৮২ টাকার শেয়ার ছয় মাসে ৯২০ টাকা, তদন্তের নির্দেশ

শেয়ারবাজার
গ্রাফিকস: প্রথম আলো

মাত্র ছয় মাসে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ারের দাম ১১ গুণ বেড়েছে। গত জুলাই মাস থেকে একটানা বেড়েছে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম। এতে ৬ মাসে ৮২ টাকার শেয়ারের দাম হয়ে গেছে ৯২০ টাকা।

অস্বাভাবিক এই মূল্যবৃদ্ধির পর অবশেষে কোম্পানিটির বিরুদ্ধে তদন্তের উদ্যোগ নিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। গতকাল বুধবার কমিশনের পক্ষ থেকে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কর্তৃপক্ষকে এ তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। ২০ কার্যদিবসের মধ্যে এ তদন্ত প্রতিবেদন কমিশনে দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, কমিশনের সার্ভেল্যান্স প্রাথমিক তথ্যে কোম্পানিটির শেয়ারের সাম্প্রতিক মূল্যবৃদ্ধিকে কিছুটা অস্বাভাবিক মনে হয়েছে। তাই এ মূল্যবৃদ্ধির পেছনে কোনো ধরনের কারসাজি বা আইন লঙ্ঘনের ঘটনা রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে ডিএসইকে নির্দেশ দেওয়া হয়।

ডিএসইর তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের ১৩ এপ্রিল ঢাকার বাজারে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ছিল সাড়ে ৮২ টাকা। আর গতকাল দিন শেষে এ দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯২০ টাকা। সেই হিসাবে ৬ মাসে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বেড়েছে ৮৩৭ টাকা ৫০ পয়সা বা ১ হাজার শতাংশের বেশি।

সম্প্রতি এভাবে আর কোনো কোম্পানির শেয়ারের এমন মূল্যবৃদ্ধির ঘটনা ঘটেনি। বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, স্বল্প মূলধনি কোম্পানি হওয়ায় এটির শেয়ার নিয়ে বড় ধরনের কারসাজির ঘটনা ঘটানো হয়েছে। জুলাই থেকে অস্বাভাবিকভাবে এটির শেয়ারের দাম বাড়তে থাকলেও নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও ডিএসইর পক্ষ থেকে কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ কারণে কারসাজিকারকেরা ইচ্ছেমতো দাম বাড়িয়েছেন।

ডিএসইর তথ্যানুযায়ী, কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন মাত্র ২০ কোটি টাকা, যা ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের ২ কোটি শেয়ারে বিভক্ত। এ শেয়ারের মধ্যে কোম্পানিটির উদ্যোক্তাদের হাতে রয়েছে প্রায় ৪১ শতাংশ শেয়ার।

এদিকে বিএসইসির পক্ষ থেকে কোম্পানিটির অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির তদন্তের যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সেখানে চারটি বিষয় খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। সেগুলো হলো কোম্পানিটির নিরীক্ষিত ও অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা; শেয়ার লেনদেনের ক্ষেত্রে কোনো ইনসাইডার ট্রেডিং বা সুবিধাভোগী লেনদেনের ঘটনা ঘটেছে কি না, তা খুঁজে দেখা; শেয়ার লেনদেনের ক্ষেত্রে  কারসাজিমূলক ঘটনা ঘটেছে কি না এবং অন্যান্য অনিয়ম বা আইন লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে কি না, তা খতিয়ে দেখা।