লেনদেনের এক–চতুর্থাংশ ওষুধ খাতের কোম্পানির

শেয়ারবাজার
গ্রাফিকস: প্রথম আলো

দেশের শেয়ারবাজারে লেনদেন আবারও দুই হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল বুধবার দিন শেষে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ২০১ কোটি টাকা, যা আগের দিনের চেয়ে ৮৮৬ কোটি টাকা বা ৬৭ শতাংশ বেশি। এর আগে সর্বশেষ গত রোববার ডিএসইতে ২ হাজার ২৯৬ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছিল।

বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সব শ্রেণির বিনিয়োগকারী এখন বাজারে সক্রিয় রয়েছেন। কয়েক দিনের টানা মূল্যবৃদ্ধিতে মুনাফায় এক শেয়ার বিক্রি করে অন্য শেয়ার কিনছেন। তাতে ক্রয়ক্ষমতা বাড়ছে বিনিয়োগকারীদের। বিশেষ করে যাঁরা ঋণ করে বিনিয়োগ করেন, তাঁরা মুনাফায় এক শেয়ার বিক্রি করে অন্য শেয়ারে আগের চেয়ে বেশি অর্থ বিনিয়োগ করছেন। এতে বাড়ছে লেনদেন।

ঢাকার বাজারে গতকাল লেনদেন ও মূল্যবৃদ্ধিতে দাপুটে অবস্থানে ছিল ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানিগুলো। দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্রোকারেজ হাউস লঙ্কাবাংলা সিকিউরিটিজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঢাকার বাজারে গতকাল এ খাতের কোম্পানিগুলোর সম্মিলিত লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৫৭৫ কোটি টাকা, যা ডিএসইর মোট লেনদেনের প্রায় ২৬ শতাংশ। অর্থাৎ ডিএসইতে গতকাল যে পরিমাণ লেনদেন হয়েছে, তার এক–চতুর্থাংশ ছিল ওষুধ খাতের। মূলত কয়েকটি কোম্পানির লেনদেনের ওপর ভর করে ওষুধ খাতের এ লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে শীর্ষে ছিল ওরিয়ন ফার্মা।

এদিন এককভাবে কোম্পানিটির ২৩০ কোটি টাকার লেনদেন হয়, যা ডিএসইর মোট লেনদেনের প্রায় সাড়ে ১০ শতাংশ। এ ছাড়া বেক্সিমকো ফার্মার প্রায় ৫৪ কোটি টাকা, এক্‌মি ল্যাবরেটরিজের ৪৯ কোটি টাকা, এসিআই ফরমুলেশনের ৩৪ কোটি টাকা, ওরিয়ন ইনফিউশনের ৩০ কোটি টাকা ও স্কয়ার ফার্মার ২৯ কোটি টাকার শেয়ারের হাতবদল হয়। ওষুধ খাতের ৫৭৫ কোটি টাকার লেনদেনের মধ্যে উল্লেখিত ছয় কোম্পানিরই সম্মিলিত লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৪২৬ কোটি টাকার বেশি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি মার্চেন্ট ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহী প্রথম আলোকে বলেন, গতকালের শেয়ারবাজার ছিল মূলত ওরিয়ন ও বেক্সিমকো গ্রুপনির্ভর। এ দুটি গ্রুপের শেয়ারের দাপটে গতকাল অন্য খাতের শেয়ারগুলো চুপসে গেছে। ফলে বাজারে সূচক ও লেনদেনের বড় উত্থান হলেও বেশির ভাগ শেয়ারের দাম কমে গেছে।

ডিএসইতে গতকাল ওরিয়ন ফার্মার প্রতিটি শেয়ারের দাম সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ বা ১০ টাকা ৬০ পয়সা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১৭ টাকায়। এ ছাড়া এসিআই ফরমুলেশনের দামও ১০ শতাংশ বা ১৭ টাকা, এডভান্ট ফার্মার দাম ৯ শতাংশ বা আড়াই টাকা, ওরিয়ন ইনফিউশন ও বিকন ফার্মার দাম পৌনে ৯ শতাংশ ও বেক্সিমকো ফার্মার দাম প্রায় ৮ শতাংশ বা ১৩ টাকা বেড়েছে। নিয়ম অনুযায়ী শেয়ারবাজারে এক দিনে একটি কোম্পানির শেয়ারের সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ দাম বাড়তে পারে।

ঢাকার বাজারে গতকাল লেনদেন হওয়া ৩৭৮ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৫৫টিরই দাম কমেছে। দাম বেড়েছে ১৩১টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৯২টির দাম।