সরকারি কোম্পানির শেয়ারের দাপট কি এ সপ্তাহেও চলবে

শেয়ারবাজারে নতুন আরেকটি সপ্তাহ শুরু হচ্ছে আজ রোববার। নতুন বছরের দ্বিতীয় সপ্তাহ এটি। নতুন বছরটি শেয়ারবাজারে বেশ ভালোভাবেই শুরু হয়েছে। সদ্য বিদায়ী ২০২১ সালের শেষের দিকে শেয়ারবাজারে ছিল বেশ মন্দা ভাব। সেই মন্দা কাটিয়ে নতুন বছরে ফিরেছে চাঙা ভাব। বছরের প্রথম সপ্তাহের সেই চাঙা ভাবের নেতৃত্ব ছিল হাতেগোনা কয়েকটি কোম্পানি। তার মধ্যে সরকারি কোম্পানির আধিপত্য ছিল বেশি।

ঢাকার বাজারে গত সপ্তাহ শেষে লেনদেনে আধিপত্য বিস্তারকারী ৫ কোম্পানির মধ্যে দুইটিই ছিল সরকারি মালিকানাধীন। সেগুলো হলো বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন (বিএসসি) ও বিদ্যুৎ খাতের কোম্পানি পাওয়ার গ্রিড। লেনদেনে শীর্ষে না থাকলেও গত সপ্তাহে মূল্যবৃদ্ধিতে এগিয়ে ছিল সরকারি খাতের বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলস, তিতাস গ্যাস, ডেসকোরও। এ কারণে সপ্তাহ শেষে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে প্রশ্ন জেগেছে, সরকারি কোম্পানির শেয়ারের মূল্যবৃদ্ধির এ দাপট কি নতুন সপ্তাহেও অব্যাহত থাকবে?

বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত সপ্তাহে সরকারি মালিকানাধীন কোম্পানির শেয়ারের মূল্যবৃদ্ধির পেছনে বড় ভূমিকা ছিল বিএসসির। গত ২৬ ডিসেম্বর থেকে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম প্রায় একটানা সর্বোচ্চ বাড়ছে।

বিএসসির শেয়ারের এমন মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব সরকারি অন্যান্য কোম্পানির শেয়ারের ওপরও পড়েছে। বিএসসির শেয়ারের দাম বাড়ছে মূলত কোম্পানির শেয়ারপ্রতি আয় ইপিএসের বড় উত্থানের খবরে। চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) কোম্পানিটির ইপিএস প্রায় সাড়ে ৬০০ শতাংশ বেড়েছে। তাতে মাত্র ১০ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে গেছে। ২৩ ডিসেম্বরের ৪৯ টাকার শেয়ারের দাম এখন ১০৫ টাকা।

ইপিএসের বড় উত্থানে বিএসসির শেয়ারের দাম বাড়লেও সরকারি অন্য কোম্পানিগুলোর ক্ষেত্রে এ ধরনের তথ্য নেই। তবে বিনিয়োগকারীরা ধারণা করছেন, সরকারি অন্য কোম্পানিগুলোর আয়ও হয়তো বাড়তে পারে। সেই সম্ভাবনা থেকে সরকারি কোম্পানির শেয়ারে ঝুঁকছেন বিনিয়োগকারীরা।

বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, কোম্পানিটির আয় বেড়েছে মূলত জাহাজের ভাড়া ও চাহিদা বেড়ে যাওয়ায়। সেই তুলনায় সরকারি অন্য কোম্পানিগুলোর আয় কি বেড়েছে? যদি তা নয়, তাহলে বিএসইসির প্রভাবে অন্যগুলোর মূল্যবৃদ্ধি কতটা টেকসই হবে, তা নিয়ে রয়েছে সন্দেহ।

যদিও সদ্য বিদায়ী বছরের শেষ ভাগে দরপতনের কারণে এসব কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছিল। সেখান থেকে বাজার ঘুরে দাঁড়ানোর ফলে কিছুটা মূল্যবৃদ্ধিকে অযৌক্তিক হয়তো বলা যাবে না। কিন্তু কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়া একটির দেখাদেখি অন্যটির মূল্যবৃদ্ধি আদৌ কি টেকসই হবে, প্রশ্ন থেকেই যায়।