ডলারের পরিবর্তে নিজস্ব মুদ্রায় বাণিজ্য করার প্রস্তাব চীনা রাষ্ট্রদূতের

আজ মঙ্গলবার পরিকল্পনামন্ত্রী আবদুস সালামের সঙ্গে বৈঠক করেন চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনসংগৃহীত

নিজেদের মুদ্রায় বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে চীন। কীভাবে এ নিয়ে কাজ করা যায়, সে বিষয়ে ঢাকার সঙ্গে আলোচনা করতে আগ্রহের বিষয়টি উত্থাপন করেছে বেইজিং। আজ মঙ্গলবার পরিকল্পনামন্ত্রী আবদুস সালামের সঙ্গে বৈঠক শেষে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে পরিকল্পনামন্ত্রীর কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ডলারের সমস্যাটি বর্তমানে বিশ্বব্যাপী বিরাজমান। যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রানীতির কারণে ডলারের দাম ওঠানামা করছে। চীনাসহ প্রায় সব উন্নয়নশীল দেশই এ নিয়ে ভুগছে।

চীনা রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, ‘আমরা প্রত্যাশা করি, নিজেদের মুদ্রায় ব্যবসা-বাণিজ্য করার ক্ষেত্রে আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করব। কীভাবে নিজেদের মুদ্রায় আমরা এই কাজ করব, তা নিয়ে আলোচনা করার বিষয়টি আমরা বাংলাদেশ সরকারের কাছে উত্থাপন করেছি।’

বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীন এখন বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে নিজস্ব মুদ্রা ইউয়ানে বাণিজ্য করছে। ইউয়ান যাতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে আরও বেশি ব্যবহার করা হয়, দেশটি অনেক দিন ধরে সেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বিশ্ব বাণিজ্যে মার্কিন মুদ্রা ডলারের আধিপত্য কমাতে যেসব দেশ চেষ্টা করছে, চীন তাদের অন্যতম।

বাংলাদেশ অবশ্য গত জুলাই মাস থেকে ভারতের সঙ্গে টাকা-রুপিতে ব্যবসা-বাণিজ্য চালু করেছে। তবে দুই দেশের মধ্যে নিজস্ব মুদ্রায় লেনদেনের পরিমাণ এখনো খুব কম। মূলত ডলার–সংকটের কারণে দুই দেশের মধ্যে এই ব্যবস্থা চালু হয়।

আজকের বৈঠকে পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা নিয়ে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা হয়। এ বিষয়ে চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা নিয়ে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতার বড় সুযোগ আছে। চীনে এখন ১৪তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বাংলাদেশে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার বাস্তবায়ন হচ্ছে। চীনে ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রিফর্মস কমিটি আছে, যা বাংলাদেশের পরিকল্পনা কমিশনের মতো। এই দুই কমিটি একসঙ্গে কাজ করতে পারে। আমরা দুই দেশের সহযোগিতার সম্পর্কের নতুন মাত্রা খুঁজছি।’

এর আগে পরিকল্পনামন্ত্রী আবদুস সালাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘নির্দিষ্ট কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়নি। এটি ছিল সৌজন্য সাক্ষাৎ। পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করেছি।’ উন্নয়ন প্রকল্পে চীনের অর্থছাড় কমেছে—এমন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, এ নিয়ে দুই দেশের সম্পর্কে কোনো প্রভাব পড়বে না। এসব ছোটখাটো সমস্যার সমাধান করা যাবে।