশের তিনটি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু করতে চায় ভুটান। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ভুটানের দ্বিতীয় বাণিজ্যিক পয়েন্ট। বর্তমানে ইন্দো-বাংলাদেশ ও ইন্দো–ভুটান চুক্তি থাকলেও দ্রুততম সময়ের মধ্যে একটি ত্রিদেশীয় চুক্তি হতে যাচ্ছে।
ভুটানের রাষ্ট্রদূত জানান, তাঁর দেশ শেরপুরের নাকুগাঁও এবং ময়মনসিংহের গোবরাকুড়া ও কড়ইতলী স্থলবন্দর দিয়ে পোশাক পণ্য নিতে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করেছে। তিনি বলেন, ভুটানের সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো বৈরিতা নেই। শুধু ভারতের সঙ্গে ট্রানজিট চুক্তি অনুমোদিত হলেই বাংলাদেশ থেকে পোশাকসহ অন্যান্য পণ্য আমদানি করতে পারবে ভুটান।
রিনচেন কুইন্ডসিলের নাকুগাঁও স্থলবন্দর পরিদর্শনের সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন কাস্টমস কমিশনার (ঢাকা উত্তর) ওয়াহিদা রহমান চৌধুরী, ভুটানের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কমিশনার কেনচো থাইলো।
ওয়াহিদা রহমান চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের তিনটি পয়েন্ট দিয়ে ভুটান পণ্য আমদানি-রপ্তানি করবে। তারা এ দেশ থেকে প্রধান পণ্য হিসেবে তৈরি পোশাক নিতে চায়। এর বিপরীতে বাংলাদেশে পাথর, ফলসহ তাদের কিছু তৈরি পণ্য রপ্তানি করতে চায়। ইতিমধ্যে একটি চুক্তিও হয়েছে।
ভুটানের রাষ্ট্রদূত নাকুগাঁও কাস্টমস হলরুমে স্থানীয় আমদানি-রপ্তানিকারক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এতে দুই দেশের মধ্যকার নানা সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়।
নাকুগাঁও আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ভুটানকে বাংলাদেশ থেকে বিশেষ করে শুঁটকি মাছ, প্লাস্টিক পণ্য ও তৈরি পোশাক আমদানির অনুরোধ জানান। এ বিষয়ে তাঁর সংগঠনের পক্ষ থেকে একটি লিখিত আবেদনও দেওয়া হয়।
বৈঠকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মনিরুল হাসান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খ্রিষ্টফার হিমেল রিছিল, পৌর মেয়র আবু বক্কর সিদ্দিক, নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এমদাদুল হক, নাকুগাঁও স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক পার্থ ঘোষ, নাকুগাঁও আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অরুণ চন্দ্র সরকার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৯ সালের ৩ মার্চ বাংলাদেশে নিযুক্ত ভুটানের তৎকালীন রাষ্ট্র্রদূত সোনাম এল রাবগী শেরপুরের নালিতাবাড়ীর নাকুগাঁও স্থলবন্দর পরিদর্শন করেছিলেন। তখন তিনি স্থলবন্দরটি দিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য কী ধরনের সম্ভাবনা আছে, তা নিয়ে আলোচনা করেন।