চালের দাম বেড়েছে ৩ দিনে

নানা রকমের চাল
ছবি: প্রথম আলো

পেঁয়াজের পর এবার চাল ও ভোজ্যতেল চাপে ফেলল সাধারণ মানুষকে। বাজারে সব ধরনের চালের দাম কেজিতে দুই থেকে চার টাকা বেড়েছে। আর খোলা ভোজ্যতেলের দাম বেড়েছে লিটারে পাঁচ টাকার মতো।

ভারত ১৪ সেপ্টেম্বর রপ্তানি বন্ধের পর দেশি পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজি ৮০ থেকে ৯০ টাকা ও ভারতীয় পেঁয়াজ ৬০ থেকে ৭০ টাকায় স্থিতিশীল হয়েছে। সরকারি সংস্থা টিসিবির হিসাবে, এক মাস আগের তুলনায় এ দাম দ্বিগুণের বেশি।

চালের বাজার আগেই চড়া ছিল। বাড়ছিল খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের দামও। এখন আবার বাড়ল।

চালের দাম বেড়েছে তিন দিনে। ঢাকার বাবুবাজার-বাদামতলীর আড়ত ও মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের পাইকারি দোকানে মোটা, মাঝারি ও মিনিকেট চালের দাম কেজিতে দুই থেকে চার টাকা বেড়েছে। অন্যদিকে কুষ্টিয়ার চালকলের মালিকেরাও সেখানে চালের দাম কেজিতে দুই থেকে তিন টাকা বাড়ানোর কথা জানান।

কুষ্টিয়ায় মিল পর্যায়ে গতকাল মঙ্গলবার মোটা চাল ৪২ টাকা, বিআর-২৮ ও কাজললতা চাল ৪৮ এবং সরু মিনিকেট ৫২ টাকায় বিক্রি হয়। ঢাকায় আড়তে মাঝারি বিআর-২৮ চাল মানভেদে ৪৬ থেকে ৪৮ ও সরু মিনিকেট চাল ৫৪ টাকায় উঠেছে। দুই ক্ষেত্রে দাম বাড়তি দুই টাকা করে। বেশি বেড়েছে কাটারি পাইজাম নামের চালের দাম, কেজিপ্রতি ৪ টাকা। পাইকারিতে কাটারি পাইজামের দর ৪৮ টাকা।

ঢাকার খুচরা বাজারে বিআর-২৮ চাল মানভেদে প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৫৪ টাকা। আর রশিদ, এরফান, বিশ্বাসসহ বিভিন্ন জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের মিনিকেট চাল বস্তা কিনলে প্রতি কেজি ৫৭ টাকা ও কম কিনলে বাজারভেদে ৬০ থেকে ৬২ টাকা দাম পড়ে।

দেশে ২০১৭ সালে হাওরে ধান নষ্ট হয়ে যাওয়ার পর চালের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে গিয়েছিল। তখন মোটা চালের কেজি ৫০ টাকায় উঠেছিল। তারপর এ বছরই চালের দাম এতটা বেশি। এবার উঠেছে ৪৮ টাকা পর্যন্ত।

দাম বাড়ল কেন, জানতে চাইলে কুষ্টিয়ার দাদা রাইস মিলের অংশীদার ও জেলা চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদিন প্রধান প্রথম আলোকে বলেন, হাটে ধানের দাম প্রতি মণ ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা। এ কারণে দাম না বাড়িয়ে উপায় নেই।

ভোজ্যতেলের দাম বাড়ার বিষয়ে পুরান ঢাকার মৌলভীবাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী গোলাম মাওলা প্রথম আলোকে বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের দাম অসম্ভব বেড়েছে।

কারওয়ান বাজারে খোলা সয়াবিন তেলের প্রতি লিটারের দাম উঠেছে ৯০-৯২ টাকা। পাম তেল বিক্রি হয় ৮৫ টাকা লিটার। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে, এক মাসে সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৬ থেকে ৭ টাকা ও পাম তেলের দাম ৯ টাকা বেড়েছে। গত মাসে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারপ্রতি ৪ টাকা বাড়িয়েছে কোম্পানিগুলো।

বাজারে এখন চাল, তেল, পেঁয়াজ, রসুন, আদা, সবজি, আলু, ডিমসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম চড়া। ভোক্তাদের কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, করোনাকালের আগে দেশে দরিদ্র মানুষ ছিল ২০ শতাংশের মতো। এখন সেটা ৩০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। অনেকে কাজ হারিয়েছেন। অনেকের আয় কমেছে। এ সময় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি মানুষকে চাপে ফেলছে।

(প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন প্রতিনিধি, কুষ্টিয়া)