‘মূল্যস্তর’ তুলে নেওয়ার প্রভাব পড়েনি সূচকে

শেয়ারের বেঁধে দেওয়া সর্বনিম্ন মূল্যস্তর বা ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়ার ধাক্কা সামলে নিয়েছে শেয়ারবাজার। গতকাল রোববার শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত সব কোম্পানির ওপর থেকে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়া হয়।

প্রায় ১৫ মাস পর পুনর্গঠিত পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ‘ফ্লোর প্রাইস’ তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় গত বৃহস্পতিবার। গতকাল এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়। তাতে সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার লেনদেন শুরু হয় সূচকের পতন দিয়ে। লেনদেন শুরুর প্রথম ১০ মিনিটেই প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স প্রায় ৪৩ পয়েন্ট কমে যায়। এরপর সূচক কিছুটা বাড়লেও বেলা সোয়া একটা পর্যন্ত তা আগের দিনের চেয়ে কমই ছিল। শেষ ঘণ্টায় এসে সূচক ঘুরে দাঁড়ায়। তাতে দিন শেষে ডিএসইএক্স সূচকটি ১৭ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়ায় ৬ হাজার ৬৯ পয়েন্টে।

এদিকে ঢাকার বাজারে গতকাল যেসব কোম্পানির শেয়ারের সর্বোচ্চ দরপতন ঘটেছে তার বেশির ভাগ কোম্পানিরই শেয়ার অনেক দিন ধরে ফ্লোর প্রাইসে আটকে ছিল। এর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে রয়েল টিউলিপ হোটেলের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান সি পার্ল বিচ রিসোর্ট। কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ১০ শতাংশ বা সাড়ে ৬ টাকা কমে দাঁড়িয়েছে ৫৮ টাকা ৬০ পয়সা। গত বছরের ১৯ মার্চ থেকে ৩ জুন পর্যন্ত কোম্পানিটির শেয়ার ফ্লোর প্রাইসে আটকে ছিল। একইভাবে দরপতনের দ্বিতীয় শীর্ষ অবস্থানে থাকা এসকে ট্রিমসের শেয়ারের দামও গতকাল ১০ শতাংশ বা ৫ টাকার বেশি কমে নেমে এসেছে ৪৬ টাকায়। কোম্পানিটির শেয়ারও দীর্ঘদিন ৬২ টাকায় ফ্লোর প্রাইসে আটকে ছিল।

শেয়ারবাজারের পতন ঠেকাতে গত বছরের ১৯ মার্চ শেয়ারের সর্বনিম্ন মূল্যস্তর বেঁধে দেয় বিএসইসি। যাতে বেঁধে দেওয়া ওই সীমার নিচে কোনো শেয়ারের দাম নামতে না পারে। এভাবে গত বছরের মার্চে শেয়ারবাজারের ভয়াবহ পতন থামিয়েছিল বিএসইসির তৎকালীন কমিশন। ওই কমিশনে চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন এম খায়রুল হোসেন।

ফ্লোর প্রাইস আরোপের আগে ১৮ মার্চ ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স নেমেছিল ৩ হাজার ৬০০ পয়েন্টে। ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেওয়ার পর ওই বছরের ২৫ মার্চ ডিএসইএক্স সূচকটি বেড়ে দাঁড়ায় ৪ হাজার পয়েন্টে। গতকাল দিন শেষে এ সূচক বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৬৯ পয়েন্টে। সূচক ৬ হাজার ছাড়ানোর পরই ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিএসইসি।

এদিকে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়ার দিনে সূচকের পতন দিয়ে লেনদেন শুরু হলেও দিন শেষে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৮৩৫ কোটি টাকা, যা আগের দিনের চেয়ে মাত্র ১২ কোটি টাকা কম।