স্থানীয় ও বিশ্ববাজার থেকে তেল চিনি গম ও ডাল কিনবে সরকার

তেল-চিনিপ্রতীকী ছবি

যুক্তরাষ্ট্র ও সিঙ্গাপুর থেকে চার কার্গো তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) কেনা হচ্ছে। এক কার্গোতে এলএনজি থাকে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার মিলিয়ন মেট্রিক ব্রিটিশ থার্মাল ইউনিট (এমএমবিটিইউ)। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের এক্সিলারেট এনার্জি থেকে এক কার্গো, সিঙ্গাপুরভিত্তিক গানভোর প্রাইভেট লিমিটেড থেকে এক কার্গো ও সিঙ্গাপুরের ভিটল এশিয়া থেকে দুই কার্গো এলএনজি কেনা হচ্ছে। এতে সব মিলিয়ে খরচ হবে প্রায় ১ হাজার ৬৩৭ কোটি টাকা।

অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে আজ বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ–সংক্রান্ত প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার সচিব মো. মাহমুদুল হোসাইন খান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

সচিব জানান, এক্সিলারেট এনার্জি থেকে এলএনজি আমদানিতে খরচ পড়বে প্রতি এমএমবিটিইউ ৯ দশমিক ৭৮ মার্কিন ডলার। এ ছাড়া গানভোর থেকে প্রতি এমএমবিটিইউ ৯ দশমিক ৩৬ ডলার এবং ভিটল এশিয়া থেকে ৯ দশমিক ৪৭ ডলার খরচ পড়বে।

এদিকে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজার থেকে প্রায় ৫০৭ কোটি টাকার তেল, ডাল, চিনি ও গম কেনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) প্রতিষ্ঠান গ্রিন ফ্লাওয়ার থেকে ৫০ হাজার টন গম কেনা হবে ১৫৪ কোটি টাকায়। তাতে প্রতি টন গমের দাম পড়বে ২৭৯ দশমিক ৯৫ ডলার।

এ ছাড়া সরকারি সংস্থা টিসিবির মাধ্যমে সাশ্রয়ী দামে বিক্রির জন্য স্থানীয়ভাবে বরগুনার রয় অ্যাগ্রো ফুড থেকে ৬ হাজার টন মসুর ডাল কেনা হচ্ছে ৬২ কোটি ৯৪ লাখ টাকায়। প্রতি কেজি মসুর ডালের দাম পড়বে ১০৪ টাকা ৯০ পয়সা। আরেক প্রস্তাবের বিপরীতে ১০ হাজার টন মসুর ডাল কেনা হচ্ছে ১০৪ কোটি ৪৪ লাখ টাকায়। এর মধ্যে ইজি জেনারেল ট্রেডিং থেকে ৬ হাজার টন ও নাবিল নাবা ফুড লিমিটেড থেকে ৪ হাজার টন মসুর ডাল কেনা হবে। প্রতি কেজি মসুর ডালের দাম পড়বে ১০৪ টাকা ৪৪ পয়সা।

এর বাইরে স্থানীয়ভাবে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ৮ হাজার টন চিনি প্রায় ১০৮ কোটি টাকায় কেনার প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজের কাছ থেকে ১৩৪ টাকা ৫০ পয়সা দরে এই চিনি কেনা হবে। এ ছাড়া ঢাকার সোনারগাঁও সিডস ক্রাশিং মিলস থেকে ৫০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনা হচ্ছে প্রায় ৭৮ কোটি টাকায়।

রাশিয়ার জেএসসি ফরেন ইকোনমিক করপোরেশন ও সৌদি আরবের মা-আদেন নামক প্রতিষ্ঠান থেকে ৩৫১ কোটি টাকায় ৭০ হাজার টন সার কেনার প্রস্তাবও অনুমোদিত হয় সভায়। এর মধ্যে রয়েছে ৪০ হাজার টন ডিএপি ও ৩০ হাজার টন এমওপি সার। প্রতি টন ডিএপি সারের মূল্য ৫৮১ মার্কিন ডলার আর প্রতি টন এমওপি সারের মূল্য ২৮৯ দশমিক ৭৫ মার্কিন ডলার।

খুলনা, মৌলভীবাজার ও রাজবাড়ী জেলায় ১০০ করে মোট ৩০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র হচ্ছে। ২০ বছর মেয়াদে কেন্দ্রগুলো থেকে ‘নো ইলেকট্রিসিটি, নো পেমেন্ট’ ভিত্তিতে বিদ্যুৎ কিনতে সরকারের খরচ হবে ১০ হাজার ৬১৩ কোটি টাকা।

খুলনা জেলার রূপসা উপজেলায় ১০০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের কাজ পেয়েছে যৌথভাবে এনারগন রিনিউএবেলস (বিডি) ও পিডব্লিউআর। ট্যারিফ ভিত্তিতে বিদ্যুৎ কেনা হলে ২০ বছর মেয়াদে বিদ্যুৎকেন্দ্রকে পরিশোধ করতে হবে প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টা ১০ দশমিক ৯১ টাকা।

মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলায় ১০০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের কাজ পেয়েছে কনসোর্টিয়াম অব থিয়েন ভু ভিয়েতনাম নিউ এনার্জি জয়েন্ট স্টক কোম্পানি ও ড্রিম ফাইন্ডার লিমিটেড। এর দর প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টা ১০ দশমিক ৯২ টাকা।

রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলায় ১০০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের কাজ পেয়েছে কনসোর্টিয়াম অব চায়না ডাটাং ওভারসিজ ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড এবং এনগ্রিন ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড। প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টা ১০ দশমিক ৯১ টাকা।