বাংলাদেশিদের অভিবাসী হওয়ার জন্য বড় বাজার হতে পারে ইইউর দেশগুলো: অর্থমন্ত্রী

অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীছবি: সংগৃহীত

‘শুধু পণ্য রপ্তানি নয়, অভিবাসী পাঠানোর ক্ষেত্রেও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলো হতে পারে বাংলাদেশের জন্য বড় বাজার। তবে বাংলাদেশিদের ওই দেশগুলোয় অবশ্যই বৈধভাবে থাকতে হবে। কোনো বাংলাদেশি অবৈধ অভিবাসী হিসেবে থাকুক, তা আমরা চাই না।’

গতকাল সোমবার ঢাকায় সচিবালয়ে অর্থনীতিবিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সঙ্গে এক বৈঠকে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন। ইআরএফের সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মৃধার নেতৃত্বে সংগঠনটির নির্বাহী কমিটি ও সাধারণ সদস্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। ইআরএফের সঙ্গে বৈঠকের আগে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে ঢাকায় নিযুক্ত ইইউর রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের জন্য ইইউ একটা বিরাট বাজার। রপ্তানি বাজারের পাশাপাশি অভিবাসী পাঠানোর ক্ষেত্রেও। ইইউভুক্ত দেশগুলোয় বাংলাদেশিদের কাজের সুনাম বেড়েছে। যেভাবে বেড়েছে, তা আমাদের পক্ষে যাচ্ছে। কীভাবে এটাকে আরও উন্নত করা যায়, ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে কীভাবে সম্পর্ক আরও বাড়ানো যায়, তা দেখার বিষয়।’

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘ইইউভুক্ত দেশগুলোয় কোনো বাংলাদেশিকে অবৈধ অভিবাসী হিসেবে রাখতে চাই না। দেশগুলোয় যাঁরা যাবেন বা বসবাস করতে চান, বৈধভাবে যদি সে সুযোগ থাকে, তাহলে ইউরোপ তাঁদের গ্রহণ করবে।’ ইইউর রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশে বিনিয়োগে সুনির্দিষ্ট কোনো খাতের কথা বলেছেন কি না জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘না, তা বলেননি।’

মঙ্গোলিয়ায় অনুষ্ঠিত একটি সম্মেলনে অংশ নেওয়ার সুযোগ হয়েছিল জানিয়ে আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, ‘ইইউভুক্ত দেশগুলোয় যে অনেক অবৈধ অভিবাসী আছেন, তাঁদের নিয়ে সেখানে আলোচনা হয়। এক কর্মকর্তাকে আমি বলেছিলাম, আমরা এর সমাধান করতে চাই। কারণ, আমরা চাই না, আমাদের কোনো লোক ইইউতে বেআইনিভাবে থাকুক।’

অবৈধ অভিবাসীদের বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এতে কোনো মানসম্মান থাকে না। অবৈধ অভিবাসীরা কাজও করতে পারে না ঠিকমতো। তাই তাদের একটা কাঠামোর মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। বাংলাদেশিরা ইউরোপে অবৈধভাবে বাস করুক, সেটা যে আমরা চাই না, তা তারা বুঝতে পেরেছেন।’

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা তাঁদের (ইইউভুক্ত দেশ) জন্য কোনো সমস্যাই তৈরি করতে চাই না। তাঁরা একটা কথা বললেন, ইতালি থেকে বছরে ১০০ কোটি মার্কিন ডলার আসে। এটা তাঁদের তথ্য। আমি তাতে খুশি হলাম। তাঁরা বলেছেন, ইতালিতে বাংলাদেশিদের অনেক চাহিদা। বাংলাদেশিরা যেসব ক্ষেত্রে কাজ করেন, তা খুব ভালোভাবে করেন।

ইতালি বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ দেশ উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘ইতালির মতো দেশে বাংলাদেশিরা যে সুনাম অর্জন করেছে, তা আমাদের কাজে লাগাতে হবে।’
ইআরএফের সদস্যদের উদ্দেশে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এখানে দুটি পক্ষ। একটি সরকারপক্ষ, অন্যটি জনগণের পক্ষ। আমি সরকারপক্ষ আর আপনারা জনগণের পক্ষ। তবে আমিও জনগণের পক্ষে কাজ করি। সরকার আমাকে জনগণের পক্ষে কাজ করারই দায়িত্ব দিয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত আমরা সবাই প্রিয় বাংলাদেশের জন্য কাজ করছি। বাংলাদেশের জন্য যা ভালো, তাই করব আমরা।’